কোজাগরী- এক অন্য পাঁচালী।।
পুরাণে কথিত আছে লক্ষ্মী ছিলেন দেবরাজ ইন্দ্রের রাজপুরীতে অধিষ্ঠাত্রী দেবী আর তাঁর সব সম্পদের উৎস। দুর্বাসার দেওয়া পারিজাতের মালার অনাদর করায় মুনির শাপে তিনি লক্ষ্মীছাড়া হন। মানে অন্যায় করলেন ইন্দ্র আর শাস্তি পেলেন লক্ষ্মী, স্বর্গচ্যুত হলেন, ইন্দ্র হলেন বৈভব-হারা। যাই হোক, দুর্বাসা মুনির শাপ দেওয়ার ব্যাপারে বড়ই কুখ্যাতি ছিল, তাই পুরাণে কিছু উল্টোপাল্টা কাণ্ড ঘটাতে হলেই টানাটানি হত ঋষি দুর্বাসাকে নিয়ে, মূলতঃ শুধুমাত্র অভিশাপ দেয়ানোর জন্যেই।
এদিকে লক্ষ্মী দেবী তো মর্তে এসে পড়লেন, কোজাগরী পূর্ণিমার রাত্রে বিশ্ব যখন নিদ্রামগন, 'কোথায় আলো, ওরে কোথায় আলো' বলে খুঁজে চলেছেন রাতের আশ্রয়, তখন কে তাঁকে আশ্রয় দিয়েছিল? এ প্রশ্নের যথাযথ উত্তর পুরাণে নেই, তবে জানা যায় ধন-সম্পত্তির দেবী লক্ষ্মীর শেষ আশ্রয়লাভ হয় রত্নাকর সমুদ্রের গভীরে। 'শ্রী' নামে সেখানে তিনি থাকেন বহুযুগ ধরে। পরে সমুদ্রমন্থনের সময় দেব-দানবে মিলে তাঁকে উদ্ধার করেন, বিষ্ণু তাঁকে পত্নীরূপে গ্রহণ করেন। তবে সেই স্মৃতিকে অক্ষয় করে রাখতে বছর-বছর লক্ষ্মীদেবী মর্তে আসেন কোজাগরী পূর্ণিমার রাত্রে, একটু আশ্রয়ের আশে। পার্থিব ধন-বৈভবলাভের সেটুকু আশাই আমাদের জাগিয়ে রাখে সে রাত্রে, শ্রী-সম্পদের আরাধনায়। পুজোর মন্ত্র সেই একই-
নমামি সর্বভূতানাং বরদাসি হরিপ্রিয়ে
যা গতিস্ত্বৎপ্রপন্নানাং সা মে ভূয়াৎ ত্বদর্চনাৎ |
অর্থাৎ ‘হে হরিপ্রিয়ে,তুমি সকল প্রাণীকে বরদান করিয়া থাক, তোমাকে প্রণাম করি | যাহারা তোমার শরণাগত হয়, তাহাদের যে গতি, তোমার পূজার ফলে আমারও যেন সেই গতি হয় |’
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা আদতে বাংলার মেয়েদের একান্ত হৃদয়ের আটপৌরে ব্রত-পার্বনের মত, মানে আলিম্পন- সজ্জা, ঘট-স্থাপন আর মূর্তিপূজো দিয়ে শুরু, ব্রতকথা ও পাঁচালিতে তার শেষ। সে পাঁচালিও বহুপঠিত-বহুশ্রুত, 'দোল-পূর্ণিমার নিশি নির্মল আকাশ। মৃদুমৃদু বহিতেছে মলয়-বাতাস।। লক্ষ্মী-নারায়ণ বসি বৈকুণ্ঠ মাঝারে। আনন্দ অন্তরে তাঁরা আলাপন করে।।' এমন সময় চির-কোঁদুলে নারদের আবির্ভাব, মর্তের দুরাচারের সংবাদ নিয়ে। তারপর কিভাবে লক্ষীদেবী মর্তে গিয়ে নিজের পূজার প্রচার করে এসে সবার দুঃখ দূর করে তাদের সম্পদশালী করে তুললেন, সেই বিবরণ। তবে এখন যেটা আমি বলতে চলেছি তা সম্পূর্ণ আলাদা, এ বিবরণ বহুশ্রুত হলেও কোন পাঁচালী বা মঙ্গলকাব্যে লিপিবদ্ধ হয় নি।
মারোয়াড় রাজ্যের নাগোর শহরের বাসিন্দা হীরালাল সাহু, যাঁর পূর্বপুরুষ গিরিধর সিং গেহলোট একসময় শ্বেতাম্বর জৈনের ধর্ম গ্রহণ করেন, ১৬৫২ খ্রীষ্টাব্দে ঘটনাক্রমে দেশ ছেড়ে পাটনায় চলে আসতে বাধ্য হন, ও সেখানেই ব্যবসা বিস্তার করেন। তাঁরই এক পুত্র মানিকচাঁদ ছিলেন বাংলার নবাবদের দ্বারা 'জগৎশেঠ' উপাধি দিয়ে সম্মানিত বংশের পূর্বপুরুষ, যিনি বাংলার তৎকালীন রাজধানী ঢাকায় বসবাস করতে শুরু করেন। তখন মুর্শিদকুলি খান ছিলেন বাংলার শাসক আজিম-উষ-শানের (ঔরঙ্গজেবের দৌহিত্র) দেওয়ান, মানিকচাঁদের সঙ্গে তাঁর ভালরকম 'দোস্তি' হয়। তাই যখন মুর্শিদকুলির আজিমুষশানের সঙ্গে একটি বিবাদে জড়িয়ে পড়ে প্রাণসংশয়ের উপক্রম হয়, মানিকচাঁদের সাহায্যে তিনি সম্রাট ঔরঙ্গজেবের হস্তক্ষেপে ঢাকা ছেড়ে চলে আসেন গঙ্গার তীরে মকসুদাবাদে। মানিকচাঁদও বন্ধুকে অনুসরণ করে সেখানে চলে আসেন ও দুজনে মিলে মুর্শিদাবাদ নামে শহরটিকে গড়ে তোলেন।
এবার আসা যাক, কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর কথায় | ‘কো জাগরী’ অর্থাৎ ‘কে জাগে |’ এই পূর্ণিমার রাতে দেবী লক্ষ্মী বরদান করার উদ্দেশে জগৎ পরিক্রমা করে দেখেন, কে নারকেল জল পান করে সারারাত জেগে আছেন |
কথিত, দেবী এও বলে থাকেন,’আজ রাতে যে ব্যক্তি জেগে থেকে পাশাখেলা করবে তাকে আমি ধনবান করব।’ তাই ভক্তিপূর্ণ চিত্তে এদিন লক্ষ্মীর পুজো করার পরে প্রথমে বালক, বৃদ্ধ ও আতুরদের আহার করাতে হয়| পরে ব্রাহ্মণ ও বন্ধুবান্ধবদের নারকেল জল ও চিঁড়ে আহার করিয়ে তবে তা নিজে গ্রহণ করতে হয়|
মুর্শিদাবাদকে গড়ে তোলাই শুধু নয়, বাংলা অঞ্চল থেকে দু'কোটি মুদ্রা খাজনা আদায় করার পেছনে মানিকচাঁদের কৃতিত্বই বেশি ছিল, পরে মুর্শিদাবাদে টাঁকশাল স্থাপিত হলে শেঠ পরিবারই তার পরিচালনার দায়িত্ব পান। এইসব কৃতিত্বের খবর দিল্লীশ্বর জানতে পারলে তিনি মানিকচাঁদকে দেখতে চান | এরপর মানিকচাঁদ দিল্লি গেলে রাজা তাঁর কথাবার্তায় খুশি হয়ে তাঁকে বলেন,তোমার উপর আমি অত্যন্ত প্রীত| তুমি যা চাইবে আমি দান করব| তখন মানিকচাঁদ বাড়ি ফিরে মাকে সব বলেন| বুদ্ধিমতী জননী পুত্রের মঙ্গলের জন্য বলেন, সম্রাটকে দিয়ে আদেশ জারি করিয়ে নিতে যে কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে শহরে কোনও গৃহস্থ বাড়িতে যেন আলো না জ্বালায়| সম্রাটের নির্দেশে ওই রাতে কেউ আলো জ্বালালো না| শেঠ মানিকচাঁদের মা ঘি-এর প্রদীপ জ্বেলে ঘর আলো করে দরজা খুলে বসে থাকলেন| যথাসময়ে দেবী এলেন এবং বললেন, আমি খুব পরিশ্রান্ত| আমাকে একটু আশ্রয় দেবে? মা দেবীর ছলনা বুঝতে পারলেন| তিনি দেবীকে ঘরে আশ্রয় দিলেন এবং বললেন, আমি নদীতে স্নান করতে যাচ্ছি| কথা দিন, আমি ফিরে না আসা অবধি আপনি এখানে থাকবেন| দেবী তাতে রাজি হলেন| এবার মা নদীতে স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে প্রাণত্যাগ করলেন| ফলে সেদিন থেকে দেবী জগৎশেঠদের ঘরে থেকে গেলেন| অবশ্য অনেকের মতে এ ঘটনাটি ঘটেছিল মানিকচাঁদের ভ্রাতুষ্পুত্র ও দত্তক-সন্তান ফতেচাঁদের সঙ্গে, তিনি দিল্লীশ্বর মহম্মদশাহের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। তবে জৈনধর্মাবলম্বী জগৎশেঠরা কেন হিন্দু দেবী লক্ষ্মীর উপাসনা করলেন তার কোন ব্যাখ্যা আমি পাইনি।
যাই হোক, আজও ধন সম্পদের দেবী লক্ষ্মীকে পাওয়ার জন্য গৃহস্থ বাড়িতে সারারাত ঘি-এর প্রদীপ জ্বালানো হয় | তবে স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকেই ওই রাতে জুয়া খেলে থাকেন, জানিনা এ অনাচার ধর্মের স্বীকৃতি পায় কি করে |
পুরাণে কথিত আছে লক্ষ্মী ছিলেন দেবরাজ ইন্দ্রের রাজপুরীতে অধিষ্ঠাত্রী দেবী আর তাঁর সব সম্পদের উৎস। দুর্বাসার দেওয়া পারিজাতের মালার অনাদর করায় মুনির শাপে তিনি লক্ষ্মীছাড়া হন। মানে অন্যায় করলেন ইন্দ্র আর শাস্তি পেলেন লক্ষ্মী, স্বর্গচ্যুত হলেন, ইন্দ্র হলেন বৈভব-হারা। যাই হোক, দুর্বাসা মুনির শাপ দেওয়ার ব্যাপারে বড়ই কুখ্যাতি ছিল, তাই পুরাণে কিছু উল্টোপাল্টা কাণ্ড ঘটাতে হলেই টানাটানি হত ঋষি দুর্বাসাকে নিয়ে, মূলতঃ শুধুমাত্র অভিশাপ দেয়ানোর জন্যেই।
এদিকে লক্ষ্মী দেবী তো মর্তে এসে পড়লেন, কোজাগরী পূর্ণিমার রাত্রে বিশ্ব যখন নিদ্রামগন, 'কোথায় আলো, ওরে কোথায় আলো' বলে খুঁজে চলেছেন রাতের আশ্রয়, তখন কে তাঁকে আশ্রয় দিয়েছিল? এ প্রশ্নের যথাযথ উত্তর পুরাণে নেই, তবে জানা যায় ধন-সম্পত্তির দেবী লক্ষ্মীর শেষ আশ্রয়লাভ হয় রত্নাকর সমুদ্রের গভীরে। 'শ্রী' নামে সেখানে তিনি থাকেন বহুযুগ ধরে। পরে সমুদ্রমন্থনের সময় দেব-দানবে মিলে তাঁকে উদ্ধার করেন, বিষ্ণু তাঁকে পত্নীরূপে গ্রহণ করেন। তবে সেই স্মৃতিকে অক্ষয় করে রাখতে বছর-বছর লক্ষ্মীদেবী মর্তে আসেন কোজাগরী পূর্ণিমার রাত্রে, একটু আশ্রয়ের আশে। পার্থিব ধন-বৈভবলাভের সেটুকু আশাই আমাদের জাগিয়ে রাখে সে রাত্রে, শ্রী-সম্পদের আরাধনায়। পুজোর মন্ত্র সেই একই-
নমামি সর্বভূতানাং বরদাসি হরিপ্রিয়ে
যা গতিস্ত্বৎপ্রপন্নানাং সা মে ভূয়াৎ ত্বদর্চনাৎ |
অর্থাৎ ‘হে হরিপ্রিয়ে,তুমি সকল প্রাণীকে বরদান করিয়া থাক, তোমাকে প্রণাম করি | যাহারা তোমার শরণাগত হয়, তাহাদের যে গতি, তোমার পূজার ফলে আমারও যেন সেই গতি হয় |’
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা আদতে বাংলার মেয়েদের একান্ত হৃদয়ের আটপৌরে ব্রত-পার্বনের মত, মানে আলিম্পন- সজ্জা, ঘট-স্থাপন আর মূর্তিপূজো দিয়ে শুরু, ব্রতকথা ও পাঁচালিতে তার শেষ। সে পাঁচালিও বহুপঠিত-বহুশ্রুত, 'দোল-পূর্ণিমার নিশি নির্মল আকাশ। মৃদুমৃদু বহিতেছে মলয়-বাতাস।। লক্ষ্মী-নারায়ণ বসি বৈকুণ্ঠ মাঝারে। আনন্দ অন্তরে তাঁরা আলাপন করে।।' এমন সময় চির-কোঁদুলে নারদের আবির্ভাব, মর্তের দুরাচারের সংবাদ নিয়ে। তারপর কিভাবে লক্ষীদেবী মর্তে গিয়ে নিজের পূজার প্রচার করে এসে সবার দুঃখ দূর করে তাদের সম্পদশালী করে তুললেন, সেই বিবরণ। তবে এখন যেটা আমি বলতে চলেছি তা সম্পূর্ণ আলাদা, এ বিবরণ বহুশ্রুত হলেও কোন পাঁচালী বা মঙ্গলকাব্যে লিপিবদ্ধ হয় নি।
মারোয়াড় রাজ্যের নাগোর শহরের বাসিন্দা হীরালাল সাহু, যাঁর পূর্বপুরুষ গিরিধর সিং গেহলোট একসময় শ্বেতাম্বর জৈনের ধর্ম গ্রহণ করেন, ১৬৫২ খ্রীষ্টাব্দে ঘটনাক্রমে দেশ ছেড়ে পাটনায় চলে আসতে বাধ্য হন, ও সেখানেই ব্যবসা বিস্তার করেন। তাঁরই এক পুত্র মানিকচাঁদ ছিলেন বাংলার নবাবদের দ্বারা 'জগৎশেঠ' উপাধি দিয়ে সম্মানিত বংশের পূর্বপুরুষ, যিনি বাংলার তৎকালীন রাজধানী ঢাকায় বসবাস করতে শুরু করেন। তখন মুর্শিদকুলি খান ছিলেন বাংলার শাসক আজিম-উষ-শানের (ঔরঙ্গজেবের দৌহিত্র) দেওয়ান, মানিকচাঁদের সঙ্গে তাঁর ভালরকম 'দোস্তি' হয়। তাই যখন মুর্শিদকুলির আজিমুষশানের সঙ্গে একটি বিবাদে জড়িয়ে পড়ে প্রাণসংশয়ের উপক্রম হয়, মানিকচাঁদের সাহায্যে তিনি সম্রাট ঔরঙ্গজেবের হস্তক্ষেপে ঢাকা ছেড়ে চলে আসেন গঙ্গার তীরে মকসুদাবাদে। মানিকচাঁদও বন্ধুকে অনুসরণ করে সেখানে চলে আসেন ও দুজনে মিলে মুর্শিদাবাদ নামে শহরটিকে গড়ে তোলেন।
এবার আসা যাক, কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর কথায় | ‘কো জাগরী’ অর্থাৎ ‘কে জাগে |’ এই পূর্ণিমার রাতে দেবী লক্ষ্মী বরদান করার উদ্দেশে জগৎ পরিক্রমা করে দেখেন, কে নারকেল জল পান করে সারারাত জেগে আছেন |
কথিত, দেবী এও বলে থাকেন,’আজ রাতে যে ব্যক্তি জেগে থেকে পাশাখেলা করবে তাকে আমি ধনবান করব।’ তাই ভক্তিপূর্ণ চিত্তে এদিন লক্ষ্মীর পুজো করার পরে প্রথমে বালক, বৃদ্ধ ও আতুরদের আহার করাতে হয়| পরে ব্রাহ্মণ ও বন্ধুবান্ধবদের নারকেল জল ও চিঁড়ে আহার করিয়ে তবে তা নিজে গ্রহণ করতে হয়|
মুর্শিদাবাদকে গড়ে তোলাই শুধু নয়, বাংলা অঞ্চল থেকে দু'কোটি মুদ্রা খাজনা আদায় করার পেছনে মানিকচাঁদের কৃতিত্বই বেশি ছিল, পরে মুর্শিদাবাদে টাঁকশাল স্থাপিত হলে শেঠ পরিবারই তার পরিচালনার দায়িত্ব পান। এইসব কৃতিত্বের খবর দিল্লীশ্বর জানতে পারলে তিনি মানিকচাঁদকে দেখতে চান | এরপর মানিকচাঁদ দিল্লি গেলে রাজা তাঁর কথাবার্তায় খুশি হয়ে তাঁকে বলেন,তোমার উপর আমি অত্যন্ত প্রীত| তুমি যা চাইবে আমি দান করব| তখন মানিকচাঁদ বাড়ি ফিরে মাকে সব বলেন| বুদ্ধিমতী জননী পুত্রের মঙ্গলের জন্য বলেন, সম্রাটকে দিয়ে আদেশ জারি করিয়ে নিতে যে কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে শহরে কোনও গৃহস্থ বাড়িতে যেন আলো না জ্বালায়| সম্রাটের নির্দেশে ওই রাতে কেউ আলো জ্বালালো না| শেঠ মানিকচাঁদের মা ঘি-এর প্রদীপ জ্বেলে ঘর আলো করে দরজা খুলে বসে থাকলেন| যথাসময়ে দেবী এলেন এবং বললেন, আমি খুব পরিশ্রান্ত| আমাকে একটু আশ্রয় দেবে? মা দেবীর ছলনা বুঝতে পারলেন| তিনি দেবীকে ঘরে আশ্রয় দিলেন এবং বললেন, আমি নদীতে স্নান করতে যাচ্ছি| কথা দিন, আমি ফিরে না আসা অবধি আপনি এখানে থাকবেন| দেবী তাতে রাজি হলেন| এবার মা নদীতে স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে প্রাণত্যাগ করলেন| ফলে সেদিন থেকে দেবী জগৎশেঠদের ঘরে থেকে গেলেন| অবশ্য অনেকের মতে এ ঘটনাটি ঘটেছিল মানিকচাঁদের ভ্রাতুষ্পুত্র ও দত্তক-সন্তান ফতেচাঁদের সঙ্গে, তিনি দিল্লীশ্বর মহম্মদশাহের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। তবে জৈনধর্মাবলম্বী জগৎশেঠরা কেন হিন্দু দেবী লক্ষ্মীর উপাসনা করলেন তার কোন ব্যাখ্যা আমি পাইনি।
যাই হোক, আজও ধন সম্পদের দেবী লক্ষ্মীকে পাওয়ার জন্য গৃহস্থ বাড়িতে সারারাত ঘি-এর প্রদীপ জ্বালানো হয় | তবে স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকেই ওই রাতে জুয়া খেলে থাকেন, জানিনা এ অনাচার ধর্মের স্বীকৃতি পায় কি করে |
No comments:
Post a Comment