Wednesday, November 6, 2019

দাদুরি-কাব্য।। ছড়া (লিমেরিক)

দাদুরি-কাব্য।।
(ছড়া- লিমেরিক)

(১)
দাদুরি-কাব্য

ঝমঝমে বৃষ্টিতে কত আর ভাববো,
ভেবে ভেবে লিখে ফেলি দাদুরির কাব্য।
অচল আধুলি-সিকে
চলে যায় লিমেরিকে,
ব্যাঙ বলে বৃষ্টিতে জলে কি গো নাবব?

(২)
ব্যাঙের বিয়ে

ব্যাঙেদের সাতপাকে মিশেছিল জল তাই
বিয়েটা হলনা পুরো ভ্যাস্তাল সবটাই।
সিঁদুরে বর্ষা ধারা
ব্যাঙানী ত কেঁদে সারা,
ভেকেদের কলরবে শুনল না কেউ ভাই।

(৩)
ব্যাঙের আধুলি

একটি আধুলি-সিকিতে ব্যাঙের যত বিলাস-ব্যসন
তাই দিয়ে তাঁর চলে পরিবার, কেনেন আটা-বেসন
ব্যাঙেদের নেই ব্যাঙ্ক,
আছে শুধু জল-ট্যাঙ্ক,
ব্যাঙ ম'লো অনাহারে যবে হ'ল ডিমনিটাইজেশন!

(৪)
বিগ-ব্যাং

ব্যাঙেদের রাজা চলছিল তার বাড়িয়ে ঠ্যাং
এমন সময় পণ্ডিত এসে মারল ল্যাং।
রেগে মেগে বলে ব্যাঙ
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ,
থাকতিস কোথা না হলে সেদিন বিগ-ব্যাং?


(৫)
ব্যাঙের রাজা

রাজা চাই, চাই রাজা, কাঁদুনি জুড়ল যত ব্যাঙ,
বিধাতা পাঠান বক, চেয়ে থাকে তুলে এক ঠ্যাং
সারাদিন চেঁচিয়ে কাবার
ব্যাঙ হয় রাজার খাবার,
চাইনে এমন রাজা, কেঁদে বলে ঘ্যাংগোর-ঘ্যাং। (সুকুমারীয় প্রেরণায়)



(৬)
ব্যাঙের সর্দি

বৃষ্টি জলে ভিজে ভিজে ব্যাঙের হল সর্দি
ব্যাঙানি তাই ছাতা মাথায় ডাকতে গেল বদ্যি।
বদ্যি বলে আচ্ছা বোকা-
তুমি তো নও কচি খোকা,
উঠবে নাকো 
পুকুর থেকে যাও ফিরে যাও জলদি! 


(৭)
ব্যাঙের ছাতা

সর্বনেশে জন্তু সেটা মানুষ নাকি নাম
 কিনতে এল 
ব্যাঙের ছাতা দিয়ে দেদার দাম
বলল তোরা ভীষণ যা তা
খাসনে কেন ব্যাঙের ছাতা,
জানিস এতে প্রোটিন আছে, তাই নিয়ে চললাম!


(৮)
ঝিং-ঝ্যাং

ব্যাঙ ওরে ব্যাঙ, ছড়িয়ে চারটে ঠ্যাঙ
ডাকিস শুধুই গ্যাঙোর গ্যাঙোর গ্যাঙ
থাকতিস যদি চীনে
ঠিক তারা নিত কিনে
কেটেকুটে তোরে বানাত কোর্মা, নাম দিত ঝিং-ঝ্যাং!


(৯)
মুনলাইট সোনাটা

কোলা ব্যাঙ গান গায় সোনা ব্যাঙ কিছুই পারে না
তাই দেখে ওস্তাদ বলে শোন ওরে কোলা সোনা,
সোনাটা নেহাৎই অবলা,
ও বরং বাজাক তবলা,
কোলা তুই পিয়ানোতে 'মুনলাইট সোনাটা' শোনা! 



(১০)
ফ্রগ বনাম দাদুরি

ফ্রগ মানে ব্যাঙ, দাদুরি মানেও ব্যাঙ
বর্ষা এলেই দাদুরি গাইত, ফ্রগটা ওনলি স্যাং,
দাদুরি জানত রাগ ও রাগিনী
ফ্রগের চয়েস ছিল পলিফোনি,
বাখ-বিঠোফেন শুনতে গেলেই, মোবাইল হত হ্যাং!


(১১)
ব্যাঙা আর ব্যাঙাচি

অন্নদা-স্যার শুনতে পেলেন, ব্যাঙ রেগে কয় 'ব্যাঙাচ্চি-
বড্ড তোদের বাড় বেড়েছে, দাঁড়া তোদের ঠ্যাঙাচ্ছি!'
ব্যাঙাচ্চিরা অমনি ভয়ে কাঁটা,
পাণ্ডা যে তার মস্ত বুকের পাটা!
সে তবে কয় লেজটা নেড়ে, 'আমরা কি স্যার ভ্যাঙাচ্ছি?'

(উৎস - অন্নদাশঙ্কর রায়ের ছড়া- "ব্যাঙ রেগে কয় ব্যাঙাচ্ছি")


(১২)
পকেটমার ব্যাঙ
 
কোলা ব্যাঙের আধুলিখানা সাপটা নিল কেড়ে
পয়সা পেয়ে মস্ত খুশি, ব্যাঙকে দিল ছেড়ে।
সাপটা এসে অফিস থেকে
খোলসটাকে টাঙিয়ে রাখে-
ব্যাঙটা ক'রে পকেটমারি আধুলি দেয় ঝেড়ে!


(১৩)
ব্যাঙ বনাম হাঁস

জলের উপর দুইটি প্রাণী, দাদুরি আর হাঁস
হাঁসটা থাকে স্থলে, ব্যাঙের জলের মাঝে বাস।
ব্যাঙ বললে, হাঁস, এটা মান-
মোরা দু'জনাই অ্যাম্ফিবিয়ান,
হাঁস বলে আমি একটু বেশি, ছুঁতে পারি আকাশ! 


(১৪)
দাদু ও দাদুরি

দাদু বলে 'আমি দাদু, তুই হলি দাদুরি
আয় করি কোলাকুলি ক্যায়সি হ্যায় এ দূরী',
ব্যাঙ বলে ছুঁড়ে লেগ
'চড়িয়েছ কত পেগ?
ছুটে যাবে সব নেশা খেলে হিং-কচুরি!'


(১৫)
বরসাত

বহুকাল আগে সিনেমা হলেতে চলছিল 'বরসাত'
রাজ কাপুরের ছাতা উড়ে যায়, নার্গিস হাতে হাত,
হঠাৎ শব্দ গ্যাঙর-গ্যাঙর-গ্যাঙ,
হলে ফুটো মেঝে উঠে আসে যত ব্যাঙ,
বলে- এ ছবিটা ছ-বার দেখেছি, চালা 'য়াদোঁ কী বারাত'!

(১৬)
কূপমণ্ডূক

কুয়োতে ছিল যে ব্যাঙ জাতে কূপমণ্ডূক
বাঘ ভেবে শিকারিটা নিয়ে আসে বন্দুক,
অবাক, তাকিয়ে দেখে- একি!
বাইশটা ব্যাঙ খেলে হকি,
বলে, এটা হকি নয়, যষ্টি ও কন্দুক।

(১৭)
খাই খাই

ব্যাঙ খায় পতঙ্গ, সাপ খায় ব্যাঙকে,
ময়ূর সাপকে খায়, বাঘেতে ময়ূরকে
মানুষই এমন প্রাণী
শুধু টাকা খায় জানি,
সুদ খায়, ঘুস খায়, রাখে টাকা ব্যাংকে!

(১৮)
পারম্পর্য

ব্যাঙ ডাকলে বৃষ্টি হয়, না বৃষ্টি হলে ব্যাঙ ডাকে?
এ প্রশ্নটা সিধুজ্যাঠার সামনে ফেলুদাই রাখে।
সিধুজ্যাঠার প্রশ্ন আদিম,
মুরগি আগে, না আগে ডিম?
জানতে এসব ব্যাঙের কাছেই যাও, গিয়ে শুধাও তাকে!

(১৯)
গ্যাঙর গ্যাং ছড়িয়ে ঠ্যাং ডাকছে ব্যাঙ, বিশাল গ্যাং
ফক্কা ট্যাঁক, নাচছে দ্যাখ  চিনের চ্যাং, ড্যাড্যাং ড্যাং 
 



 

No comments:

Post a Comment