চিরন্তনী ।।
অহল্যা উদাস হয়ে বাতায়নপ্রান্তে বসেছিলেন। তাঁর প্রতি কঠিন শাস্তি আরোপ করেছেন তাঁর পতিদেব ঋষি গৌতম। প্রস্তররচিত কারার অভ্যন্তরে তাঁকে থাকতে হবে যতদিন না স্বয়ং ঈশ্বর সে কারাগার ধ্বংস করে তাঁকে মুক্তি না দেন। তাঁর বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ এবং তা যে মিথ্যা নয় তা ঋষিও অনুমান করেন, যদিও তাঁর মনে বিশ্বাস যে এর জন্যে দেবরাজই একা দায়ী, গুরুর ছদ্মবেশে......।
চমক ভাঙ্গল পরিচিত কণ্ঠস্বরে। ‘এ কি, ইন্দ্র তুমি! কি সাহসে আবার এসেছ এখানে? আর তোমার শরীরে সহস্র লোচন আঁকা কেন?’
‘ধীরে, অহল্যে, ধীরে। গুরুদেব এখন প্রস্তর-কারাগার নির্মানে ব্যস্ত, এ মুহূর্তে তাঁর এখানে আসার সম্ভাবনা নেই। আর এগুলো লোচন নয়, যোনি-চিহ্ন, গুরুদেবের অভিশাপ।‘
‘তার মানে ঋষির শাপে ফল হয়!’
‘পাগল!’ ইন্দ্র হাসলেন। ‘তোমার নারীত্বের দাবী আমি মিটিয়েছি, করেছি পুরুষের কর্তব্য। কিন্তু সমাজের চোখে আমি অপরাধী, নৈতিকতার দিক দিয়েও। তাই ঋষির মান রাখতে ওগুলো শরীরে আমি নিজেই এঁকে নিয়েছি।‘
‘সে কি! আর অন্য অভিশাপ?’
‘সে তো আর পোষাকের আড়ালে বোঝা যাবে না, লোকে যা খুশী কল্পনা করে নেবে। এখন বল, আমার প্রতি তোমার কোনও অভিযোগ নেই তো?’
‘হে দেবরাজ, তুমি আমাকে পূর্ণ করেছ। দিয়েছ নারীর মর্যাদা। বিশ্বাসহনন আর চরিত্রহীনতার সমস্ত দায় তুলে নিয়েছ নিজের উপর। দোষ তো আমারও কম ছিল না। তোমার ঐ ছদ্মবেশও আমি মুহূর্তেই ধরে ফেলেছিলাম। আর কি করতে চাও তুমি!’
‘দেখ আমি দেবতাদের অধিপতি। স্বর্গমর্তের শৃংখলা রক্ষার ভার আমার উপরে, আর ঋষি গৌতমের হাতে আছে সমাজধর্ম রক্ষার দায়িত্ব। শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে। তাই আমি দেবর্ষিকে পাঠিয়েছি ঋষি বাল্মিকীর কাছে। তিনি ইক্ষাকুকুলপতি রামের জীবনকাহিনী রচনা করবেন। তিনি তোমার এই পতিরূপে উপপতিসেবার বৃত্তান্তটাই উল্লেখ করবেন এই কাব্যে।‘
অহল্যা উদাস হয়ে বাতায়নপ্রান্তে বসেছিলেন। তাঁর প্রতি কঠিন শাস্তি আরোপ করেছেন তাঁর পতিদেব ঋষি গৌতম। প্রস্তররচিত কারার অভ্যন্তরে তাঁকে থাকতে হবে যতদিন না স্বয়ং ঈশ্বর সে কারাগার ধ্বংস করে তাঁকে মুক্তি না দেন। তাঁর বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ এবং তা যে মিথ্যা নয় তা ঋষিও অনুমান করেন, যদিও তাঁর মনে বিশ্বাস যে এর জন্যে দেবরাজই একা দায়ী, গুরুর ছদ্মবেশে......।
চমক ভাঙ্গল পরিচিত কণ্ঠস্বরে। ‘এ কি, ইন্দ্র তুমি! কি সাহসে আবার এসেছ এখানে? আর তোমার শরীরে সহস্র লোচন আঁকা কেন?’
‘ধীরে, অহল্যে, ধীরে। গুরুদেব এখন প্রস্তর-কারাগার নির্মানে ব্যস্ত, এ মুহূর্তে তাঁর এখানে আসার সম্ভাবনা নেই। আর এগুলো লোচন নয়, যোনি-চিহ্ন, গুরুদেবের অভিশাপ।‘
‘তার মানে ঋষির শাপে ফল হয়!’
‘পাগল!’ ইন্দ্র হাসলেন। ‘তোমার নারীত্বের দাবী আমি মিটিয়েছি, করেছি পুরুষের কর্তব্য। কিন্তু সমাজের চোখে আমি অপরাধী, নৈতিকতার দিক দিয়েও। তাই ঋষির মান রাখতে ওগুলো শরীরে আমি নিজেই এঁকে নিয়েছি।‘
‘সে কি! আর অন্য অভিশাপ?’
‘সে তো আর পোষাকের আড়ালে বোঝা যাবে না, লোকে যা খুশী কল্পনা করে নেবে। এখন বল, আমার প্রতি তোমার কোনও অভিযোগ নেই তো?’
‘হে দেবরাজ, তুমি আমাকে পূর্ণ করেছ। দিয়েছ নারীর মর্যাদা। বিশ্বাসহনন আর চরিত্রহীনতার সমস্ত দায় তুলে নিয়েছ নিজের উপর। দোষ তো আমারও কম ছিল না। তোমার ঐ ছদ্মবেশও আমি মুহূর্তেই ধরে ফেলেছিলাম। আর কি করতে চাও তুমি!’
‘দেখ আমি দেবতাদের অধিপতি। স্বর্গমর্তের শৃংখলা রক্ষার ভার আমার উপরে, আর ঋষি গৌতমের হাতে আছে সমাজধর্ম রক্ষার দায়িত্ব। শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে। তাই আমি দেবর্ষিকে পাঠিয়েছি ঋষি বাল্মিকীর কাছে। তিনি ইক্ষাকুকুলপতি রামের জীবনকাহিনী রচনা করবেন। তিনি তোমার এই পতিরূপে উপপতিসেবার বৃত্তান্তটাই উল্লেখ করবেন এই কাব্যে।‘
‘তবে আমার ধারণা’, ইন্দ্র বলে চললেন, ‘বিশ্বের লোক একসময় নারীর চোখ দিয়ে সব
কিছু বুঝতে সক্ষম হবে, তাই সেই সময়ের নিরিখে আমার সাধনা হবে ভবিষ্যতের
নারী যেন আপন ভাগ্যকে জয় করবার অধিকার পায়, আপন মানসিক ও শারীরিক দাবী যেন
মুখ ফুটে বলতে পারে, অহোরহ সেই প্রচেষ্টায় রত থাকা।‘
এই বলে দেবরাজ ইন্দ্র বিদায় নিলেন।
মুম্বাই ২৯শে আগস্ট, ২০১৪।
এই বলে দেবরাজ ইন্দ্র বিদায় নিলেন।
মুম্বাই ২৯শে আগস্ট, ২০১৪।
No comments:
Post a Comment