মহিমা ।।
ভৈরব ঘোষালের বিধবা রাজু বুড়ি মারা গেছেন। একমাত্র পুত্রসন্তান বলরাম ঘোষাল শ্রাদ্ধ করছেন। বলাইবাবু একটু হিসেবি বটেন, তবে তাঁর মিষ্টি কথার গুনে কৃপণ বলে বদনাম রটেনি কখনো। তাই দানসাগর না করলেও বেশ ষোড়শোপচারে মায়ের শ্রাদ্ধ করার মনস্থ করলেন তিনি। তাঁর প্রাণের বন্ধু ভবতোষ শ্রাদ্ধে থাকতে না পারায় তাঁর আক্ষেপ জীবনে যাবে না এমনটি শোনা গেল। তাই পরের সপ্তাহে কাজে যোগদান করে বন্ধুকে সেই গল্প সাড়ম্বরে শোনাতে শুরু করলেন।
- তারপরে বুঝলি ভবা, ঠিক করলাম মায়ের কাজে ত্রুটি রাখব না কোনোকিছুর। সাত গাঁয়ের না হলেও গ্রামের সবাইকে নাপিত পাঠিয়ে নেমন্তন্ন করলাম। মোটা মোটা লুচি, বুটের (ছোলার) ডাল, ডিংলার (কুমড়োর) ছক্কা, বঁদে আর মিষ্টি দই। সব তো ঠিকই ছিল, তা দইয়ের আর অর্ডার দেওয়া হয়নি, একদম ভুলে মেরে দিয়েছিলাম। শেষে যখন মনে পড়ল দোকানে মাত্তর একভাঁড়ই পড়ে ছিল।
- কি কাণ্ড! সারা গাঁয়ের লোক আর একভাঁড় মোটে দই! কিভাবে সামাল দিলি?
- তবে আর বলছি কি? আমি ভাঁড়টা নিয়ে সোজা আলমারিতে তুলে তালা দিয়ে দিলাম। বললাম, মাগো তোমার ছেলের সম্মানরক্ষার ভার তোমার হাতেই গো মা, দেখো যেন বদনাম না হয়!
- তারপর কি হল?
- আর কি বলব ভবা, সবই মায়ের মহিমে রে, ভাবলেই এখনও গায়ে কাঁটা দেয়। পেরায় হাজার খানেক লোক খেয়ে চলে গেল, বিশ্বাস করবি না, ওই একভাঁড় দই যেমনকার তেমনি রয়ে গেল!
- কি কাণ্ড! সারা গাঁয়ের লোক আর একভাঁড় মোটে দই! কিভাবে সামাল দিলি?
- তবে আর বলছি কি? আমি ভাঁড়টা নিয়ে সোজা আলমারিতে তুলে তালা দিয়ে দিলাম। বললাম, মাগো তোমার ছেলের সম্মানরক্ষার ভার তোমার হাতেই গো মা, দেখো যেন বদনাম না হয়!
- তারপর কি হল?
- আর কি বলব ভবা, সবই মায়ের মহিমে রে, ভাবলেই এখনও গায়ে কাঁটা দেয়। পেরায় হাজার খানেক লোক খেয়ে চলে গেল, বিশ্বাস করবি না, ওই একভাঁড় দই যেমনকার তেমনি রয়ে গেল!
পাশ দিয়ে অবিনাশ ঘোষাল যাচ্ছিল, বলরামেরই ভায়াদ, অতএব চিরশত্রু। সে খানিকটা শুনে দাঁড়িয়ে পড়ে ফুট কেটে গেল - তা তোমার যেমন কান্ড বলাইদা। লোককে না খাওয়ালে সে দই খরচ হবে কোত্থেকে শুনি?
- তুই চুপ কর অবু। তোকে বলেছি কিছু?
- তুই চুপ কর অবু। তোকে বলেছি কিছু?
No comments:
Post a Comment