।। ভোখ ।।
ঝুক্ঝুক্ ঝুক্ঝুক্......, ছুটে চলেছে হাতিয়া-আসানসোল ফাস্ট প্যাসেঞ্জার । তালগড়িয়া পার হয়েছে বেশ খানিকক্ষণ আগে, ভোজুডি এলো বলে । সিজুয়া কোলিয়ারিতে নাইট শিফ্ট করে মহুদায় চেপে ঘরে ফেরে প্রতি সকালে ভিখা, রুক্নীবেড়্যার ভিখা বাউরি । ভোজুডি থেকে সাঁওতালডি বেশ একটানা চলে । তারপর কি হয় কে জানে, সিগন্যাল পেতে হামেশাই দেরি হয় । পেটের ভিতর থেকে একটানা একটা চিন্চিনে ব্যথা শুরু হয়ে যায় । ভিখা জানে, এটাই হল ভোখ, ভোখের জ্বালা ।
বাপের চাকরিটাই ভিখা পেয়েছে । বাপটাকে ভোলেনি সে, এই চিন্চিনে ব্যথাটা শুরু হলেই তার সাধুকে মনে পড়ে যায় । সাধু বাউরিকে আমারও মনে আছে কিছুটা । আমার দাদুর শ্রাদ্ধের কাজটা সে প্রায় একাই টেনেছিল তার কালো কুচকুচে মেদহীন শরীরটা দিয়ে । তারপর বিকেল চারটেয় খেতে বসেছিল । প্রায় আশীটা লুচি খেয়ে সাধুর মন্তব্য ছিল-'তা জলখাওকার পারা হল্য ব'। ...
এই ক্ষিদে, যাকে সে বলত 'ভোখ'- ছিল সাধু বাউরির দুই দুর্বলতার একটি । আরটি তার পুত্র ভিখারাম । সেদিনও আসানসোল ফাস্ট প্যাসেঞ্জারে বসে সে দুটোই টের পেয়েছিল । সাঁওতালডির পরে এত দাঁড়ায় কেন গাড়িটা । পনের মিনিটে রুক্নি পৌঁছনোর কথা, কিন্তু কই? পেটের ব্যথাটা বাড়ছে । ঐ তো বাসা দেখা যাচ্ছে, ঐ তো ভিখা ডাং-গুলি খেলছে । ট্রেনটা লেভেল ক্রসিঙের কাছে একটু স্পীড কমিয়েছে । ঘরে গিয়ে কিছু না খেলে আর চলছে না । এখানে নেমে পড়লেই তো হয় !
পায়ে পায়ে কখন গাড়ীর দরজার ধারে এসে দাঁড়িয়েছে টের পায়নি ভিখা । এমন সময় পিছন থেকে কানে এলো উপিন মাঝির গলা- 'তর বাপট ইখানটতেই লাফায়ঁ মর্যেছিল না রে ভিখা ?'
না, বাপের ভুলটা সে আর করবে না । প্রাণপণে চিন্চিনে ব্যথাটাকে সে ভুলতে চাইল...তার ব্যাটাটা যে মাত্র চার বছরের ।
ঝুক্ঝুক্ ঝুক্ঝুক্......, ছুটে চলেছে হাতিয়া-আসানসোল ফাস্ট প্যাসেঞ্জার । তালগড়িয়া পার হয়েছে বেশ খানিকক্ষণ আগে, ভোজুডি এলো বলে । সিজুয়া কোলিয়ারিতে নাইট শিফ্ট করে মহুদায় চেপে ঘরে ফেরে প্রতি সকালে ভিখা, রুক্নীবেড়্যার ভিখা বাউরি । ভোজুডি থেকে সাঁওতালডি বেশ একটানা চলে । তারপর কি হয় কে জানে, সিগন্যাল পেতে হামেশাই দেরি হয় । পেটের ভিতর থেকে একটানা একটা চিন্চিনে ব্যথা শুরু হয়ে যায় । ভিখা জানে, এটাই হল ভোখ, ভোখের জ্বালা ।
বাপের চাকরিটাই ভিখা পেয়েছে । বাপটাকে ভোলেনি সে, এই চিন্চিনে ব্যথাটা শুরু হলেই তার সাধুকে মনে পড়ে যায় । সাধু বাউরিকে আমারও মনে আছে কিছুটা । আমার দাদুর শ্রাদ্ধের কাজটা সে প্রায় একাই টেনেছিল তার কালো কুচকুচে মেদহীন শরীরটা দিয়ে । তারপর বিকেল চারটেয় খেতে বসেছিল । প্রায় আশীটা লুচি খেয়ে সাধুর মন্তব্য ছিল-'তা জলখাওকার পারা হল্য ব'। ...
এই ক্ষিদে, যাকে সে বলত 'ভোখ'- ছিল সাধু বাউরির দুই দুর্বলতার একটি । আরটি তার পুত্র ভিখারাম । সেদিনও আসানসোল ফাস্ট প্যাসেঞ্জারে বসে সে দুটোই টের পেয়েছিল । সাঁওতালডির পরে এত দাঁড়ায় কেন গাড়িটা । পনের মিনিটে রুক্নি পৌঁছনোর কথা, কিন্তু কই? পেটের ব্যথাটা বাড়ছে । ঐ তো বাসা দেখা যাচ্ছে, ঐ তো ভিখা ডাং-গুলি খেলছে । ট্রেনটা লেভেল ক্রসিঙের কাছে একটু স্পীড কমিয়েছে । ঘরে গিয়ে কিছু না খেলে আর চলছে না । এখানে নেমে পড়লেই তো হয় !
পায়ে পায়ে কখন গাড়ীর দরজার ধারে এসে দাঁড়িয়েছে টের পায়নি ভিখা । এমন সময় পিছন থেকে কানে এলো উপিন মাঝির গলা- 'তর বাপট ইখানটতেই লাফায়ঁ মর্যেছিল না রে ভিখা ?'
না, বাপের ভুলটা সে আর করবে না । প্রাণপণে চিন্চিনে ব্যথাটাকে সে ভুলতে চাইল...তার ব্যাটাটা যে মাত্র চার বছরের ।
No comments:
Post a Comment