Wednesday, January 21, 2015

বিবিধ আলোচনা- ১- ৬

(১)

নীল-সাদাতে সোনার বাংলা করল আবার যে ছারখার
মদ না খেয়েই মদনা গেল হাসপাতালেই মাস কাবার,
নীল মানে যে শূন্য, দিদির মাথায় সেটা ধরল না,
মা-মাটি-মানুষের মাঝে ফাঁকটিও তাই ভরল না।
সেই ফাটলের গহ্বরেতে ডুবল বুঝি ঘাসের মূল,
পচা-পানার খানাডোবায় মারছে উঁকি পদ্মফুল!

মূল কবিতাটি উনবিংশ শতাব্দীর কোনও অখ্যাত কবির লেখা, প্রথম লাইন দুটো দিচ্ছি। যদি কেউ পুরোটা জানেন বা কবির নাম জানাতে পারেন, খুব ভাল হয়।
'নীল বানরে সোনার বাংলা করল যে আজ ছারখার,
অকালেতে হরিশ ম'ল, লং-এর হল কারাগার।' (হরিশ- বাগ্মী হরিশ মুখার্জি, লং- রেভারেণ্ড জেম্‌স্‌ লং- যিনি 'নীলদর্পণ' এর ইংরাজি অনুবাদের দায় নিজের উপর নিয়েছিলেন)

(২)

দম নেই কলিজায়, জিভ তবু চাঙ্গা-
রে বাঙালী, কত আর হবি তুই নাঙ্গা!
অমৃতসর-হাওড়া ট্রেন চলেছে পাটনার দিকে। এক বাঙালী যাত্রী চলেছেন কলকাতা সপরিবারে, মোগলসরাইয়ে জল নিয়ে যখন উঠলেন, দেখেন এক ষণ্ডামার্কা বিহারি বসে আছে তাঁর সীট জুড়ে। 'এ হামার জায়গা, নামো তুম', বলায় লোকটি বলল, সে আরায় নেমে যাবে, ততক্ষণ একধারে তিনি বসে পড়ুন না। তাতে বাঙ্গালিবাবুর রাগ বেড়ে গেল। 'এক থাপ্পড় মারকে তুমরা দাঁতকপাটি ভাঙ্গেগা' ইত্যাদি বলায় উলটে বিহারি বাবুই তাকে এক চড় মেরে বসল।
'এতনা সাহস, গায়ে হাত তুলতা হ্যায়! আচ্ছা, মেরা জানানা কো মারকে দেখাও'- বাবুটির হুমকি।
'ইমে কঊন বড়ি বাত বা? লো, অভিয়ে মার দেত'- বলেই মহিলাটিকেও এক চড়।
'বহুত অসভ্য আদমি হ্যায়, আউরত কো মারতা। আচ্ছা হামরে বাচ্চাদুটোকো মারকে দেখাও তো!'
বলা বাহুল্য, বাচ্চারাও চড় খেল। 'আচ্ছা, কলকাতা আও, তুমকো দেখেগা' বাবুটি গজগজ করতে থাকলেন। ইতিমধ্যে আরা এসে পড়ল, লোকটি নেমে গেল।

'মশায়, নিজে চড় খেলেন, খেলেন, ঘরগুষ্টি সবাইকে না খাওয়ালে চলছিল না', এক সহযাত্রী জিজ্ঞেস করলেন।
'আরে মশায়, বোঝেন না কেন', বাবুটি তাঁর কানের কাছে মুখ এনে বল্লেন, 'এসব না করলে কাল সারা পাড়া রাষ্ট্র হয়ে যেত- বাবা মার খেয়েছে, বাবা মার খেয়েছে!'

(৩)

এ তো বড় রঙ্গ যাদু, এ তো বড় রঙ্গ,
চারজন এয়ার দিতে পারো, যাব তোমার সঙ্গ।
সুদীপ্ত হ্যায়, কুণাল ভি হ্যায়, আভি গয়া সৃঞ্জয়,
দাদা-দিদি কাতার মে হ্যায়, ফালতু তোদের এই ভয়!
দু-জোড়া তাস ভেজিয়ে দেবো, খেলিস টোয়েন্টি-নাইন,
ফিকর না কর, একলা না তুই, পিছে লম্বা লাইন!!


(৪)


একটা পুরাতনী গান শুনছিলাম রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কোনও শিষ্যের গলায় -
"শুক বলে আমার কৃষ্ণ মদনমোহন,
সারি বলে আমার রাধা বামে যতক্ষণ
- নইলে শুধুই মদন।"
মদন আর মদনমোহনের পার্থক্যটা তখনই বুঝতে পারলাম।

(৫)

কাক-দর্পণ
কেমন করে বললি কাগা,
দিদি পিকাসো, দা ভিঞ্চি?
সে ছবি শিশুর করা আঁকিবুকি
তার বাড়া নয় এক ইঞ্চি!

তোর কাক বেচে তো চলত ভালই,
সারদায় কি প্রয়োজন,
গখ-রাফায়েল কিনছে চ্যানেল
শুনেছে কেবা কখন?
ব্যাটা আঁকবি ছবি, পয়সা নিবি-
কেন খোসামুদি অকিঞ্চিৎ!
কেমন করে বললি কাগা,
দিদি পিকাসো, দা ভিঞ্চি?
(কবিয়াল ভোলা ময়রার অনুসরণে)





(৬)

আমায় প্রশ্ন করে ওই গোয়েন্দারা
বল কতদিন জনতার টাকা মারা
চলে এই ধারা?
জবাব তেমন কিছু দিতে পারি নি বলে
বরণ আমায় করে নিল এই কারা ।।
কারা যেন সারদাকে ভাল বলেছিল
তাই শুনে লোকে সেথা টাকা ঢেলেছিল।
সারদা ছড়ায় নোট, জনতা বিলোয় ভোট
এইভাবে হল সুদীপ্ত সর্বহারা !।
আমি ভুল করিনি দিদির কথা শুনে
কে আর আপন আছে দিদি তুমি বিনে,
আমার চোখের পাশে কত মাল যায় আসে
ও দিদি, কেমনে বাঁচি লাল পানি ছাড়া ।।
(সলিল চৌধূরির কাছে যথাবিহিত ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি)
 

No comments:

Post a Comment