Friday, February 24, 2017

ইনসোমনিয়া

ইনসোমনিয়া।।

অনেকেই একটা বয়েসের পর অনিদ্রা রোগে ভোগেন। বর্ষাকাল হলে নাহয় কবির সাথে জেগে থাকা যায় এই বলে-
'অশ্বথ পল্লবে বৃষ্টি ঝরিয়া
নিশীথের অনিদ্রা দেয় যে ভরিয়া মর্মর শব্দে।'
অনেকে আবার ভাবেন জেগেই ত আছি, তাহলে বরং ফেসবুক বা একটা গল্পের বই নিয়ে বসা যাক। দুটোই সমান ক্ষতিকর মশাই। ফেসবুকের কথা নাহয় ছেড়েই দিলাম, ভুলক্রমে যদি হাতে শরদিন্দু, সত্যজিৎ বা সুনীল চলে এসেছে, আর রক্ষা নেই। আমার মনে আছে, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের 'পূর্ব-পশ্চিম' একরাত্রে পড়ে ফেলেছিলাম, ভাগ্যিস পরদিন অফিস ছিল না। 

মানুষ ভুল থেকেই শিক্ষা নেয়। তারপর কোত্থেকে জানিনা হাতে এল দুখানা বই- অন্নদাশঙ্কর রায়ের 'সাহিত্যে সঙ্কট' আর খান আব্দুল গফফর খানের 'খুদা-ই খিদমৎগার আন্দোলন' (বঙ্গানুবাদ)। বললে বিশ্বাস করবেন না, আজ পর্যন্ত বইদুটোর চারপাতার বেশী পড়তে পারিনি, শুরু করলেই ঘুমে চোখ জুড়িয়ে আসে- এত প্রচণ্ড বোরিং। তবে এটা ঠিক যে একটা বই চাই, ঘুমের ওষুধের বিকল্প হিসেবে। এই বিষয়ে একটা মজার গল্প পড়েছিলাম, সম্ভবতঃ শিব্রামবাবুর লেখা, সংক্ষেপে শোনাই।

এক ভদ্রলোক, ঘুমের ব্যাপারে আমার থেকে এককাঠি ওপরে। কিছু না পড়লে তাঁর ঘুমই হবে না, সারারাত জেগেই কাটিয়ে দেবেন। তাঁর স্ত্রীও এই অভ্যেসটা জানেন বলে ভদ্রলোক কোথাও গেলে তাঁর ব্যাগে অন্ততঃ একটা ম্যাগাজিন ভরে দেন। তবু ভুল হয়। একটি অফিসিয়াল ট্যুরে প্রায় মাঝরাতে হোটেলে পৌঁছে ভদ্রলোক আবিষ্কার করলেন, গিন্নি তাঁর ব্যাগে বই কেন, একটা খবরের কাগজও রাখেননি। হোটেলের কর্মচারিরা কেউ জেগে নেই, কাকে ডাকবেন? শেষমেষ রুমের ড্রয়ারের মধ্যে একটা সাদা প্যাড আর পেনসিল পেলেন। তারপর যত্ন করে সাদা কাগজে লিখলেন- 'জল পড়ে, পাতা নড়ে'।

এবার ভদ্রলোক নাইট ড্রেস পরে বিছানায় এলেন, হাতে সেই কাগজটি। আরাম করে শুয়ে বেড ল্যাম্প জ্বালিয়ে কাগজটি পড়া শুরু করলেন।

'জল প.........'

No comments:

Post a Comment