অনুপ্রাসের চ্যবনপ্রাশ।।
(ছড়া)
(১)
রামশর্মার ধর্মখুড়ো আর্মেনিয়া গেলেন
ঘর্মে নেয়ে সর্দিগর্মি- কর্ম সেরে এলেন!
চর্মরোগের নির্মমতায় ভির্মি খাবার পালা,
দর্মা-বেড়ার বর্ম পরে মর্মে হল জ্বালা।
দুর্মদ হার্মাদের মত সুর্মা এঁকে চোখে-
বর্মাতে ডার্মাটোলজিস্ট খোঁজেন দিবালোকে!
নর্মদাতে স্নানটি সেরে নির্মল মনপ্রাণ
নির্মূল হয় চর্মের রোগ নির্মাণ হয় গান।
(২)
তিন্তিড়ি খেয়ে হল নকুলের অম্বল,
দই-চিঁড়ে খাবে বলে খুঁজে ফেরে দম্বল।
ফিডিং বোতল হাতে ভীমের হাড়িম্ব
ঘটোৎকচেরে রস খাওয়ায় দাড়িম্বর .
হনুমান তাই দেখে বলে, ওগো রম্ভা,খেতে পারি এক কাঁদি, আমি কিসে কম বা!হুয়া হুয়া ডেকে বলে বিটকেল জম্বুকআজ যে উসেন বোল্ট, কাল ছিল শম্বুক।গো-জননী বাছুরের খোঁজে ডাকে 'হাম্বা',জিরাফ ডাকবে কিরে? গলাটাই লম্বা !!
(৩)
রন্ধনেরই গন্ধ পেয়ে স্কন্ধকাটা ভূত
সন্ধেবেলায় অন্ধকারে ছন্দে কী অদ্ভুত
নাচ জুড়েছে বন্ধঘরে, কবন্ধনাট্যম!
সন্ধি করে ইন্ধন দেয় ক্ষিতি-মরুৎ-ব্যোম,
পঞ্চভূতের তিনটি হাজির। বাকিদের সন্ধান
মিললে হবে রন্ধন, নিঃসন্দেহ মন-প্রাণ।
গান্ধারীর প্রবন্ধ পড়েই আনন্দে উচ্ছল-
বসুন্ধরায় অগ্নি আছে, সিন্ধুনদে জল!
(৪)
তিন্তিড়ি খেয়ে হল নকুলের অম্বল,
দই-চিঁড়ে খাবে বলে খুঁজে ফেরে দম্বল।ফিডিং বোতল হাতে ভীমের হাড়িম্ব
ঘটোৎকচেরে রস খাওয়ায় দাড়িম্বর .
হনুমান তাই দেখে বলে, ওগো রম্ভা,
খেতে পারি এক কাঁদি, আমি কিসে কম বা!
হুয়া হুয়া ডেকে বলে বিটকেল জম্বুক
আজ যে উসেন বোল্ট, কাল ছিল শম্বুক।
গো-জননী বাছুরের খোঁজে ডাকে 'হাম্বা',
জিরাফ ডাকবে কিরে? গলাটাই লম্বা !!
(৩)রন্ধনেরই গন্ধ পেয়ে স্কন্ধকাটা ভূত
সন্ধেবেলায় অন্ধকারে ছন্দে কী অদ্ভুত
নাচ জুড়েছে বন্ধঘরে, কবন্ধনাট্যম!
সন্ধি করে ইন্ধন দেয় ক্ষিতি-মরুৎ-ব্যোম,
পঞ্চভূতের তিনটি হাজির। বাকিদের সন্ধান
মিললে হবে রন্ধন, নিঃসন্দেহ মন-প্রাণ।
গান্ধারীর প্রবন্ধ পড়েই আনন্দে উচ্ছল-
বসুন্ধরায় অগ্নি আছে, সিন্ধুনদে জল!
শুনে অনন্ত বেদ-বেদান্ত সাধুসন্তের দেশে
জন্তুর মত দন্তবিকশি সন্তু উঠেছে হেসে।
সীমন্তে নেই কুন্তল, তাই অন্তর হল কাবু,
তদন্তে সন্তান-হন্তার চিন্তিত কাকাবাবু।
কিন্তু হঠাৎ হন্তদন্ত আসেন শিবকুমার
সন্তুর নামে যন্তর হাতে অশান্ত বেদনার
ভারেতে ক্লান্ত, শ্রান্ত যেন রে বৃন্তচ্যুত ফুল,
কৃতান্তে আক্রান্ত হেন রে চিত্ত চিন্তাকুল।
অনন্তর কাকাবাবুকে দেখেই অন্তর্জ্বালা ভুলে
'রাজা' বলে ঝেড়ে সব সন্তাপ সন্তুর নেন তুলে।
(৫)
লঙ্কা-কূলে শঙ্কা ভুলে পঙ্ক সকল মাড়িয়ে আয়
শিবশঙ্কর ভয়ঙ্করের ডঙ্কাখানি বাজিয়ে আয়।
আয় বধূরা সাজ কঙ্কন কুঙ্কুমে অলঙ্কারে।
কিঙ্কিনী-রব তোলরে সবে ঝঙ্কারি বীণার তারে।
অহঙ্কারের ঊর্ধ্বে গিয়ে ওই শুনি ওঙ্কারের তান
পদ্মনাভ ত্রিবঙ্কিম জলধি অঙ্কে ওই শয়ান।।
(৬) চঞ্চল-অঞ্চল উড়িছে ডানা মেলে যেন মালঞ্চের ছিন্নফুল, কাঞ্চন সঞ্চয় ওই বসনতলে ছাপিয়ে ওঠে যেন শ্বেত-দূকুল। সরগম পঞ্চম সুরে ধ্বনিয়া উঠে করিয়া বঞ্চনা বিহঙ্গে, কিঞ্চিৎ সিঞ্চন করিয়া বারিধারা পঞ্চশরে রাখে ভ্রূভঙ্গে। কেশদাম-কুঞ্চন সঘন-ঘনঘটা বুঝি গো সঞ্চারে কোলাহল, তঞ্চন স্বর্গের শিখর হতে দেখি প্রপঞ্চময় মায়া হলাহল। (৭) বঙ্গের রঙ্গিনী অঙ্গনা গো তুমি অঙ্গ ভাসাও তরঙ্গজলে, হেরি রঙ্গ-বিভঙ্গ হে সুরঙ্গমে আসঙ্গলিপ্সু অনঙ্গ জ্বলে। তুমি বিহঙ্গে সঙ্গীত দান কর, ঢাল গঙ্গার সঙ্গমে তীর্থবারি; অঙ্গার লয়ে কর আলিঙ্গন, সুমঙ্গলে তুমি বঙ্গনারী। (৮) আস্ত কাঁঠালগুলো মস্ত সাইজ স্তরে স্তরে কোয়া-ভরা বিস্তর বীজ। গাছখানা উঠেছিল প্রস্তর ফুঁড়ে আগাছা-ঘাসের স্তুপ আস্তানা জুড়ে। একদিন ওস্তাদ মস্তান মালি কাস্তেয় ঘাস কেটে বস্তায় ঢালি পোস্তায় গিয়ে দিল বেচে শস্তায়, বেঁটে দিল পোস্ত হামানদিস্তায়। মস্তান হস্তের দেখ রে কামাল, দস্তুরমত ফলে মস্ত কাঁঠাল! (৯) তিন পক্ষ ছুটি মজা লক্ষ লুটি আমবৃক্ষ পরে চড়ি দক্ষতার সাথে বুনো পক্ষী হাতে শিকার করে ঘর ফিরি। এক চক্ষু কানা নলিনাক্ষ জানা বড় বিচক্ষণ, আহা! অশিক্ষিত মানি, দক্ষ সে রাঁধুনি জানি বিলক্ষণ তাহা। ধান্য ক্ষেত মাঝে উনুনটি বিরাজে ক্ষীণতোয়া নদীর পাড়ে বক্ষে হাত রেখে মশলা দেখে চেখে, নলিনাক্ষ রাঁধে-বাড়ে। কী স্বাদ ভক্ষণে যে খায় সেই জানে, ক্ষণজন্মা তুমি ভাই, অক্ষমেরে ক্ষম, ক্ষমতা নাহি মম, বোঝাতে শব্দ না পাই। (১০) আজ্ঞে মশায়, অজ্ঞ আমি, যজ্ঞ-বিধির নেইক জ্ঞান, বিজ্ঞানের কী সংজ্ঞাটি, আর কারেই বা কয় বেদ-পুরাণ? বিজ্ঞাপনে লেখাই আছে কাব্যের নাম অভিজ্ঞান দুষ্যন্ত-শকুন্তলার অভিজ্ঞতার গল্পখান। কে কালিদাস, জিজ্ঞাসা মোর, জ্ঞানদাসের কি জ্ঞাতি হন? বিজ্ঞজনের এ অজ্ঞতা কেন আমায় বুঝিয়ে কন!
বিশেষজ্ঞের কী মতামত, রাজ্ঞী কি তার খবর পান? ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা শুনেই ব্রহ্মজ্ঞানী যে অজ্ঞান! (১১) তৃষ্ণা মোর একফোঁটা উষ্ণতার তরে, বিষ্ণুরে করিনু পূজা কৃষ্ণপক্ষ ধরে। জিষ্ণু আমি, সহিষ্ণুতা শিখিনিক কভু সুদেষ্ণার কক্ষে আজ কৃষ্ণা পশে তবু। বৈষ্ণব তূষ্ণীম্ভাব ধরেন যখন, বৃষ্ণিবংশ বর্তিষ্ণু লাগে যে তখন।
(১২)
চিন্তামাঝে মগ্ন ছিনু লগ্ন বয়ে গেল, রুগ্নদেহে ভগ্নমনে নিদ্রা চোখে এল। লগ্নী নাই অর্থাভাবে, বিলগ্ন সময়
অসংলগ্ন খাদ্য খেয়ে রুগ্ন অগ্ন্যাশয়।
নগ্নশিরে বস্ত্র নাই, ভগ্নীগণ দুখী অগ্নিহীন যজ্ঞ তবু জমদগ্নি সুখী।
(১৩)
নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে অখণ্ড বিশ্বাসে ঈশ্বর-নাম জীব লহ রে বিশ্ব যে জঙ্গল শ্বাপদ-সংকুল কেবা দেয় আশ্বাস কহ রে! আশ্বিনে সমাগতা সিংহবাহিনী মাতা অশ্ব-নৌকা-গজ বা দোলায় শ্বেত পুষ্প শোভে অলি জোটে মধুলোভে নশ্বর জীবেরে কে ভোলায়। পরশ্ব রজনীতে হেরিতে এ ধরণীতে অশ্বিনী-নক্ষত্র মহৎ জাগিবে বিশ্বে যারা পড়িবে রাত্রে তারা শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ।
(১৪)
অলখ নিরঞ্জন, মহাভয় ভঞ্জন মায়া মোহ অঞ্জন করে মনোরঞ্জন। গলায় গুঞ্জা মালা কুঞ্জে আসিল কালা, মুঞ্জরে গাছপালা ভ্রমর গুঞ্জরিলা। কুঞ্জর পিঞ্জরে সঞ্জীবনীর তরে খঞ্জের পঞ্জরে বিন্ধে সে খঞ্জরে। অলক্ত-রঞ্জিত কজ্জল-পুঞ্জিত শিঞ্জিনী-শিঞ্জিত ব্যঞ্জন ভুঞ্জিত। মঞ্জুল মঞ্জরী সুধামঞ্জুষা মরি! শান্ত প্রভঞ্জন, ভঞ্জিল শর্বরী।। -----
নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে অখণ্ড বিশ্বাসে ঈশ্বর-নাম জীব লহ রে বিশ্ব যে জঙ্গল শ্বাপদ-সংকুল কেবা দেয় আশ্বাস কহ রে! আশ্বিনে সমাগতা সিংহবাহিনী মাতা অশ্ব-নৌকা-গজ বা দোলায় শ্বেত পুষ্প শোভে অলি জোটে মধুলোভে নশ্বর জীবেরে কে ভোলায়। পরশ্ব রজনীতে হেরিতে এ ধরণীতে অশ্বিনী-নক্ষত্র মহৎ জাগিবে বিশ্বে যারা পড়িবে রাত্রে তারা শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ।
(১৪)
অলখ নিরঞ্জন, মহাভয় ভঞ্জন মায়া মোহ অঞ্জন করে মনোরঞ্জন। গলায় গুঞ্জা মালা কুঞ্জে আসিল কালা, মুঞ্জরে গাছপালা ভ্রমর গুঞ্জরিলা। কুঞ্জর পিঞ্জরে সঞ্জীবনীর তরে খঞ্জের পঞ্জরে বিন্ধে সে খঞ্জরে। অলক্ত-রঞ্জিত কজ্জল-পুঞ্জিত শিঞ্জিনী-শিঞ্জিত ব্যঞ্জন ভুঞ্জিত। মঞ্জুল মঞ্জরী সুধামঞ্জুষা মরি! শান্ত প্রভঞ্জন, ভঞ্জিল শর্বরী।। -----
(১৫)
কপিলাবস্তুর বৃদ্ধ রাজা শুদ্ধোদন
তাঁর পুত্র সিদ্ধার্থ দয়ালু ভীষণ।
দেবদত্ত হাঁসটিকে বিদ্ধ করে শরে
সিদ্ধার্থ উদ্ধার করে প্রাণরক্ষা তরে।
ক্রুদ্ধ দেবদত্ত গিয়ে তাহার বিরুদ্ধে
সিদ্ধার্থকে আহ্বান করে দ্বন্দ্বযুদ্ধে।
সেই রাজপুত্র হন প্রসিদ্ধ মহান
সিদ্ধি লভি বুদ্ধ নামে করুণানিধান।
(১৬)
বৃশ্চিক দংশিলে পশ্চাদ্দেশে
নিশ্চল হয়ে কিছুক্ষণ থেকো বসে।
নিশ্চিত মৃত্যুর দ্বার থেকে ফিরে
আসবেই, কশ্চিৎ যম যদি ঘেরে।
তা বলে রয়োনা নিশ্চেষ্টটি যেন, পশ্চিমে হাঁটা দিলে বাঁচবে, তা জেনো নিশ্চয়। আশ্চর্যে না যদি ঘুম আসে, শুয়ো ঘাসে নিশ্চিন্তে নিঝুম! পুনশ্চ বলি, মোর একটি কথাও কোরোনা বিশ্বাস, দুশ্চিন্তা হটাও!
(১৭) পম্পাসরোবর তীরে সম্পন্ন নগরী চম্পক বনেতে সেথা ভিড়ে এসে তরী সাম্পান-সদৃশ, হেরি কম্পন প্রবল ভয়ে লম্ফঝম্প করে লম্পটের দল- চম্পট দিয়েছে সবে। বৈশম্পায়ন ভাবে ভূমিকম্প বুঝি এমন গর্জন! শম্পার উজল-প্রভা সম্পাতে গরজি, বিদ্যুন্মালার জালে আলিম্পনে সাজি সম্পত্তি-সম্ভার নিয়ে রাজন দম্পতি চম্পারণ হ'তে তাঁরা এলেন সম্প্রতি ঋষি বৈশম্পায়নে দেখে দ্রুতগতি সম্প্রদান সম্পূর্ণ করেন ভূপতি। (১৮)
বাল্মীকি কঠোর তপে চতুর্মুখ তুষ্ট জপে হৃষ্ট হয়ে ব্রহ্মা দেন বর সে বরে আদিষ্ট হয়ে আর্যবীর গাথা গেয়ে সৃষ্টিমাঝে হবেন অমর।
রাম পুত্র ক্ষত্রিয়ের, অদৃষ্টের দেখ ফের,
বাল্মীকি দেখেন ইষ্টদেবে-
হেরিয়া আকুল হন চতুর্ভুজ নারায়ণ
মিষ্টস্বরে ভজেন কেশবে।
শরে দুষ্ট নিষাদের বধ ক্রৌঞ্চমিথুনের-
বেদনায় কষ্ট পান মুনি,
হেরিয়া আকুল হন চতুর্ভুজ নারায়ণ
মিষ্টস্বরে ভজেন কেশবে।
ব্যাধের অশিষ্টাচার দেখে ভ্রষ্ট ব্যবহার রুষ্ট হয়ে শাপ দেন তিনি।
চেষ্টায় জড়ত্ব নষ্ট, শ্লোক হরে শোক-কষ্ট
সৃষ্টি হয় ছন্দ অনুষ্টুপ, মিষ্টস্বরে রামায়ণ গায় সীতা-পুত্রগণ গুণিজন শোনো হয়ে চুপ!
(১৯)
"ল্ল"ভল্ল হাতে মল্লরাজ জল্লাদকে ডেকে
বলে আন্ রসগোল্লা কেল্লা-হাট থেকে।
চুল্লি হতে তপ্ত তুলে দিল্লী যেতে হবে
নচেৎ করবে হল্লা মোল্লারা যে সবে!
আল্লা-আল্লা, খোদাতাল্লা- একি উপদ্রব,
বিল্লি ডাকে, ঝিল্লিতানে ওঠে কলরব।
তাদের করিতে শান্ত বিসমিল্লা খান
মিঞা কি মল্লার রাগে সানাই বাজান।
বল্লাল সেনের হৃদে উঠিল হিল্লোল
নেচে ওঠে মল্লিনাথ শুনে সে কল্লোল।।
বলে আন্ রসগোল্লা কেল্লা-হাট থেকে।
চুল্লি হতে তপ্ত তুলে দিল্লী যেতে হবে
নচেৎ করবে হল্লা মোল্লারা যে সবে!
আল্লা-আল্লা, খোদাতাল্লা- একি উপদ্রব,
বিল্লি ডাকে, ঝিল্লিতানে ওঠে কলরব।
তাদের করিতে শান্ত বিসমিল্লা খান
মিঞা কি মল্লার রাগে সানাই বাজান।
বল্লাল সেনের হৃদে উঠিল হিল্লোল
নেচে ওঠে মল্লিনাথ শুনে সে কল্লোল।।
No comments:
Post a Comment