সূক্ষ্ম শরীর ।।
আজ অনেকদিন আগের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল...তা বছর দশেক তো হবেই। আমাদের রিগের ইনস্ট্রুমেন্টেশন সেকশানে রবিবাবু বলে একটি তেলুগু ছোকরা ইঞ্জিনিয়ার কাজ করত। কাজে-কর্মে ও মন্দ ছিল না, কিন্তু ওর জনপ্রিয়তা ছিল অন্য একটা কারনে যেটা নিয়ে বাকি রিগগুলোর মধ্যে তাকে নিয়ে বেশ টানাটানি ছিল। সেটা ছিল ওর কাঠির মতো শরীর। অফশোর রিগের বেশ কিছু ইলেক্ট্রনিক সার্কিট, প্যানেল বা সেন্সারে ঠিকভাবে কাজ করতে গেলে ম্যানহোল বা ক্যাবিনেটের ঢাকনা খুলে তার ভিতরে ঢুকে যেতে হয়, নয়ত ভাল কাজ হয় না। আর দেহের সূক্ষ্মতার কারনে এ কাজে রবিবাবুর জুড়ি ছিল না।
একদিন হয়েছে এক কান্ড। ইউনিট চালু করার আগে কুলিং ওয়াটার পাম্প অন করতে
আমি সাব-বেসে নামছি, সিঁড়ি থেকেই দেখতে পাচ্ছি রবিবাবু হিট-এক্সচেঞ্জারে
কিছু একটা করছে। হঠাৎ চোখের পলক ফেলার মধ্যেই দেখি সে গায়েব। গেল কোথায়?
প্রায় ১০০ ফুট নীচে উত্তাল সমুদ্র। রেলিঙের ফাঁক দিয়ে পড়ে গেল না তো! একটু
দ্রুতপায়ে এগিয়ে গেলাম। মাই গড! ছয় ইঞ্চি ব্যাসের সী-ওয়াটার ডিসচার্জ
লাইনের পাশ থেকে বেরিয়ে এলো রবিবাবু, সশরীরে, নাকি সূক্ষ্ম-শরীরে! তার পর
থেকে ওর নামকরণই হয়ে গেল ইউডি (ইউনিডাইমেনশনাল বা একমাত্রিক)।
হঠাৎ একদিন রবিবাবু আমার অফিসে হাজির। 'গারু, একটা কথা ছিল, কিন্তু বলতে সংকোচ হচ্ছে।' জানা গেল, ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে, এক বিশাল অংকের পণের বিনিময়ে। কিন্তু ভাবী শ্বশুরের একটি শর্ত, সমুদ্রের কাজ ছাড়তে হবে। 'আরে তুমিও যেমন, রবি', আমি বললাম, 'চাকরি ছেড়ে দাও, এত টাকা পাচ্ছো, তারপর ব্যবসা কর'। 'না গারু, আমার চাকরির জন্যেই এই বিয়ে, দেখুন না কাউকে বলে কিছু করা যায় কিনা', তার সকরুণ অনুরোধ। কাজটা কঠিন ছিল, নেহাৎ প্রসেসে একজন ইঞ্জিনিয়ার সেই মুহূর্তে দরকার ছিল বলে গ্যাস কম্প্রেশন প্ল্যান্টে ও বদলি পেয়ে, সুরাট জয়েন করতে চলে গেল।
আজ এতদিন পরে তার কথা কেন উঠল? বান্দ্রা থেকে বোরিভিলি শেয়ার ট্যাক্সিতে বসে আছি, ওরা পিছনে চারজন, সামনে দুজন সওয়ারি নেয়। দেখি ড্রাইভার আমায় অনুরোধ করছে সামনের সীটে গিয়ে বসার জন্যে, এক দম্পতি পিছনে বসবেন চারজনের ভাড়া দিয়ে। রবিবাবু আমাকে ঠিক চিনেছে কিন্তু আমি চিনতে পারি নি, কারণ সে তো তখন রীতিমত থ্রী-ডি! শ্বশুর আর তার মেয়েতে মিলে আর চান্স নেয়নি, রবিবাবুর চেহারা এখন আর হাতির আড়ালেও ঢাকা পড়বে না।
১০ই জুলাই, ২০১৪
হঠাৎ একদিন রবিবাবু আমার অফিসে হাজির। 'গারু, একটা কথা ছিল, কিন্তু বলতে সংকোচ হচ্ছে।' জানা গেল, ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে, এক বিশাল অংকের পণের বিনিময়ে। কিন্তু ভাবী শ্বশুরের একটি শর্ত, সমুদ্রের কাজ ছাড়তে হবে। 'আরে তুমিও যেমন, রবি', আমি বললাম, 'চাকরি ছেড়ে দাও, এত টাকা পাচ্ছো, তারপর ব্যবসা কর'। 'না গারু, আমার চাকরির জন্যেই এই বিয়ে, দেখুন না কাউকে বলে কিছু করা যায় কিনা', তার সকরুণ অনুরোধ। কাজটা কঠিন ছিল, নেহাৎ প্রসেসে একজন ইঞ্জিনিয়ার সেই মুহূর্তে দরকার ছিল বলে গ্যাস কম্প্রেশন প্ল্যান্টে ও বদলি পেয়ে, সুরাট জয়েন করতে চলে গেল।
আজ এতদিন পরে তার কথা কেন উঠল? বান্দ্রা থেকে বোরিভিলি শেয়ার ট্যাক্সিতে বসে আছি, ওরা পিছনে চারজন, সামনে দুজন সওয়ারি নেয়। দেখি ড্রাইভার আমায় অনুরোধ করছে সামনের সীটে গিয়ে বসার জন্যে, এক দম্পতি পিছনে বসবেন চারজনের ভাড়া দিয়ে। রবিবাবু আমাকে ঠিক চিনেছে কিন্তু আমি চিনতে পারি নি, কারণ সে তো তখন রীতিমত থ্রী-ডি! শ্বশুর আর তার মেয়েতে মিলে আর চান্স নেয়নি, রবিবাবুর চেহারা এখন আর হাতির আড়ালেও ঢাকা পড়বে না।
১০ই জুলাই, ২০১৪
No comments:
Post a Comment