Thursday, March 25, 2021

 এইয়ো, মুখ সামলে! 


কবি ফেসবুকানন্দকে ধন্যবাদ, পথ দেখানোর জন্যে। কবিতা মঝে মাঝে সোডার মত গুঁতো দিয়ে ওঠে, অথচ কলমের (বা মাউসের) ডগায় আসতে চায় না, তখন এই কায়দায় মহাকাব্য লিখে ফেলা যায়। যেমন ধর-
এদিন আজি কোন দুধে গো ভরে দিলে ভাঁড়,
আজি প্রাতে গাই-দোয়ানো সফল যে আমার।
লিখি যত কবিতা, বেকার সবি তা-
পাবলিশারের খোঁজে ছিঁড়ে গেল সোল,
অমাবস্যার চাঁদ যেন ব্ল্যাক হোল।
এইভাবে সবে বাখানিল মোর উপস্থিতবুদ্ধি
তাই কবিতার শেষে রেখো খানিকটা মুখশুদ্ধি।
উঃ, কি উল্লাস যে হচ্ছে!
একথা তো সুকুমার বলেছেন বুঝিয়ে,
জবাবটা জেনে নিন মেজদাকে খুঁচিয়ে।
মেজদাকে ধরবেন কিভাবে জানেন না?
গাছে থাকে গেছোদাদা, তার কাছে যান না।
দাদা থাকে তিব্বতে, উড়ে যাব, ডানা কই?
কি করব? আমরা তো গুরু-মারা চেলা নই!

(লিমেরিক)
ও ডাক্তার, কী হল গো আমার ডায়াগ্নোসিস?
ডাক্তার কন, বলি যদি অরোরা বোরিয়ালিস্‌-
বুঝবে কিছু? মাথা নাড়াই,
লাভ কী মিছে করে লড়াই,
মোবাইলেই গুগল আছে, যৎসামান্য ফীস!

হালকাভাবেই বলি, প্রেমের বন্ধন অনেক সময় পীড়াদায়ক হয়ে ওঠে যদি প্রেমিক বলে- 'রোগের মতন বাঁধিব তোমায় দারুন আলিঙ্গনে'। তখন সেই যন্ত্রণার থেকে ছাড়া পেতে হয়ত প্রেমিকাকেও বলতে হয়- 'ওগো প্রিয় মোর, খোল বাহুডোর, পৃথিবী তোমাকে যে চায়'। কি জানি কেসটা আসলে কি ছিল!
ঠাট্টা নয়, জনশ্রুতি আছে গোস্বামী তুলসীদাস এইরকম ভালবাসতেন স্ত্রীকে। স্ত্রী যেটা করলে লোকে পতিব্রতা বলে প্রশংসা করে, স্বামীদের ক্ষেত্রে একই অবস্থায় জোটে স্ত্রৈণ বলে লাঞ্ছনা। একদিন এমন অবস্থা দাঁড়াল যে স্ত্রী একবেলার জন্যে পিত্রালয় গেছেন, তুলসীদাস থাকতে না পেরে সেই রাত্রেই ছুটে এসেছেন শ্বশুরবাড়ি। লজ্জিতা, অপদস্থা তুলসী-পত্নী তখন ভর্ত্সনা করে তাঁর পতিকে যা বলেছিলেন, তুলসীদাসের লেখা থেকেই বলছি-
"লাজ না লাগত আপকো, দৌড়ে আয়হু সাথ
ধিক, ধিক, এইসে প্রেম কো, ক্যা কহুঁ ম্যয় নাথ।
অস্থি-চর্মময় দেহ মম, তামেই এয়্সী প্রীতি,
এইসা যো শ্রীরাম মে হো, ন হোতী তো ভবভীতি।"
ঘুরে গেল তুলসীর জীবনের মোড়। সংসার ছেড়ে তিনি রামচরিত নিয়ে পড়লেন, বাকিটা ইতিহাস।

অনেকে বলেন শরৎচন্দ্রের সাহিত্যে মুসলমানদের সেভাবে দেখানো হয়নি। ভুল কথা। তিনটি মুসলিম চরিত্র, মহেশের গফুর মিঞা, পল্লীসমাজের আকবর লেঠেল আর শ্রীকান্তের গহর এরাই যথেষ্ট বাংলার তখনকার মুসলমান জাতির দারিদ্য, নিষ্ঠা ও আত্মসম্মানবোধের পরিচয় দেবার জন্যে। আকবর লেঠেলের সেই মার খেয়েও শত্রুর তারিফ- 'সাবাস ছোটবাবু। মায়ের দুধ খেয়েছিলে বটে। লাঠি ধরলে বটে!' আর সেই বিখ্যাত উক্তি- 'আপনি হুকুম করলে আসামী হইয়্যে জ্যাল যেতে পারি, ফৈরিদি হব কোন কালামুয়ে?'- এই দুটি উক্তিই মুসলমানী চরিত্রের দৃঢ়তা ফুটিয়ে তুলতে যথেষ্ট।

বিদ্যাসাগরের 'সততসঞ্চরমানজলধরপটল' কথাটা মনে পড়ল আকাশের ঘনঘটা দেখে, ওটা বেশ ভালভাবে উরুশ্চারন করা যায়। কিন্তু 'প্রোষিতভর্তৃকা' কথাটা অভিধান থেকে তুলে তার জায়গায় 'পোসিতভত্তিকা' করে দিতে হবে, বুঝলে পার্থ......একন আর ব্রাত্য শিক্ষামন্ত্রী নেই যে টিক-টিক করবে, তাপস্পালটাও কোতায় যেন পাইলে গেল!

দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় 'গু' এর আধিক্য আছে বটে। উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে, গুইয়ানা বা গায়ানা(guyana), নিকারাগুয়া (তার আবার রাজধানী মানাগুয়া), গুয়াতেমালা। ওদের কবির নাম (তিনি শ্রদ্ধেয়, ছোট না করেই বলছি) গুয়েভরা। পেরুর গুয়ানো আর চিঞ্চা দ্বীপপুঞ্জে তো গুয়ানো পাখির গু থেকে উত্পন্ন সার ও গুয়ানো পাখি বহু দেশে রপ্তানি হত এককালে, শেষে দ্বীপগুলোর মালিকানা নিয়ে পেরু-চিলির যুদ্ধই বেধে গেল স্পেনের সাথে। তাই বলি, 'গু' বলে যেন কেউ হেলাফেলা না করে!


গুয়াহাটি ছাড়ার প্রায় সতের বছর পর গোবর্ধন ফিরছে। পাড়ার পুরনো বুড়ো মুচি কিন্তু তার গোবরাভাইকে ঠিক চিনেছে। 'তোমায় একটা জুতোজোড়া সারতে দিয়ে গেছিলাম, মনে আছে?' গোবরার প্রশ্ন। 'এই দেখো, মনে থাকবে না কেন? এই তো সেদিনের কথা', মুচি বলে, 'তবে গোবরাদাদা, জুতোজোড়াটায় সামান্য একটু কাজ বাকী আছে, ওটা তুমি কাল পাবে।'
শিব্রামের এই গল্পটার কোনও জুড়ি নেই! এর পরের অংশটা আরো মজার। এত টাকা করেছেন, তাই হর্ষবর্ধনের ইচ্ছা গুয়াহাটিতে একটা সর্ব-ধর্ম-সমন্বয়ের তীর্থক্ষেত্র স্থাপনা করা। মুচিভায়াকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে টাকা-পয়সা গুনে দিয়ে গোবরা কলকাতা ফিরে এল। তারপর কাজ শেষ হওয়ার খবর পেয়ে দুই ভাই গিয়ে দেখে, মুচিভাই সেখানে স্থাপন করেছেন সারি সারি পায়খানা - সর্বধর্মসমন্বয়ের আদর্শ!
এতদিনে মোদীভাই এ কথাটা ভেবেছেন। বাঙালি শিবরাম বহু আগেই ভেবেছিলেন।


শুওরটা কচু চেনে, মা কালী চেনে পাঁঠা-
রতনে রতন চেনে, টাটায় চেনে ঝাঁটা !
টাটা ঢুকলেই শিল্প, শিল্প মানেই চাকরি, তার মানেই কাজ করতে হবে। অতএব বন্ধুগণ, আসুন আমরা পোত্যেকে মিলে টাটাকে বাংলা থেকে চির নিব্বাসন দিই, এখন দিদি বললেও মানছি না।
কোরাস।। মানছি না, মানব না, ইনকিলাব জিন্দাবাদ....ইত্যাদি।


Kiss-এ kiss-এ লাভ নেই আইনের চক্ষে,
নোট ছাড় পুলিশকে, তবে পাবে রক্ষে।
তেলে-জলে মিশ খায় নাকি কোনও দিন তা?
অলি ফুলে কিস্‌ খায়, মন নাচে ধিন্‌-তা।
শোনো সুধীজন শোনো, সব ফুলে মধু নেই-
কিসে-বিষে-মিশে শেষে যাবে টেঁশে, জেনো এই।

No comments:

Post a Comment