Friday, February 24, 2017

কবিতা- "জঙ্গলমহলের ভূত"

জঙ্গলমহলের ভূত।

কাটাই ক'দিন নিজের মনে
জঙ্গলমহলের বনে
ছাড়িয়ে পরে ঝাড়গ্রাম,
নেইকো মনে গাঁয়ের নাম,
পেরিয়ে গেলাম অনেকদূর
লোধাশুলি-মোহনপুর

চৌকিদার সনাতন মুড়া
মানুষটা থুত্থুরে-বুড়া,
বুঝিয়ে দিল 'দিকু* বটিস,
কাগমারাদের সমঝে চলিস।
বিটিছিলা দেখলে একা
করিস্‌না ঢের মিলা-মিখা।'

দিইনি তাকে পাত্তা মোটেই
খেয়ে-দেয়ে কাজ বুঝি নেই?
হঠাৎ দেখি উলঙ্গিনী
সামনে খাড়া লুটিয়ে বেণী
গভীর বনে মানুষ কোথা?
এমন তো ছিল না কথা!

কঙ্কালসার কালো শরীর
পায় না ঢাকা ছেঁড়া শাড়ির
মুণ্ডু কোথায়, করোটি-সার
চক্ষুদুটি কোটরে তার;
শরীর ঝোলে শূন্যে তারি
স্পষ্ট বুঝি অশরীরী।

কাকমারাদের মেয়েই বোধহয়
যার কথা চৌকিদারে কয়,
দেহটা মোর আটকে গেছে
পালাই সে হিম্মৎ কি আছে?
হঠাৎ দেখি পেছন ফিরে
ছুট লাগাল পেত্নিটা রে!

ও জঙ্গলের অশরীরী শোন,

ওরে ও কালো পেত্নি রে শোন,
তোকে দেখে তো আমিই ভয়ে 
ছুটতেছিলেম ঝোঁপ মাড়িয়ে-
তোর কি হল, হুড়মুড়িয়ে
পালাস ছুটে আগ বাড়িয়ে?

তুই যে অবাক করলি আমায়,
মানুষ দেখে ভূত কি পালায়?
তোর কি আছে? হাড্ডি তো সার,
ছেঁড়া কাপড় ঢাকবে কি আর!
হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি এল,
গল্প বুঝি এমনি ছিল-

কোন্‌ ভদ্দর বাবুর সনে
ভিড়েছিলিস সরল মনে? 
তারপরে যে হলি জবাই,
তুই ছাড়া তা জানে সবাই।
পেত্নি- উঠে পড়রে গাছে
পুরুষকে কি ভরসা আছে!

* দিকু = যারা আদিবাসী নয়

No comments:

Post a Comment