ও শ্যামাদাস
(এই শিরোনামে জোর করে কিছু জ্ঞানদান করছি, আরও করব, যে পর্যন্ত না শ্যামাদাসরা দূর থেকে দেখেই পালায়)
'মামা মামা' ডাকছে কেন ঐ হুঁকো-মুখো হ্যাংলায়?
ও শ্যামাদাস, আয় না রে তুই, আয় না চলে এ বাংলায়।
তুই না এলে জ্ঞানগুলো সব মাথার মাঝে চরকি খায়;
বিশ্বকোষটা সোডার মতন পেটের ভেতর ভস্ভসায়।
কেই বা শোনে কাহার কথা, সবাইকে কি বলাও যায়?
ও শ্যামাদাস, সব বাঙালিই বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই।
(১)
"T'was brillig and the slithy toves
Did gyre and gimble on the wabe.
All mimsy were borogoves
And the mome raths outgrabe!"
-কিরে, কিছু বুঝলি?
-কিচ্ছু না।
-তাহলে?
-মনটা আনন্দে ভরে উঠল।
কি কাণ্ড! চারটে মাত্র লাইনের মধ্যে ১১টা শব্দ অভিধানের বাইরে, জানাল কম্প্যুটারের স্পেল আর গ্রামার চেক প্রোগ্রাম। তবু এ ছড়া অমর হয়ে আছে শিশুসাহিত্যে।
তবে বুঝলি শ্যামাদাস, আমাদের লুই ক্যারল নেই তো কি হয়েছে, সুকুমার ত আছেন! লীলা মজুমদার আছেন, সত্যজিৎ রায় আছেন। শুনবি ছড়াটা বাংলায়?
"বিরলিঙেতে আকাশ ভরা , শ্লিথিল টভরী-রা
ক্ষেভের মাঝে গায়রা দিয়ে গিম্গিমিয়ে ডাকে;
বরদ্গবের সব কটা আজ মিম্সিয়ে ব্যস্থিরা,
মৌমা বাতাস হুহুঙ্কারে হাত্রাসী হাঁক হাঁকে।"
(লীলা মজুমদার)
"বিল্লিগি আর শিঁথলে যত টোবে
গালুমগিরি করছে ভেউএর ধারে,
আর যত সব মিমসে বোরোগোবে
মোমতারাদের গেবগেবিয়ে মারে।"
(সত্যজিৎ রায়)
(২)
আজকাল ফেসবুকের দৌলতে সবার একটা করে ব্যক্তিগত দেয়াল আছে। আজ তাই নিয়ে একটু দেয়ালা করি। বল তো, প্রথম দেয়াল কে দিয়েছিল? জান না? - শেয়ালের বাপ। রূপকথার ছড়ায় আছে-
'এক যে ছিল শেয়াল
তার বাপ দিয়েছিল দেয়াল!'
তার বাপ দিয়েছিল দেয়াল!'
সে দেয়ালে প্রথম লিখেছিল কে? কে আবার- কবি সুকান্ত!
'দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে লিখি কথা-
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার স্বাধীনতা।' (দেয়ালিকা)
দেয়াল লিখন জিনিষটা বাম আমলের বাংলায় একটা শিল্পকলার উচ্চতায় পৌঁছে গেছিল। "তোমার নাম, আমার নাম- ভিয়েতনাম, ভিয়েতনাম" কিম্বা "গরুর জন্যে বিনোবা ভাবে/ মানুষের জন্যে কে ভাবে?" এসব আর কোথায় পাবেন? সব আমরা হারাতে বসেছি।
এখন থাকছে শুধু দেয়ালা। দেয়ালা বোঝেন তো? স্বপ্নের ঘোরে শিশু কখনও কাঁদে, কখনও হাসে। সবাই বলে, নাকি পূর্বজন্মের স্মৃতি মনে পড়ে তার। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন- তিনি বড় কবিও ছিলেন। লিখেছেন-
"শৈশবের আবছায়ে শিশুর দেয়ালা-
তেমনি অশোক তোর লালে লাল খেলা।" (অশোক)
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার স্বাধীনতা।' (দেয়ালিকা)
দেয়াল লিখন জিনিষটা বাম আমলের বাংলায় একটা শিল্পকলার উচ্চতায় পৌঁছে গেছিল। "তোমার নাম, আমার নাম- ভিয়েতনাম, ভিয়েতনাম" কিম্বা "গরুর জন্যে বিনোবা ভাবে/ মানুষের জন্যে কে ভাবে?" এসব আর কোথায় পাবেন? সব আমরা হারাতে বসেছি।
এখন থাকছে শুধু দেয়ালা। দেয়ালা বোঝেন তো? স্বপ্নের ঘোরে শিশু কখনও কাঁদে, কখনও হাসে। সবাই বলে, নাকি পূর্বজন্মের স্মৃতি মনে পড়ে তার। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন- তিনি বড় কবিও ছিলেন। লিখেছেন-
"শৈশবের আবছায়ে শিশুর দেয়ালা-
তেমনি অশোক তোর লালে লাল খেলা।" (অশোক)
শহরের দেয়াল জুড়ে একসময় লালে লাল খেলা হত, নীল, সবুজ- খেলা হয়েছে, এখন দেয়ালে গেরুয়া রঙও লেগেছে, কিন্তু গত শতাব্দীর সেই অপূর্ব দেয়ালিকাগুলি যেন কোন বিস্মৃতজন্মের ছায়ালোকের দেয়ালা বলেই মনে হয়।
(৩)
ঈশ্বর যা করেন সব মঙ্গলের জন্যে। ভাগ্যিস পৃথিবীর জন্যে কিছু করেন না, তাহলে পৃথিবীরও মঙ্গলের মত দশা হত!
(৪)
কেহ মরে বিল চেঁছে, কেহ খায় কই,
গেছোদাদা ঝোলে গাছে, নেপো মারে দই
ঈশ্বর যা করেন সব মঙ্গলের জন্যে। ভাগ্যিস পৃথিবীর জন্যে কিছু করেন না, তাহলে পৃথিবীরও মঙ্গলের মত দশা হত!
(৪)
কেহ মরে বিল চেঁছে, কেহ খায় কই,
গেছোদাদা ঝোলে গাছে, নেপো মারে দই
(৫)
এই কথাটা ঢুকল না কি নিরেট তব মগজে-
'ভাল মন্দ যাহাই ঘটুক, সত্যেরে লও সহজে।'
(৬)
এই কথাটা ঢুকল না কি নিরেট তব মগজে-
'ভাল মন্দ যাহাই ঘটুক, সত্যেরে লও সহজে।'
(৬)
No comments:
Post a Comment