Monday, June 13, 2022

অথ তেলাপোকা-ঘটিত - বাংলা গল্প

অথ তেলাপোকা-ঘটিত

(অধিকাংশ ঘটনাই কাল্পনিক)


- কিরে, ওয়েবক্যামের ফুটেজটা উদ্ধার হল?
- আজ রাত্রের মধ্যেই হার্ড-ডিস্ক থেকে রিকভার করে ফেলব। চিনেম্যান লিং খুব এক্সপার্ট ছেলে এ ব্যাপারে। তবে আমাদের এসব বুঝতে অনেক দেরি হয়ে গেছে রে, জানিনা আজ রায় বেরিয়ে গেলে কী হবে!
- ঠিক। কোর্টকে বললে সেতো আর শুনবে না। জাজ আজই রায় ঘোষণা করে ফেলবে। কে বিশ্বাস করবে যে অফিসের মধ্যে ক্লারার হার্টফেল করাটা আসলে খুন, দুর্ঘটনা নয়। ইন ফ্যাক্ট, হাস্যকর মনে হওয়া এই আরশুলার গল্পটাকেই কোর্ট মানতে চাইছে না। নিউইয়র্কের ব্রংক্সের মত জায়গার একটা সফিস্টিকেটেড অফিসে এতগুলো আরশুলার একসাথে আবির্ভাব যে একটা দুর্ঘটনা হতে পারেনা, সেটাই কোর্টকে বোঝাতে পারেনি ইনস্যুরেন্স কোম্পানির উকিল। আমেরিকার কোর্ট এসব পেটি কেসকে পাত্তা দেয় না, এই মুহূর্তে কোন সলিড সাক্ষ্য বা প্রমাণ দেখাতে না পারলে আজই রায় শোনাবেন জজসাহেব। এখন একমাত্র ভরসা ক্লারার ল্যাপটপের ওয়েব ক্যামেরার রেকর্ডিং। কিন্তু রেকর্ডিং কিছু হয়েছে কিনা তাই তো বোঝা যাচ্ছে না, মৃত ক্লারার হাতে লেগে অফিসের মেঝেয় ছিটকে পড়া ল্যাপটপের হার্ড-ডিস্কটা এমনভাবে ভেঙেছে!
- চিন্তা করিসনা, সব মেয়েই আরশুলাকে ভয় পায়না। আর ডায়না তো ডাইনোসর নিয়ে লোফালুফি খেলার মেয়ে। দেখিস, ও ঠিক কাজ উদ্ধার করে আনবে।
কথা হচ্ছিল অক্সিডেন্টাল ইনস্যুরেন্স কোম্পানির ক্লেম ইনভেস্টমেন্ট টীমের দুই প্রডিজি অফিসার রেইনডিয়ার আর আইসবার্গের মধ্যে। বলা বাহুল্য, নামদুটোই আসল নয়- ওগুলো আদরের ডাকনাম। ওরা আসলে হল র্যান্ডি ড্রেক আর আশিস বারিক, বন্ধুত্ব খুব ঘনিষ্ঠ ওদের তিনজনের মধ্যে। তৃতীয়জন তাদের সুন্দরী ও ততোধিক সাহসী সহকর্মী ডায়না- না স্পেন্সার বা পামার নন, টেলার- অবশ্য সেটা তার আসল নামই বটে। ঘটনা আর কিছু না, ওদের কোম্পানির হালের সাফল্যের মূলে ছিল একটা নতুন বীমা প্ল্যান- 'ইউ অর মী, বেব!' এই প্ল্যানটা আসলে স্বামী-স্ত্রীর ম্যুচুয়াল বীমা অর্থাৎ স্পাউসদের মধ্যে যে কেউ একজন মারা গেলে অন্যজন পাবে সমস্ত ডেথ বেনিফিট। ক্লারা আর জনসনের পলিসিটা মাত্র দু'বছরের পুরনো, দশ লক্ষ ডলার সাম অ্যাসিয়োর্ড। আশিস, মানে আইসবার্গের চেহারা বিশাল হলেও মাথা বরফের মতই ঠাণ্ডা আর উপস্থিতবুদ্ধির অভাব নেই। তার মাথাতেই প্রথম আসে যে ক্লারার মৃত্যুটা স্বাভাবিক নয়, ডাক্তার স্বাভাবিক হার্টফেল বলে জানালেও। টাকার দাবীটা মৃত্যুর ঠিক সাতদিন পরে আসে ক্লারার স্বামী জনসনের তরফ থেকে। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর নিয়মমাফিক পলিসি নেওয়ার একবছরের মধ্যে ক্লায়েন্টের স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও একটা তদন্ত হয় কোম্পানির তরফ থেকে। আর মিলিয়ন ডলার বা তার বেশি সাম অ্যাসিয়োর্ডের পলিসির ক্ষেত্রে সেই তিনবছরের মধ্যে মারা গেলেও সেটা তদন্তসাপেক্ষ। এটা মার্জিনাল কেস, তারপরে খুন বা আত্মহত্যা নয়, এমনকি ঠিক দুর্ঘটনাও বলা যায় না- পঁয়ত্রিশ বছরের একজন মহিলার একা অফিসে কাজ করতে করতে হঠাৎ হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে মৃত্যু হতেই পারে, বিশেষতঃ কিছুটা উচ্চ-রক্তচাপের সমস্যা থাকলে।
সবই ঠিক ছিল, গোলমাল বাধাল ক্লারার হার্টফেলের পর অফিসের সিক্যুরিটি স্টাফের বয়ানে অফিসের মধ্যে বেশ কিছু আরশুলার অস্বাভাবিক উপস্থিতির কথা, পুলিশ অবশ্য সে সব নিয়ে খোঁজ করেনি। করবেই বা কেন? আইসবার্গের বইপড়া অভিজ্ঞতা বলে পুলিশ স্বভাবতঃই একটু মাথামোটা হয়, ডয়েলের ইন্সপেক্টার লেসট্রেড থেকে শুরু করে হেমেন রায়ের সুন্দরবাবু, শরদিন্দুর বিধুবাবু - এঁরা কল্পনাশক্তিহীন বিশালকায় যন্ত্রবিশেষ। তারই কি কিছু সন্দেহ হত, নেহাত বীমা কোম্পানির বিধিমত লক্ষ ডলারের বেশি মূল্যের পলিসির ক্ষেত্রে একটা অনুসন্ধান বাধ্যতামূলক, বিশেষ করে ক্লায়েন্টের মৃত্যু আস্বাভাবিক বা সময়ের আগে হলে।
সান্ধ্য খবরের কাগজে রেনডিয়ারই খবরটা পড়ে প্রথমে। সেদিন সকালেই হেডকোয়ার্টারের বার্ষিক রিপোর্টে মিলিয়ন ডলারের পলিসির ব্যাপারটা তার চোখে পড়ে। তাদের কোম্পানির ইতিহাসে এত বড় অঙ্কের ব্যক্তিগত পলিসি এই প্রথম। তারপরেই এই সংবাদ, সন্দেহ তো হবেই। মোটিভ স্পষ্ট। কিন্ত প্রমাণ নেই, আর আমেরিকায় সময়ের দাম আছে, কোর্ট এত সময় দেবে না। একটাই সূত্র ছিল ওয়েব-ক্যামে কিছু রেকর্ড হয়ে থাকলে, কোম্পানির আদেশ অনুসারে ল্যাপটপ যতক্ষণ অন থাকবে রেকর্ডিং চালু রাখতে হবে, অন্য প্রান্তে কেউ থাকুক বা না থাকুক। 'এই নিয়মটা আপনি জানতেন?'- ক্লারার স্বামী জনসনকে প্রথম প্রশ্ন ডায়নার, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তাকেই পাঠিয়েছিল টিম-লিডার আইসবার্গ।

'হ্যাঁ, জানতাম তো!' জনসনের এই জবাব শুনে আশাহত হয়ে পড়েছিল ডায়না। অফিস ফেরার পর সে যখন আইসবার্গ আর রেনডিয়ারকে রিপোর্ট দিচ্ছিল তখনই রেনডিয়ারের চোখে পড়ে ডায়নার জুতোর তলায় আটকে থাকা স্টিকারটা। কোন নাম নেই, শুধু ম্যানহাট্টানের চায়না টাউনের একটা ঠিকানা আর একটা ফোন নম্বর। ফোন নম্বর একটা চিনে ড্রাগ কোম্পানির, যে ছেলেটি ধরেছিল সে দোকানের মালিকের ছেলে, নাম চ্যাং, কম্প্যুটার মেকানিক। ভাঙা ডিভিডি প্লেয়ার, ডিজিক্যাম, হার্ড-ডিস্ক সারাতে পারে এমনটাই সে জানিয়েছিল।


 

২)

তিনদিন পরের কথা, ৬ই জুন ২০২২, সোমবার। ফোলি স্কোয়ার সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টহাউস, ম্যানহাট্টান, নিউইয়র্ক। শ'খানেক আরশুলা কোর্টরুমে ছাড়ার অপরাধে পুলিশ কাঠগড়ায় তুলেছে অভিযুক্ত অক্সিডেন্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির গোয়েন্দা বিভাগের কর্মচারি মিস ডায়না টেলারকে। যদিও তার বিচার এই আদালতে হওয়ার কথা ছিল না, কিন্তু বিবাদীপক্ষের কর্মচারি হিসেবে আদালতের কাজে বাধা দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে, তাই জাজের নির্দেশে কিছুটা কৌতূহলের বশেও তাকে এই কোর্টেরই কাঠগড়ায় তোলা হল। পুলিশ তার এই কাজের কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছে না, জাস্টিস মার্শালের তো কথাই নেই। শুধু অক্সিডেন্টালের উকিল মিঃ স্টোন মৃদু মৃদু হাসছেন, কী হতে চলেছে তাই ভেবে।

হ্যাঁ, শুক্রবার ৩রা জুন আদালতে হাজির ছিল ডায়না, বীমা কোম্পানির তরফে অন্যতম সাক্ষী হিসেবে। সেখানে জনসনের উকিল মিঃ প্যাটেল বুঝিয়ে চলেছেন কিভাবে অন্যায় অভিযোগে অক্সিডেন্টাল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি তাঁর ক্লায়েন্ট মিঃ ডেভিড জনসনকে দাবীকৃত পাওনা থেকে বঞ্চিত করতে চাইছে। - 'ইয়োর অনার, আমার ক্লায়েন্টের এই দাবী সঙ্গত, আরশুলার সঙ্গে তার কোন সম্বন্ধ নেই। বিবাদীপক্ষের উকিল লার্নেড ফ্রেন্ড মিঃ স্টোন বলতে চাইছেন যে ক্লারার স্বামী আমার ক্লায়েন্ট মিঃ জনসন শ'খানেক আরশুলা গোপনে পুরে দেন ক্লারার টিফিন বক্সে। বাক্স খুলে তাই দেখেই মিসেস জনসন ভয়ে হার্টফেল করেন। এই অভিযোগের কি কোন ভিত্তি বা প্রমাণ আছে?' - 'কেন, সিক্যুরিটি স্টাফ দিয়েগোর সাক্ষ্যে তো জানা গেছে সেদিন অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচুর আরশুলা দেখতে পাওয়া গেছে ব্রনক্সের শপিং মলের ম্যানেজারের অফিসে, যেখানে কাজ করতেন ক্লারা জনসন। আর ডাক্তারের সাক্ষ্য থেকে তো পরিষ্কার যে ক্লারার হাইপারটেনশান ছিল, প্রেশারের ওষুধ খেতেন নিয়মিত। অবশ্য সেদিন তিনি নাকি ওষুধের বাক্সটা খুঁজে পাননি তাই খাওয়া হয়নি, তাঁর কলিগ স্টেলাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে। ওষুধের বাক্স লুকিয়ে ফেলাটাও তো একটা চক্রান্ত হতে পারে।'

- 'আসলে আমার লার্নেড ফ্রেন্ড একটা নামকরা বিজনেস সংস্থাকে ডিফেন্ড করছেন, তাই সঙ্গত কারণেই ভিক্টিমের ওষুধ না খাওয়া, অফিসে আরশুলা পাওয়া আর পলিসি নেবার দু'বছরের মধ্যে ইনস্যুরডের মৃত্যু হওয়া- এই সব কিছুর মধ্যেই চক্রান্ত দেখতে পাচ্ছেন। তাঁকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে শপিং মলের নিচের তলায় একটি ফুড কোর্ট আছে, আরশুলা সেখান থেকে আসতেই পারে। মিস ডায়না ইতোমধ্যেই পলিসি সম্বন্ধে সব বিবরণ জানিয়েছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন যে আরশুলা দেখে ভয় পেয়ে ক্লারা হার্টফেল করে মারা গেছেন, অতএব এটা অস্বাভাবিক মৃত্যু বা হত্যাকাণ্ড। আমি আশা করব বিবাদী পক্ষের উকিল এর সপক্ষে কিছু প্রমাণ বা সাক্ষী খাড়া করবেন।'

এতদূর শোনার পরে মিঃ স্টোন উপায়ান্তর না দেখে চুপ করে থাকেন, কারণ সত্যি তো আরশুলার কারণে হার্টফেল করে মৃত্যু ঘটলেও তো সেটা স্বাভাবিক যদি না কেউ জেনেশুনে তা ছেড়ে থাকেন। টিফিন বাক্সে আরশুলা ছিল তার প্রমাণ কই, কে ভরেছে তার হদিস কই? সব ভেবেচিন্তে জজ মার্শাল জানালেন যে আদালতের সময়ের দাম আছে, একঘন্টার মধ্যে কোন সাক্ষী-প্রমাণ জোগাড় না হলে কেস ডিসমিস করা হবে, অর্থাৎ ঠিক তিনটের মধ্যে রায় দেওয়া হবে। বলা বাহুল্য, রায় জনসনের পক্ষেই যাবে- মানে অক্সিডেন্টালের মিলিয়ন ডলার ক্ষতি!

অগত্যা ঠিক দু'টো বেজে পঞ্চাশ মিনিটে আদালত কক্ষে ছড়িয়ে পড়ল প্রায় দেড়শো-দুশো জ্যান্ত তেলাপোকা- জাস্টিস মার্শালের রোবের মধ্যে গিয়ে ঢুকল গোটা পাঁচেক। আদালতের কাজ বন্ধ, বেশি খোঁজ করতে হল না, ধরা পড়লেন ডায়না সুন্দরী, তার হাতব্যাগের মধ্যে পাওয়া গেল একটা বড়সড় পলিপ্যাক, ঠিক যেরকম ক্লারার টিফিন বাক্সে পাওয়া গেছিল। ডায়না গ্রেফতার হল আর আরশুলার প্যাকেটটি- তখনও খান দশ-বারো রয়ে গেছিল তার মধ্যে, বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ। সব দেখে শুনে একটা পরিতৃপ্তির হাসি হাসল ডায়না। অনেক কষ্টে সিক্যুরিটির নজর এড়িয়ে আরশুলার ব্যাগটা আনতে পেরেছে আদালতে, এক্স-রে মেসিন কিছু টের পায়নি। সে নিশ্চিত যে কোন পুরুষ এত সহজে নিষ্কৃতি পেত না, তাই তাকে পাঠাবার প্ল্যানটার জন্যে মনে মনে আইসবার্গের তারিফ করল সে।


৩)

জজসাহেব আদালত বন্ধ করে কেটে পড়লেন, ঘণ্টা দুই সময় লাগবে ফিউমিগেশনের জন্যে। কোর্টরুম খালি করা হল, আদালত খুলবে সোমবার ছয় তারিখে, হাতে দু-তিনদিন সময়। খবর পেয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচল অক্সিডেন্টালের টাইম স্কোয়ার অফিসে অপেক্ষারত দুই মহারথী আইসবার্গ আর রেনডিয়ার। তাদের এখন অনেক কাজ, সর্বপ্রথম ডায়নার জামিনের ব্যবস্থা করতে হবে। বলা বাহুল্য আজকের টেলিভিশন চ্যানেল আর কালকের কাগজগুলোতে এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হবে, তাই তেসরা থেকে পাঁচই জুনের ঘটনাবলি এবার আমাদের খতিয়ে দেখা দরকার। তাহলে এবার ফিরে আসা যাক ছ'তারিখের সকালবেলার কোর্ট প্রসিডিংএ।

এদিন কোর্টরুমে এসেছে অক্সিডেন্টালের দুই গোয়েন্দাপ্রবর, যাদেরকে আমরা রেনডিয়ার ও আইসবার্গ নামে অভিহিত করেছি। এসেছেন কোম্পানীর আরো কিছু উচ্চপদস্থ কর্মচারি, বোর্ড অফ ডাইরেক্টার্সের জনাদুই সদস্য ও ম্যানেজিং ডিরেক্টার ডাঃ হেট্মেয়ার। তাঁরাও যথারীতি উত্তেজিত ঘটনাক্রমের পারম্পর্যে, অথচ আইসবার্গকে শুধিয়েও তাদের কাজের প্রণালীর কোন সঠিক হদিস পাননি তাঁরা কেউ। আর পাবেন কিভাবে? আইসবার্গ তো জানে সবই অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়া, লাগে কিনা কে জানে! তার উপর ডায়নাকে পুলিশ বুক করেছে এক অমার্জনীয় অপরাধে, তারও সঠিক জবাব দেওয়া প্রয়োজন। আজ ডাকা হয়েছে ব্রনক্সের শপিং মলের ম্যানেজার মিঃ ডেভিডসনকে আর ক্লারার সহকর্মী স্টেলা, তাদের সাক্ষ্যের আজ প্রয়োজন আছে। জাস্টিস মার্শাল এসে গেছেন, সবাই উঠে দাঁড়াল- কোর্ট চালু হবে।

- 'তাহলে, মিস টেলার, মহামান্য আদালতকে কি জানাবেন থার্ড জুনের অপরাহ্নে কেন বা কার প্ররোচনায় আপনি শ'খানেক আরশুলা ছেড়েছিলেন আদালতকক্ষে?' জেরা শুরু করলেন বাদীপক্ষের উকিল মিঃ প্যাটেল। - 'একশো নয়, ইয়োর অনার, প্রিসাইজলি স্পিকিং একশো পঞ্চাশ, এই তার রসিদ'- কাগজটা জজকে পেশ করেন মিঃ স্টোন। - 'হুম, চায়না টাউন, ম্যানহাট্টান'- বলে পুলিশের জমা করা পলিপ্যাকটার স্টিকার দেখে ঠিকানা মিলিয়ে নেন জাস্টিস মার্শাল। 'এই রসিদ দিয়ে কী বোঝাতে চান মিঃ স্টোন, আপনার টার্ন এলে একটু খুলে বলবেন কি?' - 'ইয়োর অনার, আই বেগ টু লেট মি ইন্টারোগেট মিস টেলার। হ্যাঁ বলুন।' - 'ইয়োর অনার, এই কেসটা যে অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ নয়, বরং ডেলিবারেট হত্যাকাণ্ড তার কিছু আভাস আমরা পেয়েছি যার ফলে এটা একটা সিম্পল ক্লেম রিলেটেড নয় তাই জানাতে চেয়েছিলাম মহামান্য আদালতকে। কিন্তু আমাদের অনুমানকে প্রমাণে পরিণত করতে কিছু সময়ের দরকার ছিল যার জন্যে আদালত সময় দিতে চায়নি। তাই এই পথ নিতে হল।' - 'কিন্তু এই বিচিত্র পদ্ধতির মানে কী?' - 'তাহলে স্যার আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই আপনার গতসপ্তাহের প্রসিডিং-এ করা একটি উক্তি- 'হোয়াট ক্যান এ কক্রোচ ডু? আরশুলা কোন মৃত্যুর কারণ হতে পারে না, আর হলেও তার সাথে এই কেসের, আমার ক্লায়েন্টের কোন সম্পর্ক নেই।' এখন দেখলেন তো হোয়াট এ কক্রোচ ক্যান ডু! দুঃখিত ইয়োর অনার, এই সময়টা আমাদের সত্যিই দরকার ছিল, যত না আমাদের কোম্পানিকে মিলিয়ন ডলার ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে, তার চেয়ে বেশি একজন সত্যিকারের অপরাধীকে চিহ্নিত করতে।'

- 'ইয়োর অনার, আমি উইটনেসকে ক্রস করতে চাই'- স্টোন অনুমতি চাইলেন। আদালত রাজি হলে তিনি ডায়নাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলেন। 'মিস টেলার, এই চায়না টাউনের গল্পটা একটু বুঝিয়ে বলবেন?' - 'ইয়োর অনার, আমি গত সপ্তাহে অনুসন্ধানের কাজে মিঃ জনসনের অ্যাপার্টমেন্টে গেছিলাম। তিনি আরশুলা সম্বন্ধে যাবতীয় খবর অস্বীকার করেন। কিন্তু তাঁরই বাসা থেকে আমি উদ্ধার করি একটি স্টিকার যার অনুরূপ একটি স্টিকার আমার আনা আরশুলার প্যাকেটে লাগানো ছিল।' - 'আশ্চর্য! কিভাবে হল এটা?' - 'এটা আমার সিনিয়ার কলিগ আশিস বারিক ওরফে আইসবার্গের মাথায় আসে। তিনি ওই ঠিকানা আর ফোন নম্বর থেকে খুঁজে বের করেন চায়না টাউনের এক চিনে আরশুলা সাপ্লায়ারকে, আর ঘটনাচক্রে জানা যায় যে সেখান থেকেই দু'সপ্তাহ আগে মিঃ জনসন একশো আরশুলা কেনেন। এরপর আমি সেখানে গিয়ে আরো একশো পঞ্চাশ আরশুলা কিনে নিয়ে আসি, কেন তা তো জানেনই।' - 'অবজেকশন ইয়োর অনার! ইট প্রুভস নাথিং। আরশুলা কেনা মানেই খুন করা নয়। ইন ফ্যাক্ট, আমার ক্লায়েন্টের জানার কথাই নয় যে আরশুলা দিয়ে খুন করা যায়!' - 'অবজেকশন সাস্টেনড। এটা কোন প্রমাণ হল না মিঃ স্টোন। হ্যাঁ এভিডেন্স হিসেবে আমি নোট করছি, তাকে প্রমাণে পরিণত করা আপনার দায়িত্ব।'

'তাহলে এবার ডেকে নিই মিসেস জনসনের কলিগ মিস স্টেলাকে, শোনা যাক তিনি কী বলেন।'


৪)

- 'আচ্ছা মিস স্টেলা, মিসেস জনসন যে আরশুলায় ভয় পেতেন, তা আপনি জানলেন কিভাবে?' - 'কেন, ক্লারা নিজেই বলত। তাছাড়া একবার আমি নিজেও দেখেছি ফেসবুকে পাওয়া একঝাঁক কক্রোচের ছবি দেখে ওর রিঅ্যাকশন, অলমোস্ট অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। ও না, ফেসবুক দেখাই ছেড়ে দিল তার পর থেকে!' - 'কিন্তু এই ব্যাপারটা যে মিঃ জনসন জানতেন সেটা আপনার কিভাবে মনে হল?' - 'মনে হবার কথা নয়। এটাও ক্লারাই বলেছে। একদিন বাসায় একটা আরশুলা দেখে সে এমন হাত-পা ছুঁড়তে শুরু করে যে ওর হাবি ডেভিড ঠাট্টা করে বলে নাকি ক্লারাকে খুন করতে হলে গুলিগোলা, ছুরি বা অন্য অস্ত্রশস্ত্র লাগবে না, একমুঠো আরশুলাই যথেষ্ট। আমরা খুব হেসেছিলাম সে কথা শুনে।' - 'আচ্ছা ক্লারা কি ব্লাডপ্রেসারের ওষুধ খেতেন? মারা যাওয়ার দিন খেয়েছেন কিনা আপনি জানেন কিছু?' - 'হ্যাঁ, হাইপারটেনশন ছিল ওর, ওষুধ খেত নিয়মিত। কিন্তু সেদিন অফিস আসার আগে ওষুধের বাক্সটা খুঁজে পায়নি, তাই খেয়ে আসতে পারেনি বলে জানিয়েছিল।' - 'আচ্ছা, আপনাদের অফিসিয়াল ল্যাপটপে দিনের সব কিছু রেকর্ড হয়, সে খবর জানেন?' - 'কই, এরকম কিছু জানিনা তো!' - 'আচ্ছা, আপনি এবার আসতে পারেন মিস স্টেলা। অনেক ধন্যবাদ।' - 'মি লর্ড! আমার লার্নেড ফ্রেন্ড ধরেই নিয়েছেন যে মিঃ জনসনের ক্লেম সঙ্গত, পলিসির শর্তানুযায়ী ডেথ বেনিফিট তাঁরই প্রাপ্য। অক্সিডেন্টালের প্ল্যান 'ইউ অর মি বেব' অনুযায়ী তিনি ঠিক। কিন্তু পলিসি ডকুমেন্ট ক্লজ ১৩বি, সাবক্লজ টু অনুসারে ভিক্টিমের অস্বাভাবিক বা পলিসি কমেন্সমেন্টের তিন বছরের মধ্যে মৃত্যু হলে সেটা বিচারসাপেক্ষ। তাই পুরো ঘটনাক্রম পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সাজিয়ে তুলে আদালতকে জানাবার জন্যে ডেকে নিচ্ছি অক্সিডেন্টালের ক্লেম ইনভেস্টিগেশনের ভারপ্রাপ্ত অফিসার মিঃ বারিককে। উনি ঘটনাক্রম সাজিয়ে পেশ করবেন আর আদালতের প্রয়োজনে অন্য সাক্ষীদের ডাকবার অনুমতি চাই মহামান্য বিচারপতি।' - 'অনুমতি দিলাম।'

- 'ইয়োর অনার, যে কোন বড় অঙ্কের পলিসিতে আমার কোম্পানির উপরমহল খুশি হয়, সংশ্লিষ্ট ম্যানেজারের পদোন্নতি হয়, কিন্তু আমাদের ডিপার্টমেন্টের কাজ বেড়ে যায়'- বলে হাসল আইসবার্গ। আদালতে হাসির রোল উঠল। - 'অর্ডার অর্ডার! কাজের কথায় আসুন। এক্ষেত্রে আপনি কী অসামঞ্জস্য দেখেন আর কিসের ভিত্তিতে অভিযোগ আনেন আদালতকে খুলে বলুন।' - 'নিশ্চয় বলব ইয়োর অনার। বিশাল অঙ্কের পলিসি শুরু হওয়ার দু'বছরের মধ্যে, তাও আবার দ্বিতীয় বছরের প্রিমিয়াম ডিউ হবার আগে যদি পলিসি-হোল্ডারের মৃত্যু হয়, তবে স্বভাবতই তাকে আমরা সন্দেহের চোখে দেখি। আমার প্রথম সন্দেহ হয় অফিসে আরশুলার খবর শুনে। তারপর স্টেলার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি ক্লারার আরশুলা-ভীতি, হাই প্রেসার আর সেদিনের ওষুধ না খাওয়ার কথা। কিন্তু এসব যুক্তি আদালতে টিকবে না জানতাম। তাই ডায়নাকে তদন্তে পাঠাই মিঃ জনসনের বাসায়, একজন সুন্দরীকে দেখে যদি বেফাঁস কিছু বলে ফেলেন এই আশায়।' - 'সে বিউটি উইথ ব্রেইন, আইসবার্গ'- পেছন থেকে চেঁচিয়ে বলে ডায়না, আদালতে আবার হাসির হুল্লোড় ওঠে। - 'অর্ডার অর্ডার! গো অ্যাহেড, প্লীজ।' - 'না, সতর্ক ছিলেন জনসন, তেমন কিছুই বলেননি। তবু বেশ কিছু ক্লু পাওয়া যায় সেখান থেকে। উনি জানান যে ক্লারার আরশুলা-ভীতির কথা জানতেন না, যেটা মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। ক্লারা সেদিন ওর ওষুধের বাক্স খুঁজে পায়নি, সেটাও তার বেডসাইড কাবার্ডেই রাখা ছিল। তাছাড়া তিনি নাকি জানতেন যে ব্রনক্স মলের ম্যানেজারের অফিসে প্রত্যেক স্টাফের ল্যাপটপ অন করা মাত্র রেকর্ডিং হতে শুরু করে- স্টেলার বয়ানে জানা গেছে এই কথা অফিসের এমপ্লয়িরাও জানত না। ম্যানেজার মিঃ ডেভিডসন আমাকে আলাদা করে জানিয়েছেন যে রেকর্ডিংএর কথা একমাত্র তিনি ছাড়া অফিসের কোন সাবঅর্ডিনেট জানত না, তিনি আদালতে আছেন, প্রয়োজনে সত্যিটা জেনে নিতে পারেন। তবে সবচেয়ে বড় ক্লু ছিল চায়না টাউনের ড্রাগ কোম্পানির একটা স্টিকার, যাতে একটা ফোন নম্বর ছিল। ডায়াল করতেই ওপ্রান্তে ফোন তুলেছিল লিং নামে এক চিনে ছোকরা। সে নাকি কম্প্যুটার মেকানিক, আর তার বাবা চিনে ড্রাগ আর পোকামাকড় বিক্রি করে। চিনে হোটেলগুলো, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি, কসমেটিক ইন্ডাস্ট্রি, এন্টোমলজি ল্যাব, স্কুল-কলেজের বায়োলজি ল্যাব ইত্যাদিতে আরশুলা, উইচিংড়ি, ফড়িং, পিঁপড়ে আর পঙ্গপাল সরবরাহ করার তার একচেটিয়া ব্যবসা। অ্যালবানির কান্ট্রিসাইডে আছে এদের ব্রিডিং ফার্ম।' - 'বলেন কী? হোটেলে আরশুলা?' চোখ কপালে ওঠে স্বয়ং বিচারপতির। - 'আজ্ঞে হ্যাঁ, চিন আর ফার-ইস্টের দেশগুলোতে এসব পোকামাকড় খুব জনপ্রিয় খাবার, আমরা যাকে এন্টোমোফ্যাগি বলে থাকি। ইয়োর অনার লিং আর তার বাবা লি সুন দুজনেই আছে আজ আদালতে, দরকারে তাদেরকে ডাকতে পারেন সাক্ষীর কাঠগড়ায়।' - 'হ্যাঁ, পারমিশনের জন্যে একটা আবেদন জমা পড়েছে দেখছি বিবাদীপক্ষের কৌঁসিলের তরফ থেকে। বেশ, এগিয়ে চলুন মিঃ বারিক।' - 'মিঃ লি সুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি যে তিনি গত মাসের ১৬ তারিখে একশো আরশুলা বিক্রি করেন মিঃ জনসনকে। তিনি কী কারণে এটা কেনেন তা নিয়ে কিন্তু আলোকপাত করেননি বাদীপক্ষের উকিল, বরং পুরো ঘটনাটাই চেপে যাওয়া হয়।' - 'অবজেকশন ইয়োর অনার!' মিঃ প্যাটেল হঠাৎ চিৎকার করে ওঠেন। 'কী বলতে চাইছেন এই ডিটেকটিভ? আমার ক্লায়েন্ট সেদিন ওঁর স্ত্রীর অফিসে গিয়ে একশো আরশুলা ছেড়ে দিয়ে আসেন? নিজের স্ত্রীকে হঠাৎ কেউ মারতে যাবে কেন, আর যদি মারতেই হয় আরশুলা কি কোন স্বীকৃত খুনের অস্ত্র? কোন সাক্ষী বা প্রমাণ আছে?'

- 'এক এক করে জবাব দিই? না, মিঃ জনসন ব্রনক্স শপিং মলে যাননি। তিনি শুধু লি সুনের দোকান থেকে কেনা আরশুলার প্যাকেট থেকে স্টিকারের লেবেলটা ছাড়িয়ে খাবারের বদলে সেটা সন্তর্পণে ভরে দেন ক্লারার টিফিনবাক্সে। সেই লেবেল ডায়না উদ্ধার করে জনসনের বাসা থেকে, স্টিকারের আঠা আর ক্লারার ব্যাগের প্যাকেটে লেগে থাকা আঠা পুলিশের ফোরেনসিক ল্যাব মিলিয়ে দেখেছে, তাছাড়া স্টিকারের সাইজের সঙ্গে আঠার দাগের সাইজও মিলে গেছে। ক্লারা টিফিনটাইমে বক্স খুলতেই বাক্স থেকে তোড়ে বেরিয়ে আসে একশ' আরশুলা। ভয়ে ক্লারা সেই মুহূর্তে হার্ট-ফেল করেন।' 'দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর, হ্যাঁ, স্ত্রীকে মারার কারণ ছিল। সেটা মিঃ জনসনের বিজনেস ফাইলগুলো ঘাঁটলেই বোঝা যাবে হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাঙ্কে তাঁর দেনা কত আর এই মুহূর্তে কিভাবে তিনি তা শোধ করার হিসেব এঁটেছেন। হয়ত 'ইউ অর মি বেব' প্ল্যানটা নেবার সময় কথাটা তিনি ভাবেননি, কারণ ধারটা সদ্য করা। তবে কথাটা মাথায় আসতেই তিনি হত্যার ছক কষে নেন। 'তৃতীয় প্রশ্নের জবাবে বলি, আরশুলা প্রামাণ্য অস্ত্র হিসেবে গৃহীত হতে পারে কিনা তার সিদ্ধান্ত মহামান্য আদালত নেবেন। আমার দায়িত্ব আমার কোম্পানিকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা, খুনের কিনারা করা নয়। 'চতুর্থ প্রশ্ন। প্রমাণ! কিসের প্রমাণ আপনি চান?'

- 'আরশুলা যে মিঃ জনসনের আনা প্যাকেট থেকেই বেরিয়েছে, তার সাক্ষী বা প্রমাণ না পেলে পুরো গল্পের ভিতটাই তো নড়বড়ে হয়ে যায়।' - 'ইয়োর অনার, তাহলে আমার পরের সাক্ষীকে ডাকতেই হচ্ছে। মিঃ লিং!'- স্টোন হাঁক দেন। লিং এল, হাতে একটা ভাঙা ইন্টারন্যাল হার্ড ডিস্ক আর তার থেকে উদ্ধার করা তথ্য একটা পেন ড্রাইভে নিয়ে। সেসব স্টোনের হাতে দিয়ে সে কাঠগড়ায় এসে দাঁড়াল। - 'স্যার, আমাদের ইনসেক্টের ব্যবসা সম্পূর্ণ বৈধ, ফার্মি আর ট্রেড লাইসেন্স আছে। আর মিসেস জনসনের ভাঙা হার্ড-ডিস্ক থেকে রেকর্ডেড ভিডিওর শেষ অংশটা দেখুন প্লীজ!' মিঃ স্টোন যাবতীয় তথ্য জাজের হাতে দিলেন। তিনি পেশকারকে সেগুলো দিয়ে কোর্টের লার্জ স্ক্রীনে ভিডিও প্লে করতে বললেন। সমস্ত কোর্টরুম স্তম্ভিত হয়ে দেখল মিসেস জনসন অভ্যাসমত টিফিনবক্স খুললেন আর তার ভেতরের একটা খোলা প্যাকেট থেকে সঙ্গে সঙ্গে একঝাঁক আরশুলা বন্যার স্রোতের মত বেরিয়ে এল। ক্লারা আতঙ্কে উলটে পড়লেন আর তার পরেই সব ঝাপসা!


৭ই জুন, ২০২২। টাইমস স্কোয়ারের একটা পাঁচতারা রেস্তোরাঁয় বসে আইসবার্গ, রেনডিয়ার, ডায়না আর মিঃ স্টোন। লিংকেও ডাকা হয়েছে- না আরশুলা খাওয়াতে নয়, সম্ভবতঃ অক্সি অফিসে কম্প্যুটারগুলোর জন্যে অ্যানুয়াল মেনটেনান্স কনট্রাক্ট পেতে চলেছে সে, তবে আজ সে অক্সিডেন্টালের এম-ডির স্পেশ্যাল গেস্ট। হ্যাঁ, ডাঃ হেট্মেয়ারও আছেন, তিনিই আজকের লাঞ্চ পার্টির হোস্ট। বিজয়-সমারোহ উদযাপন করছেন তাঁরা, এম-ডির নিজের খরচে। - 'একটা গুড নিউজ আছে'- হেট্মেয়ার বললেন। - 'তোর প্রমোশন বা স্পেশ্যাল ইনক্রিমেন্ট নিশ্চয়', মৃদুস্বরে বলে কনুই দিয়ে আইসবার্গের কোমরে একটা মৃদু গুঁতো দিল রেনডিয়ার। - 'ইনক্রিমেন্ট তো হবেই সবার', শেষ কথাটা এমডির কানে গেছে। 'তবে এই বিউটি উইথ ব্রেইনটিকে আমার চাই- আমার অফিসের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট টিমের ম্যানেজার হিসেবে।' সবাই উল্লাসে হইহই করে উঠল। শুধু ডায়না একটু লজ্জা লজ্জা মুখ করে বলল- 'স্যার, আই অ্যাম রিয়েলি অনারড। তবে যদি কিছু মনে না করেন, আই এনজয় মাই প্রেজেন্ট জব দ্যান এনিথিং এলস। তাছাড়া আমি আর আইসবার্গ দুজনেই প্রচন্ড ফুডি......আর......আর...' - 'বলেই ফেল মাই ফেয়ার লেডি!' - 'আমার স্পেশ্যাল ক্ষিদেটা ওর চেয়ে ভাল কেউ বোঝেনা'- বলে মুখ নীচু করল ডায়না টেলার। - 'স্পেশ্যাল ক্ষিদে! কিসের?' - 'সেটা এমন জিনিষ যা একসাথে খাওয়া আর খাওয়ানো যায়' - এবার উত্তর এল আইসবার্গের থেকে। এক মুহূর্তের জন্যে থমকে গেলেন ডাঃ হেট্মেয়ার। সবাই চুপ। এ আবার কী বলছে এরা! হঠাৎ প্রচণ্ড অট্টহাস্যে ফেটে পড়লেন দি অক্সিডেন্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর্ণধার। হাসতেই থাকলেন...হাসতেই থাকলেন!

খবরের সূত্র-

https://indianexpress.com/article/trending/trending-globally/hundreds-of-cockroaches-released-in-new-york-court-7959638/#:~:text=In%20a%20bizarre%20incident%2C%20hundreds,for%20fumigation%2C%20Associated%20Press%20reported.

-

Sunday, June 12, 2022

মন-দর্পণ- গল্প

 মন-দর্পণ


ভবতোষবাবুর কী হয়েছে আজকাল, ছেলেদের কাউকে যেন ঠিক সহ্য করতে পারছেন না। ব্যবসায়ী বড় ছেলে মহীতোষ ওরফে মহী তাঁকে শ্রদ্ধাভক্তি ভালই করে, এমনকি তিনি অবসর নেওয়ার পরেও এখন বাড়তি বোঝা বলে মনে করে না, বউমাও যেটুকু মনে হয় আড়ালে-আবডালেও কোন কটাক্ষ করেন না। ছোট ছেলে আশুতোষ একটা ছোটখাটো চাকরি করে, বিয়ে করেনি এখনও। প্রেম-টেম করে, তিনি জেনেও তেমন পাত্তা দেন না। কিন্তু ছেলেদের বা বউমাকে অসহ্য মনে হবার কারণ কিছু বুঝতে পারছেন না তিনি। স্ত্রীবিয়োগ হবার পরও এমন অবস্থা ছিল না, এটা যেন শুরু হয়েছে মাসখানেক কি মাসদুই থেকে।

তবে কি তাঁর স্কিজোফ্রেনিয়া হল? উনি শুনেছেন যে এ রোগে নাকি দুনিয়ার সবাইকে শত্রু মনে হয়।  কাউকে মনের কথা খুলে বলতে না পারলে শান্তি হচ্ছে না। হ্যাঁ, একমাত্র নন্দদুলালই ভরসা। কই, নন্দকে দেখে তো তাঁর এমন বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় না! তাহলে নিশ্চয়ই এটা স্কিজোফ্রেনিয়া নয়। চিন্তিত মনে মোবাইল থেকে নন্দদুলালকে একটা ফোন করলেন ভবতোষ।  

নন্দ এল। চা টা খেল। বউমা চায়ের কাপ নিয়ে চলে গেলে ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিলেন ভবতোষ। তারপর দুই অন্তরঙ্গ বন্ধুর মধ্যে কী কথা হল তা আমি জানলেও বলব না। 

পরদিন সকালে মহীর অফিসে গিয়ে হাজির নন্দদুলালবাবু। মহীকে বললেন- 'কিরে মহী, তোকে তো আজকাল বাসায় পাওয়াই যায় না। শুনলাম ভবার সঙ্গেও নাকি ভালভাবে কথা বলিস না। হয়েছেটা কী? যদি তেমন কোন সমস্যা হয়ে থাকে আমাকে বল, আফটার অল আমি শুধু তোর বাবার বন্ধুই নয়, তোদের শুভাকাঙ্খীও তো!'

মহীতোষ প্রথমে বুঝতে পারে না কী বলবে। তারপর কী ভেবে নিজের সমস্যার কথা সে তার নন্দকাকাকে খুলেই বলে ফেলল। আসলে হয়েছে কী, বাচ্চাদের ভাল স্কুলে পড়ানো ছাড়াও ধার শোধ ইত্যাদিতে কিছু খরচা বেড়েছে। মহীর ব্যবসার সামান্য আয়ে আর কুলোচ্ছে না। বাবার জমানো টাকা তো ব্যাঙ্কে পচছে, কবে বুড়ো মরবে, তবে ধার শোধ হবে, খরচাপাতির কিছুটা সুরাহা হবে। এই কারণে তার স্ত্রীও খুব একটা খুশি নয় শ্বশুরের উপর। অবশ্য এ সব তাদের ভাবনাই শুধু, সত্যি সত্যি তো আর তারা বাবার মৃত্যু চায় না! 

- 'বুঝেছি', নন্দ বলেন। 'সত্যি বড় সমস্যা! তবে তোকে আর এ নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা। ভবা ওর জমানো টাকার জন্যে একটা স্কীম নিতে চলেছে। তাতে করে সে যতদিন বাঁচবে একটা পেনসন পেয়ে যাবে প্রতি মাসে।'
- 'আর মরে গেলে?'
- 'মরে গেলে অবশ্য তেমন কিছু পাওয়া যাবে না। তোরা দুই ভাই নমিনি, পাঁচ লাখ করে পাবি বড়জোর।'
- 'তবু মাসে কত আসবে হাতে?'
- 'তা ধর ষাট-সত্তর হাজার হবে। ভবা পিএফ, গ্র্যাচুইটি আর সারাজীবনের রোজগার থেকে মোটামুটি ভালই জমিয়েছিল। তখনই একটা পেনসন স্কিম নিতে পারত!'
- 'আপনি আমাকে বাঁচালেন নন্দকাকা।'
- 'আরে আমি আবার কী করলাম। এ সবই তো ভবার বুদ্ধি। বলছিল, ছেলেদুটোর যত কথা তো ছিল মায়ের সাথে। গৌরী যাবার পর থেকে ওরা আমাকে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না, কিন্তু আমি তো ওদের কষ্ট বুঝি।'
- 'না। কাকা, সে কথা বলিনি। আপনি আমাকে একটা মস্ত অপরাধবোধ থেকে রক্ষা করলেন। সত্যি, আমি এমন হতভাগা ছেলে যে নিজের আবার মৃত্যুকামনা করেছি!'

সেদিন সন্ধেয় নন্দবাবু আশুতোষকে ডাকলেন নিজের বাসায়। আশু এলে নন্দ তাকে শুধোলেন- 'হ্যাঁরে আশু, আমি ক'মাস ধরে লক্ষ্য করেছি তুই ভবার সাথে কথাই বলিস না। কী হয়েছে, খুলে বলবি?'
- 'না কাকা, তেমন কিছু নয়, ও আমাদের পার্সোন্যাল ব্যাপার।'
- 'আচ্ছা, তা হ্যাঁ বাবা আশুতোষ, আমি কি আপনাদের এতই পর হয়ে গেলাম!' বলে আশুর পিঠে একটা কিল মেরে বললেন, 'ওরে ব্যাটা জানিস, আমার আর ভবার বন্ধুত্ব তবে থেকে যখন আমরা জামাকাপড় অব্ধি পরতে শিখিনি।'
এবার একটু লজ্জা পেল আশু। বলে, 'কাকাবাবু, কিভাবে বলি, আমার আর শুভার সম্পর্কটা বাবা কিছুতেই মেনে নিচ্ছেন না- জাতের সমস্যা। আচ্ছা বলুন, এখন ওসব কেউ মানে? শুভা শিক্ষিত মেয়ে, কলেজে পড়ায়...... আমি তো ঘর ছেড়ে চলে গিয়ে বিয়ে করতাম, শুভাই চায় সবার সম্মতিতেই বিয়েটা হোক। তবে বাবা বেঁচে থাকতে সে আর হবে বলে মনে হচ্ছে না।'

- 'দেখ বাবা, অত চিন্তা করিস না। ভবা তো আমার বন্ধু, আমি জানি ওর মনের কথা। মুখপোড়াটা ভাঙবে তবু মচকাবে না। এই তো কালকেই বলছিল যে আশু ওর হবু বউয়ের বাড়ি থেকে প্রথামতো সম্বন্ধটা আনলে আমি কি না করতাম? কিন্তু একসময় সত্যিই বেঁকে বসেছিলাম, এখন আর সে কথা ছেলেকে বলি কি করে বল তো! তাই তো আমি তোর সাথে এলাম কথা কইতে।'
- 'সত্যি বলছেন কাকা?' আশু স্পষ্টই উল্লসিত। 'তাহলে আজই গিয়ে কথা বলি বাবার সাথে, জেনে নিই ব্যাপারটা? সত্যি আমি বাবার সম্বন্ধে কি না কি ভাবতাম!'
- 'না না, আজ নয়। দুটো দিন ওকে স্থির হতে সময় দে। বড় তেজিয়ান মানুষ কিনা! আমি বরং কাল জেনে আসি ও কিভাবে এই সম্বন্ধটাতে এগোতে চায়।' 

পরদিন সকাল সকাল নন্দদুলাল গিয়ে ধরেছে ভবতোষকে। ছেলেদের সঙ্গে যা কথা হয়েছে খুলে না বললেও কিছুটা রেখে-ঢেকে জানায় তাকে। 
- 'তা তুই এখন কী করতে বলিস আমাকে?' ভব শুধোয়।
- 'কী আবার? যা যা বলে এসেছি সেগুলো করে ফেল চটপট। দ্যাখ, আমি আমার কথাগুলো তোর কথা বলে চালিয়ে এলেও কাজগুলো তো করতে হবে তোকেই। কয়েকটা কথা ভেবে দ্যাখ। টাকা ব্যাঙ্কে ডিম পাড়ছে, আর ছেলেরা কষ্টেসৃষ্টে সংসার চালাচ্ছে। কবে তুই ম'লে কোটি টাকা পাবে সেই ভরসায় ছেলেরা, বউমারা, নাতি-নাতনিরা, এমনকি তুই নিজেও এখন কষ্ট পাবি কেন? আর শুভাকে মেনে নে। জাত মানুষকে খাওয়ায়-পরায় না, অসবর্ণ বিয়ে নিষিদ্ধ এই কথা হিন্দুশাস্ত্রে কোথাও লেখে না- তুই নিজেও জানিস সেটা।'
- 'আর সমাজ? সে তো শাস্ত্রের ঊর্ধ্বে।'
- 'বাজে কথা। তুই যাকে সমাজ বলছিস, সেটা তোর অহংবোধ। মেনে না নিলে তুই ছেলে হারাবি, সমাজ কি ফিরিয়ে দেবে ছেলে? তোর ছেলেরা বড় ভাল রে। আজ হয়ত তোকে শাপান্ত করছে মনে মনে, কিন্তু নিজের অহমের উপরে উঠে এসব মেনে নিলে এই ছেলে-বউই চিরকাল তোকে মাথায় করে রাখবে।'
- 'কিন্তু এরকম ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান কি সত্যি আছে না তুই ভাঁওতা দিচ্ছিস?'
- 'সেসব আমার উপর ছেড়ে দে। গোটা জীবন কি ব্যাঙ্কে বসে মাছি মেরেছি? তুই বরং আশুর সঙ্গে কথা বলে একবার মেয়েটিকে দেখে নে, ওর বাবা-মা শিগ্‌গিরই আসবে এখানে কথা বলতে। আমি পরের সপ্তাহে হরিদ্বার-দেরাদুন যাচ্ছি, তার আগেই সব সেরে নে।'


দু'সপ্তাহ পরের কথা, নন্দ ফিরেছে দেরাদুন থেকে, ওদের জন্যে দু'কিলো ভাল বাসমতী চাল আর ভবতোষের জন্যে একটা গাড়োয়ালি শাল নিয়ে। 'এসব আবার আনতে গেলি কেন, শুধু শুধু বাজে খরচা'- ভব একটু গাঁইগুঁই করে। 'আচ্ছা, আমি এতই বোকা, না? তুই শালা আমার হাত থেকে সহজে পার পাবি ভাবছিস! তোর ইনভেস্টমেন্টের দালালির একটা পার্সেন্টেজ তো পাচ্ছিই, তাছাড়া আশুর শ্বশুরবাড়ির থেকে নমস্কারিতে একটা খদ্দরের স্যুট তো বাগাতেই হবে। তা তোর কী খবর বল। সমস্যা মিটল?'

- 'উঃ কি নিশিন্তি রে! রবিবার আশুর শ্বশুর-শাশুড়ি এসেছিল সম্বন্ধ নিয়ে, আশু এসে বসল, দুই ছেলে বউমা মিলে গত গল্প হল। বিশ্বাস কর একবারও ওদের দেখে মনে হয়নি যে ওরা আমাকে মারতে চায়।'
- 'তাহলে স্কিজোফ্রিনিয়া উধাও, বিনা চিকিৎসাতেই?
- 'বিনা চিকিৎসাতে কে বলল? ডাক্তারই তো রোগ সারাল। ডাঃ নন্দদুলাল গুপ্ত, এম-এ, রিটায়ার্ড ব্যাঙ্ক অফিসার।'

পরদিন মহী আর আশু দু'জনেই এসেছে নন্দর বাসায়, শনিবার ওদের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজনের নেমন্তন্ন নিয়ে। 
- 'কি রে, বুড়োগুলোর মরে যাওয়া উচিত না বেঁচে থাকা?' নন্দ শুধোন দু'জনাকে।
- 'এসব কথা ভাবলেও এখন লজ্জা লাগে নন্দকাকা, কি করে ভেবেছি তখন? ভাগ্যিস বাবা জানেনা এসব।' বলে ওঠে দুজনেই।

'তোরা মন দর্পণ কহলায়ে...'  হঠাৎ বেসুরে গেয়ে ওঠেন নন্দদুলাল। তারপরেই হো হো করে হেসে ওঠেন। দু'ভাই অবাক হলে ফ্যালফেলিয়ে তাকিয়ে থাকে তাঁর দিকে।
       

 

        


Friday, June 3, 2022


हर एक बात पे कहते हो तुम की तू क्या है, तुम्ही कहो ये अंदाज़-ऐ-गुफ़्तगू क्या है। At everything I say you say that who you are? Tell me what style of conversation is this? প্রতি কথায় শোনাও আমায়, কে হে তুমি? কে হে তুমি? কথাবার্তার ভঙ্গিমা এ কেমনধারা, তুমিই আমায় বল!

न शोले में ये करिश्मा न बर्क़ में ये अदा,
कोई बताओ की वो शोख़-ऐ-तुन्दा खूं क्या है। Neither the flame has this miracle,nor the lightning this grace,
Someone tell me what angry behavior is this? অগ্নিশিখায় নেই সে শক্তি, বজ্রে নেইকো ক্ষমতা এমন, কেউ আমাকে বল দেখি, এমন ক্রোধের কারণখানা?

ये रश्क़ है की वो होता है हमसुखन तुमसे,
वरना खौफ़-ऐ-बदामोज़ी-ऐ-अदू क्या है।
My envy is that he converses with you,
Otherwise what fear of misleading is this? হ্যাঁ, আমি ঈর্ষা করি তার সঙ্গে তোমার ঘনিষ্ঠতায় তা নইলে ভুল বোঝার ভয়টা কোথায়, আর কিসে হয় শুনি?
चिपक रहा है बदन पर लहू से पैराहन,
हमारी जेब को अब हाज़त-ऐ-रफ़ू क्या है।
My cloths are sticking with my body with blood,
Now,what need to darn the collar is this? অঙ্গ জুড়ে রক্ত ঝরে, পরিধান যায় আঠার মত সেঁটে এই অবস্থায় ছেঁড়া জামা সেলাই করে কী লাভ বলো তাতে?
जला है जिस्म जहाँ दिल भी जल गया होगा,
कुरेदते हो जो अब राख़-ऐ-जुस्तुजू क्या है।
Heart must have been burned where the body has burned,
What desire of poking the ashes is this?
দেহ যখন পুড়েই গেছে হৃদয় কি আর রয়েছে অক্ষত? ছাই ঘেঁটে আর কী লাভ বল, কী হবে ছাই ঘেঁটে!

रगों में दौड़ते फिरने के हम नहीं कायल,
जब आँख से ही न टपके तो फ़िर लहू क्या है।
We don't believe in running through the veins,
When it does not drip from eyes than what blood is this? শিরায় যে বয় শোনিতধারা, তারে আমি রক্ত কই না মোটে, অশ্রুসম দু-চোখ বেয়ে নামে যদি, রক্ত তারেই বলে।


वो चीज़ जिसके लिए हमको हो बहिश्त अज़ीज़,
सिवा ऐ बादा-ऐ-गुलफ़ाम-ऐ-मुश्कबू क्या है।
The thing for which heaven is dear to us,
Except pink delicate musk scented wine nothing is this? স্বর্গ লোকে চায় কেন, এমন মূল্যবান যার তরে- সেই গোলাপি আতর-গন্ধ ভরা সুরাই যদি না রয় তাতে?
पियूँ शराब अगर ख़ुम भी देख लूँ दो चार,
यह शीशा-ओ-कदा-ओ-कूज़ा-ओ-सुबू क्या है।
I would drink wine if I see a few wine barrels,
What glass and pitcher and goblet is this? মদ্য যদি পানই করি, করব পিপেবোঝাই দু-চারখানা, সুরাপাত্র-ভৃঙ্গার কী, কাঁচের গেলাস কী ছার নিয়ে হাতে?
रही न ताक़त-ऐ-गुफ्तार और अगर हो भी,
तो किस उम्मीद पे कहिये की आरज़ू क्या है।
The strength to speak has gone and even if existed,
Than on what expectation would one say what desire is this? কথা বলার শক্তি উধাও আজি, আর যদি বা থাকে কী প্রত্যাশায় বলব তাহা আমার চাওয়া শুধুই যে দুরাশা!
बना है शाह का मुसाहिब फिर है इतराता,
वगरना शहर में 'ग़ालिब'की आबरू क्या है।
Having become the king's associate he is acting smart,
Otherwise 'Ghalib' in the city what dignity is this?
বাদশাহের নেকনজরে থাকি, তাই তো কিছু সাহস করে বলি, নয়ত বল এই শহরে গালিবের আর কী সম্মানই আছে!

आह को चाहिये इक उम्र असर होने तक
कौन जीता है तेरी ज़ुल्फ़ के सर होने तक

কিছু ইচ্ছে পূর্ণ হতে একটা জীবন বড়ই ছোট
তোমার চুলের দৈর্ঘ্য মাপতেই তো তা ফুরিয়ে যাবে!

दाम हर मौज में है हलका-ए-सदकामे-नहंग
देखें क्या गुज़रे है कतरे पे गुहर होने तक

একটা সাগর থেকে কয়েকটা দৈত্যাকার ঢেউ ওঠে
অথচ কত কঠিন একটা বিন্দু থেকে মুক্তো গড়ে ওঠা।

आशिकी सबर तलब और तमन्ना बेताब
दिल का क्या रंग करूं ख़ूने-जिगर होने तक



हमने माना कि तगाफुल न करोगे लेकिन
ख़ाक हो जाएंगे हम तुमको ख़बर होने तक

परतवे-खुर से है शबनम को फ़ना की तालीम
मैं भी हूं एक इनायत की नज़र होने तक

यक-नज़र बेश नहीं फुरसते-हसती गाफ़िल
गरमी-ए-बज़म है इक रकसे-शरर होने तक

ग़मे-हसती का 'असद' किस से हो जुज़ मरग इलाज
शमा हर रंग में जलती है सहर होने तक

Tuesday, May 24, 2022

 আজি হতে শতবর্ষ পরে- কে তুমি হরিলে আসি আমার নোবেলখানি লোভাতুর করে? শতবর্ষ পরে!

ছিলাম আপনমনে স্বর্গের নিকুঞ্জবনে
শ্মশ্রু উন্মীলিয়া,
হেনকালে বীণা করে নারদ উদ্বেগভরে
পশিল আসিয়া।
দেবর্ষি যে সাংবাদিক, ছোটাছুটি দিগ্বিদিক
ত্বরিত গমনে,
আনিয়াছে সমাচার নোবেল হল পাচার
কোথা কেবা জানে!

স্বর্গের দেবতা যত কেহ নয় অবগত
চোর কি অদ্ভুত!
মর্তে যত গোয়েন্দা ব্যোমকেশ বা ফেলুদা
সবে হেরে ভূত।
আমি মনে মনে ভাবি, উত্তরায়ণের চাবি
ছিল যার কাছে
সে ব্যাটা করেনি চুরি, এ আমি বিশ্বাস করি
তবে কোথা আছে?

যাক্‌, যা গেছে তা যাক, শুধু স্মৃতিটুকু থাক-
চরণ দু'খানা
পড়বে না কোন বাটে, ভুবনডাঙার মাঠে;
কী তবে ভাবনা?
আমি এই মণিহার ভাবিনি কভু আমার-
হৃদয়-অর্গল
খোল বঙ্গবাসী ওরে, এ অধমে দয়া করে
একেবারে ভোল।

Sunday, April 24, 2022

 ভোলাও পথ হে নাবিক।

জয়শংকর প্রসাদ


ভুলায়ে পথ সেথা নিয়ে চল মোরে
হে মোর নাবিক, ধীরে ধীরে।
সিন্ধু-লহরী যেথা একান্তে
অসীম গগন শ্রবণ-প্রান্তে,
অকপট প্রেমে আপনা প্রকাশে
ত্যজি অবনীর কোলাহলে রে!
যেথা সন্ধ্যার মত জীবনের কায়া
ঘেরি নীল অঞ্জনসম ছায়া
আপনা উজাড়ি দেয় ছড়াইয়া
 তারকা লক্ষ-সহস্রে।।

যে মহাগম্ভীর মধুর ছায়ায়
বিশ্ব চিত্রপট সচল মায়ায়,
এক হয়ে যায় স্রষ্টা-সৃষ্টি
দুখে-সুখে হয় সমান দৃষ্টি
শ্রম ও বিরাম মেলে যে ক্ষিতিজে,
পরমানন্দে চলিয়াছে সৃজে
উজারি নয়ন ঊষা নিজ তেজে
বিখরিছে জ্যোতিপুঞ্জেরে।। 
 

शक्ति और क्षमा / रामधारी सिंह "दिनकर"

क्षमा, दया, तप, त्याग, मनोबल
सबका लिया सहारा
पर नर व्याघ्र सुयोधन तुमसे
कहो, कहाँ, कब हारा?

क्षमाशील हो रिपु-समक्ष
तुम हुये विनत जितना ही
दुष्ट कौरवों ने तुमको
कायर समझा उतना ही।

अत्याचार सहन करने का
कुफल यही होता है
पौरुष का आतंक मनुज
कोमल होकर खोता है।

क्षमा शोभती उस भुजंग को जिसके पास गरल हो उसको क्या जो दंतहीन विषरहित, विनीत, सरल हो।
तीन दिवस तक पंथ मांगते रघुपति सिन्धु किनारे, बैठे पढ़ते रहे छन्द अनुनय के प्यारे-प्यारे।

उत्तर में जब एक नाद भी
उठा नहीं सागर से
उठी अधीर धधक पौरुष की
आग राम के शर से।

सिन्धु देह धर त्राहि-त्राहि
करता आ गिरा शरण में
चरण पूज दासता ग्रहण की
बँधा मूढ़ बन्धन में।

सच पूछो, तो शर में ही
बसती है दीप्ति विनय की
सन्धि-वचन संपूज्य उसी का
जिसमें शक्ति विजय की।

सहनशीलता, क्षमा, दया को
तभी पूजता जग है
बल का दर्प चमकता उसके
पीछे जब जगमग है।


"শক্তি ও ক্ষমা"

রামধারী সিংহ 'দিনকর'


ক্ষমা, দয়া, তপ, ত্যাগ, মনোবল সকলই করেছ প্রয়োগ তবু, মৃগরাজ সুযোধনে হে ধর্ম, হারাতে বল কি পেরেছ কভু?

রিপুদলে দিয়ে ক্ষমার ভিক্ষা যত অবনত তুমি হয়েছ, দুষ্ট কৌরব সমুখে সতত ভীরু অপবাদ শুধু সয়েছ।
অন্যায়-অত্যাচার সহিয়া
বল দেখি কিবা পেয়েছ ফল- পৌরুষ-মহিমা করেছ নষ্ট হয়ে অতিশয় মৃদু, কোমল!

ক্ষমা শোভে সদা সেই ভুজঙ্গে যার দশনেতে আছে গরল তার কিবা মান যে বিষ-বিহীন নত, নিস্তেজ কিংবা সরল?
তিন দিন ধরে রঘুপতি রাম
রয়েছেন বসে সিন্ধুতীরে 'পথ দাও মোরে'- বলে করজোড়ে অনুনয় করে সমুদ্রেরে

নিষ্ফল যবে সব প্রার্থনা, সমুদ্র-দেব রহে নিশ্চল অধীর রাঘব, বাণের অগ্রে জ্বলে পৌরুষ-দৃপ্ত অনল।

সাগর দেবতা করজোড়ে আসি পড়েন রামের চরণ ধরে 'ত্রাহি নাথ', কয়ে শরণ নিলেন, পাতেন পৃষ্ঠ বন্ধন তরে
বিনয়ের তেজে শরের দীপ্তি এ কথা রটিল তিন ভুবনে, সন্ধি? আত্মসমর্পণের নামান্তর যে শক্তিহীনের!

সহনশীলতা, ক্ষমা ও দয়ার তখনই জগতে কদর হয়, পশ্চাতে তার বলের দর্প দৃপ্ত যখন দীপ্তিময়!


Friday, April 22, 2022

 আয়না।


আয়না ছিল আমার প্রিয় বন্ধু।
সকালে উঠেই সে যেন ডাকতো, আয় না, আয়!
তাকাই তার দিকে,
নিজেকে নিজের মতই দেখে নিশ্চিন্ত হতাম।

ইদানীং ক'দিন ধরে আয়নার ভেতরের মানুষটা কেমন যেন বদলে যাচ্ছে।
ওটা যেন আমি নই, অন্য কেউ,
কখনও তিলক কাটা, কণ্ঠীধারী, কখনও বা গলায় রুদ্রাক্ষ।
সেদিন দেখি একটা ফেজ টুপি পরা দাড়িওলা মোল্লা-
আয়না, এ তোমার কেমন খেলা, বদলে গেল রীতিনীতি, কায়দাকানুন?
রোজ সকালে দেখি ধ্বংসের মিছিল, সততার পরাজয়
এই বিশ্ব যেন শিবহীন যজ্ঞের তাণ্ডবে মেতেছে-
সব বদলে হয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইউক্রেন।
বদলে যাচ্ছে আয়নার ভেতরের ওই মানুষটা,
তার এখন বিশাল নখদন্ত, কখনও হাতে ছুরি বা ত্রিশূল...
কখনও এলএমজি বা হ্যান্ড-গ্রেনেড!
ইয়া আল্লা, ও মাই গড রক্ষা কর, আর আমি আয়না দেখতে চাই না।
হে ঈশ্বর আমাকে একটু বালিয়াড়ি দাও, উটপাখি হই।

Thursday, April 14, 2022

 মধুর মধুর মম দীপক জ্বলো।

মহাদেবী বর্মা
(অনুলিখন- পল্লব)

মধুর মধুর মম দীপক জ্বলো।
যুগে যুগে প্রতিদিন প্রতিক্ষণ প্রতিপল
প্রিয়তমের পথে জ্বালাও আলো।

সুরভি ছড়াও তুমি ধূপের বেশে
মোমের মতন গলো মৃদু-সুবাসে,
ছড়াও জ্যোতি-সাগর অপরিসীম
তব জীবনের কণা পড়ুক গলে,
পুলকে ভরিয়া তনু প্রদীপ জ্বলো।

কোমল শীতল যত তারকাগুলি
তোমার শিখায় চায় উঠিতে জ্বলি,
এ বিশ্ব পতঙ্গ যেন আক্ষেপে
কহে হায় পোড়া হল না তব তাপে,
শিহরি তনু এ গাথা সবারে বল।

দূর নভে দেখ জ্বলে দীপ অগণন
অকারণে ক্ষয় করে নিজের জীবন
জলময় সাগরের বক্ষ জ্বলে
দামিনী আকাশ ঘেরে মেঘের দলে,
তেমনি মধুর হেসে দীপক জ্বলো।

গাছের হরিৎ শাখা কোমলসম
জ্বালারে করতে চায় হৃদয়ঙ্গম,
বসুধার জড় অন্তরের তলে
বন্দী না রেখে তাপ প্রবল বলে-
অগ্নি-মুক্ত করে শিখায় জ্বলো!

আমার নিঃশ্বাস চেয়ে দ্রুত হও
নিভতে দেবনা আমি নির্ভয় রও,
আপন আঁচলে ঘিরে রাখব তোমায়
মৃদু মৃদু কম্পনে দেদীপ্যমান
সহজ-সহজরূপে দীপক জ্বলো। 

হে গরিয়ান্‌! ত্যজ সীমার বন্ধন
অনাদি, কোরনা তুমি কালের গণন,
আমার নয়ন হ'তে কলস ভরে
ঢালব অশ্রু আমি তোমার পরে,
সে জলে সজল হয়ে প্রদীপ জ্বলো। 

তমসা অসীম, চিরে তার অন্তর
খেলব নতুন খেলা নিরন্তর-
আঁধারের অণু-অণু বিজলী ভরে
অমর চিত্র চল সৃজন করে,
সরল সরল মোর দীপক জ্বলো।

জ্বলতে জ্বলতে তুমি হবে যত ক্ষয়
ততই নিকট হবে সে ছলনাময়,
মধুর মিলনে নিজে বিলীন হয়ে
উজল-আলোকে তাঁর অঙ্গে রয়ে
মদির-মদির মম দীপক জ্বলো,
প্রিয়তমের পথে জ্বালাও আলো। 

 
 

 



Saturday, March 12, 2022

Sabari Chatterjee 
 ১) 
 আমার মায়ের সঙ্গে সর্বদাই ফিরত চারপাঁচটা রুমাল। প্রায় প্রতিটিরই চারটে কোনায় একটা করে গিঁট বাঁধা। কোনও জিনিস হারিয়ে গেলে- সে সাধারণ জিনিস হতে পারে বা জরুরী ডকুমেন্ট ধোপার হিসেবের খাতা বা ঠিকানা ফোন নাম্বার লেখা কোনো ডায়েরি- মাকে বললেই মা কি একটা বিড়বিড় করে মন্ত্র পড়ে একটা গিঁট লাগাতেন। হারানো জিনিসটি ফিরে পাবার পর আবার মন্ত্র পড়ে গিঁট খুলতেন। সব সময়ই যে হারানো জিনিস পাওয়া যেতো তা নয় আবার অনেক সময়ই পাবার পরেও গিঁট খুলতে ভুলে যেতেন ফলে গিঁট থেকেই যেত। মা কিন্তু খুব উদার মনের মানুষ ছিলেন। বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে কালীঘাটের মন্দির হওয়া সত্বেও কোনও দিন মন্দিরে দেবীদর্শনে যাননি। শাঁখা পলা তো কোন দিনই পরেন নি। বাবার একবার অসুখ করায় "ঝামেলা মিটিয়ে রাখি"- বলে হাতের লোহা খুলে ফেলেছিলেন। বাবা,বলতে নেই, তারপরে আরও তিরিশ বছর বেঁচে ছিলেন। কুটকুট করে বলে বিয়ের চার বছর পরেই সিঁদুর পরা ছেড়ে দিয়েছিলেন। যদিও বাড়িতে কোনও পুজো হলে (লক্ষ্মী সরস্বতী সত্যনারায়ণ বা ইতু পুজো) খুব যত্ন করে পুজোর কাজ করতেন। মা চলে যাবার পর মায়ের আলমারি পরিস্কার করতে গিয়ে অনেক গুলো কোনে কোনে বাঁধা রুমাল পেলুম। কী খুঁজে পাবার জন্য গিঁট বেঁধে ছিলেন মা? তাঁর পাঁচ বছর বয়সে ভগবানের কাছে চলে যাওয়া মা? সাড়ে পাঁচ বছরে মায়ের পিছু পিছু স্বর্গে চলে যাওয়া বাবা? চল্লিশ বছরে চলে যাওয়া বড় আদরের বড় ভালোবাসার 'বড়দা'? নাকি একান্ত প্রিয় আরও দুজন মানুষকে?? কি জানি!!! 76 

 Bulan Chakraborty
 ২)
 উক্রেইন আর রাশিয়ার যুদ্ধের কথা সবারই জানা, নতুন ক'রে বলার কিছু নেই। যুদ্ধটা একটু থেমেও এসেছিল। আবার যুদ্ধ শুরু হয়েছে, কারনটা জানা আছে তোমাদের? আমি বলছি.......। চারিদিকে নানা রকম গোলা গুলির আওয়াজে একটা অন্তঃসত্ত্বা মুরগি দিনের পর দিন পালাতে গিয়ে হঠাৎই একটা premature ডিম প্রসব করে ফেললো। সেটাও কোন ব্যপার না, কিন্তু ঝামেলা অন্য যায়গায়। ডিমটা ভূমিষ্ঠ হয় ঠিক দুই দেশের সীমান্ত রেখায়। রাশিয়া বলে এ ডিম আমার, উক্রেইন বলে এ ডিম আমার। আবার যুদ্ধ। আসলে ডিমটা মুরগির। নিরর্থক যুদ্ধ। 81- VI 

 Apurva Boral
 ৩) 
 ঈশ্বরের ইচ্ছা শক্তি
 ......................... প্রথম হার্ট অ্যাটাক ধরা পড়ায় অ্যাপোলো থেকে ফিরে এলো। চিকিৎসা শুরু হল। প্রিয়তমার জিদে অভিভাবকরা অনিচ্ছায় বিয়ে দিল। সুস্থ। সুন্দর সংসার করছে গত তিন বৎসর ধরে। এতদিনে জানতে পারলাম... প্রতিদিন ভোর বেলায় একঘন্টা প্রাণায়াম, একঘন্টা বাথ টবে (40ডিগ্রী temp.) ডুবে থাকা, খাবার কেবল ফল ও মূল।। আর ঈশ্বরের উপর ভরসা। 76 

 Prabir Mukherjee 
 ৪)
 আতর 
 দাম মিটিয়ে বের হবার মুখে দোকানদার আমাকে হাত বাড়াতে বললেন। আমিও হাতটা বাড়ালাম। উনি আমার হাতের তালুতে ঘষে দিলেন খুব ছোট্ট একটা শিশির রোলিং মুখ। বললেন দুই হাতের তালু ঘষে নাকের সামনে এনে ঘ্রাণ নিতে। আমিও তাই করলাম। নাকের সামনে এনে ঘ্রাণ নিতেই মন প্রাণ জুড়িয়ে গেল। …চোখ বন্ধ হয়ে এলো, দূরে কোথায় যেন নুপুরের ছম ছম…… 80


 Bulan Chakraborty 
 ৫)
 বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগঢ় এর মতো আরও বেশ কিছু জায়গায় রাস্তায় দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কারন সবারই জানা। বৈদ্যুতিক গাড়ি। রাঙ্গামাটি জল ট্যাংকি থেকে চ্যাটার্জিস্যার এর ঘর পর্যন্ত রাস্তাটা বেশ ঢালু। সেদিন আমাদের বন্ধু প্রদীপ মানে আমাদের সেই বাউন্ডুলে ধরনের "পদা" সাইকেলে করে ঢালুতে নেমেই চলেছে, রাস্তা কাটা গর্ত সামনে!!! ধূস...... ওরে পদা ব্রেক লাগা ব্রেক সামনে স্পিড ব্রেকার.......!!! দেখ কেমন পেরিয়ে এলাম দু দুটো বাধা।......... এবার ডিস্পেন্সারিটা পেরোলেই ডান দিকে ঘুরে বাঁ দিকে ঘুরলেই সোজা ল্যাংড়া পুল। ধড়াম........। একটা চার চাকা গাড়ি ধাক্কা মেরেছে পদার সাইকেলের পেছনের চাকায় আর ছিটকে পড়েছে পদা রাস্তার পাশে। মুহুর্তের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনায় দুজনেই অবাক। রাম সিংজি নুতন একটা বিদ্যুত চালিত গাড়ি কিনেছেন, নম্বর প্লেট টা সবুজ রঙের। চলতে গিয়ে গাড়িটা কোন রকম শব্দ করেনা, তাই পদা বুঝতেই পারেনি যে ওর সাইকেলের পিছনে একটা গাড়ি আসছে। আর রাম সিংজি ও বুঝতে পারেননি যে হঠাৎ ক'রে পদা ডান দিকে ঘুরে যাবে। পদাতো চটপট উঠে পড়েছে। রামসিংজি ও গাড়ি থামিয়ে পদা কেমন আছে দেখছেন। পদা তো RML Typer ফুটবল ক্লাবের খেলোয়াড়। আর রাম সিংজি সেই ক্লাবের সম্পাদক। পদার সাইকেলের পেছনের চাকা তো আর গোল নেই একটা ত্রিমাত্রিক বাংলার ৪ এর আকার ধারণ করেছে। ঠেলে ঠেলে ও নিয়ে যাওয়ার মতো নেই। ওদিকে গাড়িটার ডান দিকে বেশ কিছুটা ঘষে যাওয়ার দাগ। ঈস্.... নতুন গাড়ি। 74

 Apurva Boral 
 ৬)
 বৌ স্নান করতে বাথরুমে ঢুকেছে সেই সুযোগে বউয়ের ব্যাগ থেকে ৫০০ টাকা সরিয়ে ড্রয়ারে রাখলাম। দু-দিন হয়ে গেছে, বউ ধরতে পারেনি। মনের আনন্দে ড্রয়ার খুললাম, টাকা গায়েব! 76 


 Bulan Chakraborty 
 ৭) 
 সরস্বতি পুজো ও আমার কুল খাওয়া। 
 সরস্বতি পুজোর আগে কুল খেতে নেই। খেলে পরীক্ষায় শূন্য। কিন্তু শামলাপুরের জঙ্গলের কুল গাছগুলোতো জানে না কবে পুজো। আজ ইস্কুল পালিয়েছি। ইস্কুলের জামা পরে শামলাপুর। হাফ প্যান্টের কোমোরের বোতাম আগেই ছিঁড়েছি, তাই বাঁ হাতটা সর্বদা প্যান্ট ধরে রাখতে ব্যস্ত, নতুবা মাধ্যকর্ষন শক্তি প্যান্টেই প্রয়োগ হয়। এক লাঠিতে অনেক কুল পড়েছে। আমি দু পা পুরো ছড়িয়ে ঝালনুন কুল খাচ্ছি, নতুবা আমার প্যান্ট মাধ্যাকর্ষন শক্তিতে সোজা গোড়ালিতে ঠেকবে। কুল গুলো পেকে কি সুন্দর টক্ ঝাল মিষ্টি। আহ্.......। 80 


 Debashis Das Mahapatra 
 ৮) 
 ডিভোর্স 
 "আমি যাবোনা.... যাবোনা কিছুতেই, না না আমি কিছুতেই যাবোনা তোমার সাথে.." বলতে বলতে হাতটা অনিমেষের হাত থেকে জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। অনিমেষ নীলিমা কে কোলে তুলে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল, চোখেমুখে জলের ছিটে দিল। মুখটা মুছিয়ে দিল আলতো করে। বুকের ভেতরটা মুচড়ে উঠলো। কেন সে অনিন্দিতার কথাটা জানালো নীলিমাকে? কিন্তু না জানিয়েও তো উপায় নেই! ডিভোর্সটা ওর চাই... নীলিমার জ্ঞান ফিরেছে, বিছানায় উঠে বসেছে, গলায় ঘৃণা বিদ্বেষ মেশানো কণ্ঠে বললো "যাও তোমায় আমি মুক্তি দিলাম" বলে টেবিলের ওপর পড়ে থাকা ডিভোর্স পেপারটায় কাঁপা হাতে সই করে দিল। দোদোন দেরাদুনের আবাসিক স্কুল থেকে ছুটিতে বাড়ি এসেছে। মালা দেওয়া মাএর ছবিটার দিকে অপলক তাকিয়ে। দু চোখে অশ্রুবন্যা, নির্বাক..। 81- VI 


 ৯) দেবদর্শন 
 অনিমেষ ঘড়ি দেখলো, রাত দেড়টা, বাইরে অবিরাম বৃষ্টি, সদর দরজায় কেউ কড়া নেড়ে চলেছে। ত্রস্ত পায়ে এগিয়ে গেল সে দরজার দিকে। শুধোল...কে? উত্তর এলো "আজ্ঞে একটু দরজাটা খুলুন না, একটু আশ্রয় নি? বাইরে যা দুর্যোগ। দূর্বাও উঠে এসেছে, হাতের ইশারায় শুধোল, কে? অনিমেষ দরজা টা খুলে দিল। দেখলো বাইরে কেউ নেই! "আরে ভাই কে ডাকছিলেন, কোথায় গেলেন?" কোনো সাড়া নেই। সে ভয় পেয়ে দরজাটা দুম করে বন্ধ করে দিল, হাত পা কাঁপছে, দরজায় আগল দিতেই পারছেনা.. দূর্বা আতঙ্কে জিজ্ঞেস করছে "কী গো কী হলো? তুমি ওরম করছো কেন?" নিজেকে সামলে নিয়ে কোনোরকমে বললো "বাইরে কেউ কড়া নেড়ে বললো একটু আশ্রয় দেবার কথা, কিন্তু বাইরে তো কেউ নেই".... ঘরের ভেতর থেকে কেউ গমগমে শব্দে বলে উঠলো "আমি ভেতরেই আছি"... বিস্ফরিত চোখে তারা যা দেখল! অবিশ্বাস্য!!! জটাজুট ধারী পিঙ্গল বস্ত্র পরিহিত, এক হাতে ত্রিশুল অন্য হাতে ডম্বরু, ত্রিনয়ন অর্ধ নিমিলিত...... ব্যাস আর কিছু মনে নেই। 77 


 Anjonn Gangopadhyay 
 ১০)
 সে যেন আমার পাশে আজও বসে আছে। 
 বন্ধুদের হোয়াটসএপ গ্রুপে সবাইকে নিয়ম করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই। অভ্যেসবসত ১২ই অক্টোবরও সকালে ম্যাসেজ পাঠাই, শুভ জন্মদিন চম্পক। মাঝরাতে হোয়াটসএপ আসে। দেখি লেখা "থ্যাংক ইউ, ভাল থাকিস"। অচেনা নম্বর, কোন ডিপি নেই। বুকটা কেন জানিনা ধড়াস করে উঠল, প্রত্যুত্তরে লিখি, কে আপনি? ম্যাসেজ ডেলিভার হয়না। পরদিন নম্বরটায় ফোন করি, ওপার থেকে সাড়া আসে, দিস নম্বর ডাস নট এক্সিস্ট। হঠাৎ কেমন যেন খটকা লাগে, শেষ চারটে সংখ্যা, ০৩০৩৩। রাতে পুরোনো টেলিফোন ডাইরিটা বার করি, নম্বরটা চম্পকের। ও মারা যাওয়ার মাস দুয়েক পরে ফোনের কনটাক্ট থেকে ডিলিট করে দিয়েছিলাম। 83- IV 



 Anupam Chatterjee
 ১১)
 বম্বিং 
-------- স্ত্রী ও ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে একটা ভাড়া বাড়ীতে উঠেছে বিজয় ! হার্লে কনট্র্যক্ট লেবারের কাজে জয়েন করেছে সে ৷ আজ রাতে শুতে শুতে ওদের প্রায় 11টা বেজে গেল , টিভিতে " রুশ-ইউক্রেন " রোমাঞ্চকর ননস্টপ সিনেমা চলছে যে !! হঠাৎ ধড়াম করে বোমা ফাটার শব্দ !!! ধড়মড়িয়ে উঠলো বিজয় ! বেচারা বৌটা উঠতে গিয়ে..খাট থেকেই ধড়াম ! মেয়েটাও ঘাবড়ে গিয়ে শুরু করে দিয়েছে... ভ্যাঁএঁএঁএঁ ! তবে কি WW-3 শুরু হয়ে গেল ??? মিসাইল অ্যাটাক ??? লাইট জ্বালালেও প্রথমে কিছুই বুঝতে পারলোনা বিজয় ! একটু পরে বুঝলো ... ..সাইকেলের ড্যামেজ চাকাটা বার্স্ট করেছে !!! 84- III 

 ১২)
 আতঙ্ক 
*******
 কয়েক মাস খুবই অশান্তির মধ্যে আছে তপন! পুরোনোটা ছেড়ে নতুন কম্পানী জয়েন করেছে সে! মায়ের শরীরটাও ঠিক নেই , ডাক্তার সোনোগ্রাফী করতে বলেছেন , তাছাড়া নিজেরও প্রোস্টেটের সমস্যা, PSA কাউন্ট 6.1 !! তাই ডাক্তার তাকে বায়োপ্সী করতে বলেছেন! বায়োপ্সী....!! আতঙ্কে তপনের ওজন 10কেজি কমে গেছে! আজ বিকেলে দুটো রিপোর্টই পেয়ে যাবে ! প্রচন্ড আতঙ্কের মধ্যে সে প্রথমে নিজের রিপোর্টাই খুললো! না...কোন ম্যালিগনেন্সী নেই! মাথার উপর থেকে যেন একটা ভারী বোঝা নেমে গেল! এরপর মায়ের USG রিপোর্টে দেখলো পেটে অ্যাসাইটিস ফ্লুইড জমেছে!!! 79 


 Apurva Boral 
 ১৩) 
 চোর
 --------- 
সিন্দ্রির ঐ ছোট্ট এল টাইপ ঘরে অঞ্জলী...শাশুড়ি আর দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে দিব্যি সুখে দুঃখে দিন কাটছিল। স্বামী কাজের সূত্রে প্রায় বাইরে। তিন মাস পর 10দিনের ছুটিতে আসেন.. দেখেন... বিজয়ী হয়ে যান। অঞ্জলীর শাশুড়ি রাতে ঘুমাতে পারেনা। অঞ্জলীকে মাথা টিপে দিতে বললো। দরজা খোলা পেয়ে চোর মাথা টিপে দিয়ে সব নিয়ে উধাও। সকালে অঞ্জলী...শাশুড়িকে, শাশুড়ি.... অঞ্জলীকে দোষারোপ করার ফলে স্বামীর প্রাইভেট চাকরিটাও Sag হয়ে গেলো।। 76 

 ১৪) 
 "সাসপেন্স" 

বাসায় কেউ নেই। বৌ, ছেলেমেয়েরা বাপের বাড়ি মৌতর গেছে।একা একা লাগছে। মোবাইল ফোনে একটা ভুতের সিনেমা দেখলাম। এখন আর একা লাগছেনা। মনে হচ্ছে রান্নাঘরে কেউ একজন আছে। গা ছমছম করে উঠলো। বিছানা থেকে নামতেই.... নাহ্ , বাকিটা সাসপেন্স ই থাক।। 81- VI 

 ১৫) 
 ভালো লাগা আর রেগে যাওয়া হঠাৎ করে হয়। আমার কিন্তু ওদের শাশুড়িকে একটুও ভালো লাগেনি। আমার মতে শাশুড়িরা লুকিয়ে আছে সব বউদের অন্তরে.. নাহলে ৮ বছর প্রেম করে বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি তিল তিল করে ওদের দুজনের মাঝে ভাঙ্গন ধরিয়ে এখন বলে.... ""তোমরা মিলে মিশে থাকো না কেনো?"" 83- IV 

 ১৬) 
 "জামাই" 
 সুন্দরী শহরে নিজেদের দুটি বাড়ি রেখেও অপু আজ শ্বশুর বাড়ি থাকে কারণ, স্ত্রী সোনালী একসময়তো নিজের "পাপা কি পরি" ছিলো । আর অপু.....? সেও তো রাজ্য হারা রাজপুত্র...! অনেকেরই মতে অপু কোনও রজ্যহারা রাজপুত্র তাজপূত্র লয়। বরং অন্ত্মসম্মানবোধহীন, মেরুদণ্ডহীন পুরুষ মাত্র... তাতে অপুর কিছু যায় আসে না।। গুপ্তধনতো আছে সোনালীর কাছে আর তার স্বাদ নিতে অপু ঘুরছে স্ত্রী সোনালীর পিছে... পিছে, চায় না হাত ছাড়া করতে।। 82- V

 ১৭) 
 আশংকা
 -------------- 
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সবাইকে জানাই আমার শুভেচ্ছা। ছোটভাই সপরিবারে ইংল্যান্ডে। আশংকায় থাকি ভাতিজা বাংলা শিখবে কি না! সেদিন ফোনে ভাতিজার কণ্ঠে,"" জ্যেঠু পণাম.... অমি হন্দল (হন্দলা ) বলছি বাবা বাথরুমে সিন্যাছে"" ..শুনে আবেগে আপ্লূত! জয় হোক আমার মাতৃ ভাষা 78 


 Purnima Chakraborty 
 ১৮) 
 অবিশ্বাস্য 
 পলাশ স্টেশনে বসে অপেক্ষায় আছে লোকাল ট্রেনের।বেলুড় যাবে ।এমন সময় তার বন্ধু অমল পিঠ চাপড়ে বলল--" তোকে কতদিন পর দেখলাম বলত? চল একটু গল্প করা যাক্ ।" পলাশ--"না রে ট্রেনে মিস করব।" অমল--" পরের ট্রেনে যাস।অনেক দিন পর দেখা হল, না বলিস না।" অনেক কথা হলো দুজনের ।পলাশের ফিরতে রাত হল।বাড়ি ফিরতেই জানতে পারলো অমল মারা গেছে কাল দিল্লিতে রোড অ্যাক্সিডেন্টে।" পলাশ অবাক হল।মনে মনে ভাবল --" একটু আগে যার সাথে সময় কাটালাম সে তবে কে ছিল?" 85- II 

 ১৯) 
 মাণিক 
 সাতসকালে বস্তির লোকেদের ঘুম ভাঙ্গলো কুকুরের ঘেউঘেউ চিৎকারে আর শিশুর কান্নায়। সবাই গিয়ে দেখে একটা শিশু কাপড়ে মোড়া, কাঁদছে । শিশুটিকে ঘরে এনে দুধ খাওয়াতে ঘুমিয়ে পড়ল ।বস্তিতেই আশ্রয় পেল ।তার নাম রাখল মাণিক ।দেখতে দেখতে বড় হল ।অসৎ সঙ্গে মিশে একটি পকেটমার তৈরি হল।একদিন এক পুলিশ অফিসার সিদ্ধার্থ মন্ডলের পকেট মারতে গিয়ে ধরা পড়ল।অফিসার তাকে নিয়ে গেলেন নিজের বাসায়।স্কুলে ভর্তি করলেন । সে বড় হতে লাগল ।আজ সেও একজন পুলিশ অফিসার মাণিক মন্ডল।তার জীবনটাই পাল্টে গেল। 84- III


 Tapas Chakraborty 
 ২০) 
 ধার
 আজ সুব্রতর ফোনটা পেয়ে মনটা খুশিতে ভরে উঠলো। ও প্রমোশন পেয়ে কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছে। ২০২০ তে করোনা কালে ওর চাকরিটা চলে যায়। প্রায় ৯ টা মাস বসে থাকতে হয়। অনেকগুলো দিনই প্রায় না খেয়ে কাটাতে হয়। খুব ভেঙে পড়ে ও। হঠাৎ একদিন আমার সাথে দেখা হয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে আসি ওকে। খাবার খেতে খেতে অনেক গল্প হয়। তারপর ওকে আর একলা ছাড়িনি। ইউটিউব এ অনেক মোটিভেশনাল ভিডিও দেখাতে থাকি ওকে। ওর প্রোডাক্ট লাইন এর ও অনেক ভিডিও দেখতে থাকে। মনের জোর অনেক টাই ফিরে পায়। আস্তে আস্তে চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়া শুরু করে। প্রথমে একটা ছোটো কোম্পানি তে তার পর আস্তে আস্তে বড় কোম্পানিতে চান্স পায়। ২০২২ এর ফেব্রুয়ারি তে প্রমোশন পেয়ে কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে যায়। কারুর অসময় এ টাকা পয়সা নয় একটু মনের জোর যদি ধার দেওয়া যায় তাহলেও কারুর জীবন বদলে দেওয়া যেতে পারে। 81- VI 


 Abhijit Sen 
 ২১)
 সুপর্না ভিনিৎসিয়া(ইউক্রেন) মেডিক্যালে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। বাবা বোকারো ইস্পাতের কোক ওভেনে কর্মী। ছোট থেকে জিপ্রোকক্স (ইউক্রেন)নাম শুনেছে জ্ঞান বিজ্ঞানের দেশ। একমাস আগেও রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধটা হাসি ঠাট্টার বিষয় ছিল। হঠাৎ এক রাতে বোমার শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো। পরদিনই হুলুস্থুল কান্ড। ইউক্রেন ছেড়ে দেশে ফিরতে হবে। পরদিনই ব্যাগপত্র নিয়ে জনাপঞ্চাশ ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রী বেরিয়ে পড়ল ভারতের উদ্দেশ্যে। কলেজের বাস ছেড়ে দিল রোমানিয়া বর্ডারে। আরো ১০ কিলোমিটার হেঁটে পার হতে হবে বর্ডার। কাঁধে বোঁচকা নিয়ে এগিয়ে গেল তারা। সঙ্গে বিস্কুট আর জল। হঠাৎ পথিমধ্যে ঘিরে ধরলো রুশ সেনা। মেয়েদের ছেড়ে দিল। কিন্তু ছেলেদের আটকে দিল। ছেলেরা হৈচৈ করতেই রাইফেলের বাট দিয়ে সজোরে মারধর শুরু। যথেষ্ট চোটপেয়ে ছেলেরা হাতে পায়ে ধরে আই কার্ড দেখিয়ে ছাড়া পেল। কিছু ইউক্রেন বাসী তারা চুপিচুপি দেশ ছেড়ে পালাচ্ছিল, ধরা পড়ে গেল। রুশ সেনা সবার চোখের সামনে তাদের দড়িতে বেঁধে মাটিতে শুইয়ে তাদের ওপর মিলিটারি ট্রাক চালিয়ে দিল। রক্তগঙ্গা বয়ে গেল। চোখের সামনে এক নির্মম হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হল সুপর্না ও সহপাঠীরা। পরে কোনরকমে দেশে মা-বাবার কাছে ফিরে আজও তার ঘুম আসেনা! সভ্য দেশের মানুষ এত নৃশংস হয়!!! (সত্য ঘটনা অবলম্বনে) 81- VI 


 Kajal Chatterjee 
 ২২)
 হাতের লেখা 
 লেখিকা-কাজল চ্যাটার্জী 
 মীনা আর শ্যামলী নবম শ্রেণীর ছাত্রী ।বাংলার ক্লাস টেস্ট এ যতই ভাল লিখুক শ্যামলী মীনার চেয়ে কম নম্বর পায় , কারণ টা বুঝতে পারে না ।একদিন বলে - আমি মীনার চেয়ে খারাপ লিখি না,তবে কম নম্বর পাই কেন? দিদিমণি ছাত্রীর মুখপানে চেয়ে বললেন- ওর হাতের লেখা ভাল তাই বেশী নম্বর পায় । শ্যামলী হাতের লেখা নিয়ে যত্নশীল হয়ে পড়ল। কিছুদিন পর শ্যামলীর হাতের লেখা দেখে দিদিমণি অবাক হযে বললেন- আমার বিশ্বাস,তুমি স্কুল ফাইনাল এ খুব ভাল ভাবে উত্তীর্ণ হবে । 79 


 Sabari Chatterjee 
 ২৩) 
 ভাইঝির বিয়েতে পৌঁছে রিকশা থেকে নামতেই শাড়ির অনেকটা ছিঁড়ে গেল বুঝলেন সবিতা। বিয়ের সময়কার শাড়ি। বাবার অবস্থা ভালো ছিলো না। অতি জ্যালজেলে বেনারসী। স্বামীর অবস্থাও ভালো ছিলো না। ছেলেমেয়ে ছোট থাকতে থাকতেই মারা গেলেন। অনেকগুলো টিউশন করে হিসেব করে সংসার চালিয়ে ছেলেমেয়েকে মানুষ করে তুললেন। আজ তারা দাঁড়িয়ে গিয়েছে। প্রয়োজন মত সব কিছুরই ব্যবস্থা করে। কিন্তু খুব দামী শাড়ির কথা ওঁর মনে হয়নি। ওদেরও খেয়াল হয়নি। শাড়ীটা কোনক্রমে জড়িয়ে বিয়েবাড়ি পৌঁছলেন। দাদার বিরাট ব্যবসা। কিন্তু সবিতার সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ রাখেন নি। সবিতাও চেষ্টা করে নি। বিয়ে বাড়ি ভর্তি চেনা শোনা আত্মীয়। কিন্তু কয়েকজন ছাড়া কেউই খুব একটা এগিয়ে এলো না। গরীব আত্মীয়কে সবাই এড়িয়ে চলে। এমনকি যারা চা কফি স্টার্টার দিচ্ছিল তারাও দু'একবার মাত্র ওঁকে অফার করল। ওরা জানে কাকে পাত্তা দিতে হয় না। একাই বসে আছেন। বিয়ে হচ্ছে। যখন সিঁদুর দানের সময় হল তখন ব্যাগ থেকে একটা হীরের আংটি বের করে বরের হাতে দিয়ে বললেন "আমার মামার বাড়ি ছিলো জমিদার বংশ। আমার মা'র বড় ইচ্ছে ছিলো এই আংটি দিয়ে যেন তাঁর নাতনি কে সিঁদুর পরানো হয়।" বলে বরের হাতে আংটি টা দিলেন। বরের হাতে পঞ্চাশ লাখ টাকার হীরের আংটি ঝিকমিক করতে লাগলো। 81 - VI 


 Anupam Chatterjee 
 ২৪) 
 স্ট্যান্ড !! কেউ খুব জোরে চিৎকার করে উঠলো রাস্তার পাস থেকে ! কিন্তু সদ্য কেনা নতুন স্পোর্টস বাইকটা এতটাই স্পীডে চালাচ্ছিলো রাহুল যে ঐ কথাটা তার কানেই গেলনা ! কিছুটা দুরে আরও একজন সাবধান করলো "স্ট্যান্ড উঠা লিজিয়ে " ! এবারেও কথাটা কান অবদি পৌছলোনা রাহুলের ! রাহুলের নজর স্পীডোমিটারে ! স্পীড 70 Kmh ! সামনের মোড়ে বাঁদিকে ঘুরতে হবে , তাই রাহুল একটু গতি কমিয়ে বাঁদিকে হ্যান্ডেলটা ঘোরালো ! ব্যাস !! রাস্তায় প্রচন্ড ভাবে নেমে থাকা সাইড স্যান্ডটা ধাক্কা খেল... ! এর পরের দৃশ্যটা অনুমান করার দায়িত্বটা ছেড়ে দিচ্ছি পাঠকের ওপরে !! 83- IV 


 Purnima Chakraborty 
 ২৫) 
 সরস্বতী পূজো । পূর্ণিমা চক্রবর্তী 

 প্রচলিত আছে সরস্বতী পূজোর দিন পড়তে নেই,সব বইখাতা ঠাকুরের কাছে রাখতে হয়।আমার পরশু অঙ্ক পরীক্ষা, ম্যাট্রিক ফাইনাল, না পড়লে পরীক্ষা দেব কিকরে? রাতে বই খুলে বসলাম ,সেই দেখে বোন বলল--"মা সরস্বতী রাগ করবেন, তুই নির্ঘাত ফেল করবি।" মনে মনে ভয় পেলাম, কিন্তু বসে যখন পড়েছি তখন যা হবার হবে । সে সময় নিউজ পেপার এ রেজাল্ট বেরোতো ।দেখলাম ফার্স্ট ডিভিশন এ পাশ করেছি।আমার বোন বলল--" এবার থেকে সেদিন আমি ও পড়ব।" 87-I 



 প্রথম- Purnima Chakraborty সরস্বতী পুজো ৮৭/১০০ দ্বিতীয়- Purnima Chakraborty অবিশ্বাস্য ৮৫/১০০ তৃতীয়- Anupam Chatterjee বম্বিং ৮৪/১০০ Purnima Chakraborty মাণিক চতুর্থ- Anjonn Gangopadhyay সে যেন আমার পাশে আজও বসে আছে ৮৩/১০০ Apurva Boral ভাল লাগা Anupam Chatterjee স্ট্যান্ড পঞ্চম- Apurva Boral জামাই ৮২/১০০ Bulan Chakraborty নিরর্থক যুদ্ধ। বিশেষ- Debashis Das Mahapatra ডিভোর্স ৮১/১০০ Apurva Boral সাসপেন্স Tapas Chakraborty ধার Abhijit Sen যুদ্ধের গল্প Sabari Chatterjee হীরের আংটি