Sunday, April 24, 2022

 ভোলাও পথ হে নাবিক।

জয়শংকর প্রসাদ


ভুলায়ে পথ সেথা নিয়ে চল মোরে
হে মোর নাবিক, ধীরে ধীরে।
সিন্ধু-লহরী যেথা একান্তে
অসীম গগন শ্রবণ-প্রান্তে,
অকপট প্রেমে আপনা প্রকাশে
ত্যজি অবনীর কোলাহলে রে!
যেথা সন্ধ্যার মত জীবনের কায়া
ঘেরি নীল অঞ্জনসম ছায়া
আপনা উজাড়ি দেয় ছড়াইয়া
 তারকা লক্ষ-সহস্রে।।

যে মহাগম্ভীর মধুর ছায়ায়
বিশ্ব চিত্রপট সচল মায়ায়,
এক হয়ে যায় স্রষ্টা-সৃষ্টি
দুখে-সুখে হয় সমান দৃষ্টি
শ্রম ও বিরাম মেলে যে ক্ষিতিজে,
পরমানন্দে চলিয়াছে সৃজে
উজারি নয়ন ঊষা নিজ তেজে
বিখরিছে জ্যোতিপুঞ্জেরে।। 
 

शक्ति और क्षमा / रामधारी सिंह "दिनकर"

क्षमा, दया, तप, त्याग, मनोबल
सबका लिया सहारा
पर नर व्याघ्र सुयोधन तुमसे
कहो, कहाँ, कब हारा?

क्षमाशील हो रिपु-समक्ष
तुम हुये विनत जितना ही
दुष्ट कौरवों ने तुमको
कायर समझा उतना ही।

अत्याचार सहन करने का
कुफल यही होता है
पौरुष का आतंक मनुज
कोमल होकर खोता है।

क्षमा शोभती उस भुजंग को जिसके पास गरल हो उसको क्या जो दंतहीन विषरहित, विनीत, सरल हो।
तीन दिवस तक पंथ मांगते रघुपति सिन्धु किनारे, बैठे पढ़ते रहे छन्द अनुनय के प्यारे-प्यारे।

उत्तर में जब एक नाद भी
उठा नहीं सागर से
उठी अधीर धधक पौरुष की
आग राम के शर से।

सिन्धु देह धर त्राहि-त्राहि
करता आ गिरा शरण में
चरण पूज दासता ग्रहण की
बँधा मूढ़ बन्धन में।

सच पूछो, तो शर में ही
बसती है दीप्ति विनय की
सन्धि-वचन संपूज्य उसी का
जिसमें शक्ति विजय की।

सहनशीलता, क्षमा, दया को
तभी पूजता जग है
बल का दर्प चमकता उसके
पीछे जब जगमग है।


"শক্তি ও ক্ষমা"

রামধারী সিংহ 'দিনকর'


ক্ষমা, দয়া, তপ, ত্যাগ, মনোবল সকলই করেছ প্রয়োগ তবু, মৃগরাজ সুযোধনে হে ধর্ম, হারাতে বল কি পেরেছ কভু?

রিপুদলে দিয়ে ক্ষমার ভিক্ষা যত অবনত তুমি হয়েছ, দুষ্ট কৌরব সমুখে সতত ভীরু অপবাদ শুধু সয়েছ।
অন্যায়-অত্যাচার সহিয়া
বল দেখি কিবা পেয়েছ ফল- পৌরুষ-মহিমা করেছ নষ্ট হয়ে অতিশয় মৃদু, কোমল!

ক্ষমা শোভে সদা সেই ভুজঙ্গে যার দশনেতে আছে গরল তার কিবা মান যে বিষ-বিহীন নত, নিস্তেজ কিংবা সরল?
তিন দিন ধরে রঘুপতি রাম
রয়েছেন বসে সিন্ধুতীরে 'পথ দাও মোরে'- বলে করজোড়ে অনুনয় করে সমুদ্রেরে

নিষ্ফল যবে সব প্রার্থনা, সমুদ্র-দেব রহে নিশ্চল অধীর রাঘব, বাণের অগ্রে জ্বলে পৌরুষ-দৃপ্ত অনল।

সাগর দেবতা করজোড়ে আসি পড়েন রামের চরণ ধরে 'ত্রাহি নাথ', কয়ে শরণ নিলেন, পাতেন পৃষ্ঠ বন্ধন তরে
বিনয়ের তেজে শরের দীপ্তি এ কথা রটিল তিন ভুবনে, সন্ধি? আত্মসমর্পণের নামান্তর যে শক্তিহীনের!

সহনশীলতা, ক্ষমা ও দয়ার তখনই জগতে কদর হয়, পশ্চাতে তার বলের দর্প দৃপ্ত যখন দীপ্তিময়!


Friday, April 22, 2022

 আয়না।


আয়না ছিল আমার প্রিয় বন্ধু।
সকালে উঠেই সে যেন ডাকতো, আয় না, আয়!
তাকাই তার দিকে,
নিজেকে নিজের মতই দেখে নিশ্চিন্ত হতাম।

ইদানীং ক'দিন ধরে আয়নার ভেতরের মানুষটা কেমন যেন বদলে যাচ্ছে।
ওটা যেন আমি নই, অন্য কেউ,
কখনও তিলক কাটা, কণ্ঠীধারী, কখনও বা গলায় রুদ্রাক্ষ।
সেদিন দেখি একটা ফেজ টুপি পরা দাড়িওলা মোল্লা-
আয়না, এ তোমার কেমন খেলা, বদলে গেল রীতিনীতি, কায়দাকানুন?
রোজ সকালে দেখি ধ্বংসের মিছিল, সততার পরাজয়
এই বিশ্ব যেন শিবহীন যজ্ঞের তাণ্ডবে মেতেছে-
সব বদলে হয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইউক্রেন।
বদলে যাচ্ছে আয়নার ভেতরের ওই মানুষটা,
তার এখন বিশাল নখদন্ত, কখনও হাতে ছুরি বা ত্রিশূল...
কখনও এলএমজি বা হ্যান্ড-গ্রেনেড!
ইয়া আল্লা, ও মাই গড রক্ষা কর, আর আমি আয়না দেখতে চাই না।
হে ঈশ্বর আমাকে একটু বালিয়াড়ি দাও, উটপাখি হই।

Thursday, April 14, 2022

 মধুর মধুর মম দীপক জ্বলো।

মহাদেবী বর্মা
(অনুলিখন- পল্লব)

মধুর মধুর মম দীপক জ্বলো।
যুগে যুগে প্রতিদিন প্রতিক্ষণ প্রতিপল
প্রিয়তমের পথে জ্বালাও আলো।

সুরভি ছড়াও তুমি ধূপের বেশে
মোমের মতন গলো মৃদু-সুবাসে,
ছড়াও জ্যোতি-সাগর অপরিসীম
তব জীবনের কণা পড়ুক গলে,
পুলকে ভরিয়া তনু প্রদীপ জ্বলো।

কোমল শীতল যত তারকাগুলি
তোমার শিখায় চায় উঠিতে জ্বলি,
এ বিশ্ব পতঙ্গ যেন আক্ষেপে
কহে হায় পোড়া হল না তব তাপে,
শিহরি তনু এ গাথা সবারে বল।

দূর নভে দেখ জ্বলে দীপ অগণন
অকারণে ক্ষয় করে নিজের জীবন
জলময় সাগরের বক্ষ জ্বলে
দামিনী আকাশ ঘেরে মেঘের দলে,
তেমনি মধুর হেসে দীপক জ্বলো।

গাছের হরিৎ শাখা কোমলসম
জ্বালারে করতে চায় হৃদয়ঙ্গম,
বসুধার জড় অন্তরের তলে
বন্দী না রেখে তাপ প্রবল বলে-
অগ্নি-মুক্ত করে শিখায় জ্বলো!

আমার নিঃশ্বাস চেয়ে দ্রুত হও
নিভতে দেবনা আমি নির্ভয় রও,
আপন আঁচলে ঘিরে রাখব তোমায়
মৃদু মৃদু কম্পনে দেদীপ্যমান
সহজ-সহজরূপে দীপক জ্বলো। 

হে গরিয়ান্‌! ত্যজ সীমার বন্ধন
অনাদি, কোরনা তুমি কালের গণন,
আমার নয়ন হ'তে কলস ভরে
ঢালব অশ্রু আমি তোমার পরে,
সে জলে সজল হয়ে প্রদীপ জ্বলো। 

তমসা অসীম, চিরে তার অন্তর
খেলব নতুন খেলা নিরন্তর-
আঁধারের অণু-অণু বিজলী ভরে
অমর চিত্র চল সৃজন করে,
সরল সরল মোর দীপক জ্বলো।

জ্বলতে জ্বলতে তুমি হবে যত ক্ষয়
ততই নিকট হবে সে ছলনাময়,
মধুর মিলনে নিজে বিলীন হয়ে
উজল-আলোকে তাঁর অঙ্গে রয়ে
মদির-মদির মম দীপক জ্বলো,
প্রিয়তমের পথে জ্বালাও আলো।