পুঁথির কথা কই নে মোরা।
(১) ভাষা নেই
ফেসবুক নিস্তব্ধ।
ব্লগারের দেহে গুলি ছোঁড়া হল,
ওরে কি ভীষণ শব্দ।
স্থির হয়ে দেখে দুনিয়া, দেখল
একুশের শত-অব্দ -
দর্শকগণ দিল হাততালি
কেমন ব্লগার জব্দ!
(১) ভাষা নেই
ফেসবুক নিস্তব্ধ।
ব্লগারের দেহে গুলি ছোঁড়া হল,
ওরে কি ভীষণ শব্দ।
স্থির হয়ে দেখে দুনিয়া, দেখল
একুশের শত-অব্দ -
দর্শকগণ দিল হাততালি
কেমন ব্লগার জব্দ!
(২) হাজার কবিতা
কবিতা? ওরে কবিতা কোথায় পাবি,
কবিতা কোথায় আছে?
কবির বাসা, দেখবি হেথা-হোথা
কবিতা ঝোলে গাছে!
ফুটপাথেতে গরিব শুয়ে থাকে
ঝাঁকামাথায় ফলওয়ালা হাঁকে,
কবির কলম ছন্দে জেগে ওঠে,
সাদা পাতায় কবিতা হয়ে নাচে।
কবিতা কোথায় আছে?
কবির বাসা, দেখবি হেথা-হোথা
কবিতা ঝোলে গাছে!
ফুটপাথেতে গরিব শুয়ে থাকে
ঝাঁকামাথায় ফলওয়ালা হাঁকে,
কবির কলম ছন্দে জেগে ওঠে,
সাদা পাতায় কবিতা হয়ে নাচে।
(৩)
মঙ্গলকাব্য
পরের বছর থেকে মঙ্গলে দুর্গাপূজো নামাচ্ছি, তার anthemটা মোটামুটি তৈরি-
পেলে টাকা কোটি সাড়ে চারশো,
মনে হর্ষ,
করি মঙ্গলে পূজা প্রতি বর্ষ!
(কোরাস)
জাগো দেশবাসী, লহ টাকা পার্সে
ভায়া শ্রীহরিকোটা, যাই চলে মার্সে,
বন্দি মা দুর্গার চরণযুগে
অষ্টোত্তর শত নীলকমলে ।।
মনে হর্ষ,
করি মঙ্গলে পূজা প্রতি বর্ষ!
(কোরাস)
জাগো দেশবাসী, লহ টাকা পার্সে
ভায়া শ্রীহরিকোটা, যাই চলে মার্সে,
বন্দি মা দুর্গার চরণযুগে
অষ্টোত্তর শত নীলকমলে ।।
আন-অফিসিয়ালি ভারত থেকে প্রথম মঙ্গলে যান ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, আর তারপর প্রেমেন্দ্র মিত্রের ঘনাদা! আর একটি বিদেশী সায়েন্স ফিকশনের সত্যজিতের করা বাংলা অনুবাদ পড়েছিলাম- 'মঙ্গলই স্বর্গ'- উঃ, কি ভয়ংকর!
এবার মনে হয় সব myth-থা ভেঙে সত্যের প্রতিষ্ঠা হবে।
এবার মনে হয় সব myth-থা ভেঙে সত্যের প্রতিষ্ঠা হবে।
ভাগ্যিস ভগবান সব কিছু মঙ্গলের জন্যেই করেন, নয়ত পৃথিবীটাও মঙ্গলগ্রহের মতো মরুভূমি হয়ে যেত।
(৪) মানুষ মান্না
মান্না দে কে তাঁর মা মাঝে মাঝেই বলতেন, 'তুই বাংলা গান গাস না কেন?' উনি উত্তর দিতেন 'কি করব বল তার যদি সুযোগই কেউ না দেয়।' সেই সুযোগই এলো ১৯৫৩ সালে। মূলতঃ বোম্বেতে থেকে হিন্দিতে গান গাইলেও তিনি ছিলেন মনেপ্রাণে বাঙালি। খুব মজলিশি মানুষ ছিলেন। বোম্বেতে আমাদের কলোনির সরস্বতী পুজোয় গাইতে এসেছেন, ১৯৯৯ সালে, এসে প্রথমেই বললেন, আমি জানত সিঙ্গাড়া না খেলে সিঙ (sing) করতে পারিনা | গুলাটির সিঙ্গাড়া, একাই চারটে খেয়ে ফেললেন ওই বয়সে। বাঙালিদের আয়োজিত কোনো অনুষ্ঠানে কেউ হিন্দি গান শুনতে চাইলে চটে যেতেন। ধানবাদের সিন্দ্রিতে গাইতে এসে (১৯৭৫) পাবলিকের 'হিন্দি।হিন্দি।' চেঁচামেচি শুনে রেগেমেগে গাইলেন ওনার গাওয়া সবচেয়ে ওঁচা হিন্দি গানটি, 'মেরা ভায়েন্স কো ডান্ডা কিউ মারা' - পাগলা কাহি কা সিনেমার, এত ভালো ভালো গান থাকতে।
মান্না দে সত্যিই খুব বড় গায়ক ছিলেন, তবে তার থেকেও বড় মাপের মানুষ ছিলেন।
(৫) প্রসঙ্গঃ ঊর্ণনাভ অর্ণব
ঊর্ণনাভের জাল ছিড়ে তবু বেরিয়ে আশা যায়, অর্ণবের বাক্যজালকে উপেক্ষা করে নয়! তবু কেউ উত্তর দিতে পারেনা। সবাই আকুল হয়ে খুঁজে বেড়ায় একটুখানি ফাঁক, যার মাঝে নিজের কথা অল্প হলেও বলে ফেলা যায়।
(৬) গান্ধী-পুরাণ
কে বলে গান্ধীজী অবতার নন। বিষ্ণু বারবার অবতীর্ণ হয়ে শিষ্টের পালন ও দুষ্টের বিনাশ করে এসেছেন, এই কলিযুগে তিনি অহিংসা-মন্ত্র নিয়ে এলেন পাপীদের হৃদয় পরিবর্তনের জন্যে। অমন ভয়ংকর সুদর্শন চক্রকে কোথায় রেখে আসবেন? নিয়ে এলেন, তা রূপ নিল চরকার। এসব কে না জানে, গান্ধীপুরাণেই তো আছে!
(৭)
নাস্তিকতা
আমি মনে করি যে সত্যিকারের atheistদের স্থান আস্তিকদের অনেক উপরে। তাঁর পারিপার্শ্বিকে তিনি সাহায্যার্থে খুব কম লোকই পান। আশপাশের লোকজন ক্রমাগত বুঝিয়ে যেতে থাকে- 'ঈশ্বরকে অস্বীকার করে ক'দিন থাকবে, একদিন না একদিন তাঁকে মানতেই হবে'। সেই সময় তাঁর পুরুষকার যদি chance factor এ পরিপূর্ণ destinyর সাথে তাল না রাখতে পারে, কোনও একসময় 'অবিশ্বাসে'ও ফাটল ধরে। তখনও যদি তিনি বিশ্বাসে অটল থাকেন, তাঁর হয় 'চতুরঙ্গে'র জ্যাঠামশাইএর মত করুণ পরিণতি। তার ফলে নাস্তিকেরা অনেকসময় বাধ্য হয়েই মধ্যপন্থাটা মেনে নেয়।
মুস্কিল হল 'চার্বাক' বলতেই 'ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পীবেৎ' গোছের একটা ধারণা চালু থাকা ও রামায়ণে রাম কর্তৃক জাবালির দুর্দশা পড়ার পর এ দেশের মানুষ নিজের rational thinking এর ক্ষমতা হারিয়েছে, তাই ভণ্ডামি ও অলৌকিকত্বে দেশ ছেয়ে গেছে। নয়ত যে রামকৃষ্ণ চিরকাল অলৌকিক শক্তিকে জোর করে দূরে সরিয়ে রাখলেন, তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা সম্বন্ধে কত কি অপপ্রচার হয়। যেন এ ক্ষমতা না থাকলে তাঁর অবতারত্বের দেয়ালে ফাটল ধরবে!
(৮) হিড়িম্ব-বধ
ভীম হিড়িম্বকে কি করে মেরেচিল জান তো? না না মহাভারতে সবটা নেই, এক মহাপুরুষ আসল গপ্পোটা বলে গেছেন, শোনো তাহলে।
তারপর তো হিড়িম্ব ভীমের এইসা ভুঁড়ি দেখে উদোম হাসতে লেগেছে। 'কি রে ভীমে, আমার সঙ্গে তুই আবার লড়বি কিরে! এই ভুঁড়ি নিয়ে নড়তেই পারবি নে তো।
'এই ব্য়াটা রাক্ষস, তোর সাহস তো কম নয় আমাকে তুই তোকার করিস!'
'তুইও তো আমাকে তুই-তোকারি করছিস।'
'কোথায় আমরা আর কোথায় তোরা? জানিস আমরা রাজপুত আর তোরা ওবিসি। জানিস আমরা রাজাগজারা তোদের চাকরও রাখি না।'
'তা নাই বা রাখলি, আমরাও তোদেরকে চাকর রাখব না।'
'কি বললি ছোট্লোক?' বলে ভীম ওকে এসে দমদমাদম পেটাতে লাগল। আর রাজাগজা, চাকর, ছোটলোক, রাজপুত, ওবিসি এই কথাগুলো মনে করে আর ভীমের ভুঁড়ির দিকে চেয়ে হাসতে হাসতে হিড়িম্ব একেবারে মুচ্ছো খেয়ে পড়ল।
'এই ব্য়াটা রাক্ষস, তোর সাহস তো কম নয় আমাকে তুই তোকার করিস!'
'তুইও তো আমাকে তুই-তোকারি করছিস।'
'কোথায় আমরা আর কোথায় তোরা? জানিস আমরা রাজপুত আর তোরা ওবিসি। জানিস আমরা রাজাগজারা তোদের চাকরও রাখি না।'
'তা নাই বা রাখলি, আমরাও তোদেরকে চাকর রাখব না।'
'কি বললি ছোট্লোক?' বলে ভীম ওকে এসে দমদমাদম পেটাতে লাগল। আর রাজাগজা, চাকর, ছোটলোক, রাজপুত, ওবিসি এই কথাগুলো মনে করে আর ভীমের ভুঁড়ির দিকে চেয়ে হাসতে হাসতে হিড়িম্ব একেবারে মুচ্ছো খেয়ে পড়ল।
তারপর আর যায় কোথায়? রাগের চোটে একটা গাছকে উপড়ে গদা করে মাথা ফাটিয়ে শেষে মেরেই ফেলল অজ্ঞান হয়ে যাওয়া রাক্ষসটাকে।
তারপর গণেশের ইঁদুরকে ঘুস দিয়ে কেষ্টভায়া অনেক কষ্টে মূল মহাভারত থেকে ওটা কাটিয়ে দিয়েছেন, সে অন্য় গল্প।
তারপর গণেশের ইঁদুরকে ঘুস দিয়ে কেষ্টভায়া অনেক কষ্টে মূল মহাভারত থেকে ওটা কাটিয়ে দিয়েছেন, সে অন্য় গল্প।
(৯) লাভের ব্যবসা
পৃথিবীতে অত্যন্ত লাভজনক দু-নম্বরী ব্যবসাগুলি হল-১) সেক্স ও উইমেন ট্রাফিকিং, ২) ড্রাগ ট্রাফিকিং, ৩) যুদ্ধ ও অস্ত্র, ৪) জুয়া ৫) ধর্ম। ধর্ম-ব্যবসায় এমনিতে বে-আইনি নয়, কিন্তু মূলতঃ কালো ধনের ব্যবসা বলেই এটা দু-নম্বরি। এই ধর্মব্যবসায়ীদের সংগঠন খুবই শক্তিশালী এবং যেহেতু এটা সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্টের উপর আধারিত, এরা যে কোনও অপরাধে মুর্খ-দরিদ্র মানুষের সমর্থন পায়। রাষ্ট্রও এ ব্যাপারে নির্বিকার থাকে। যাতে কোনও গণ-আন্দোলন না গড়ে উঠতে পারে তার জন্যে যুক্তিবাদী লোকেদের নির্বিচারে দমন ও হত্যা করা হয়।
জানিনা এ সমস্যার সমাধান কি? কিছু বললেই নাস্তিক অপবাদ দিয়ে একদল গুণ্ডা রে রে করে তেড়ে আসবে আর তারা সাধারণ লোক, সরকার, রাষ্ট্র, এমনকি হয়ত আমার পরিবারের লোকেরও সমর্থন পাবে।
১০) সঙ্গীত ও আফিম।
বলা হয় যে সত্যিকারের ভাল সংগীত সর্বদুখহরা মোহিনীমায়ার সৃষ্টি করতে পারে। শেক্সপীয়ার বর্ণিত অরফিউসের বীণার সুর নাকি এমনি মোহিত করে তুলত মানুষকে। বস্তুবাদী দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল বলেছিলেন- 'Religion is the opium of people'. তাহলে কি সংগীতও তাই? নিশ্চয়ই নয়! সাধক রামপ্রসাদ কালীর নামগানে বুঁদ হয়ে থাকতেন, লোকে ভাবতেন তন নেশাখোর বুঝি। তাই তিনি জানালেন- 'সুরাপান করিনে আমি, সুধা খাই জয় কালী বলে'। তর্কের খাতিরে বলা যেতে পারে যে আফিমের বা মাদক-পদার্থের মত সংগীতের কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই। ঠিক কী আছে তাহলে এই সংগীতে? কী আশায় মানুষ গান শোনে? রবার্ট হেরিকের বক্তব্য সগুনুন-
"Then make me weep
My pains asleep,
And give me such reposes,
That I, poor I
May think thereby
I live and die
'Mongst roses!"
১১) জার্মানি ও ভারত
"জার্মানি গো জার্মানি,
তুমি ছিলে অজেয় বীর
একথা আজ আর মানি?" (সুকান্ত)
এটা সম্ভবতঃ ১৯৪৫-এর লেখা। কেন জার্মানি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হেরে গেল? রাজনৈতিক কারণ যাই থাক, হিটলারের উত্থানের সময় অসংখ্য ইহুদী আর নাৎসী-বিরোধী মানুষকে হয় হত্যা নয় নির্বাসিত করা হয়, এর মধ্যে আইনস্টাইন সমেত প্রচুর বিজ্ঞানীও ছিলেন। যদিও জার্মানী জ্ঞানে-বিজ্ঞানে চিরকালই উন্নত, হয়ত সামলে নিত। কিন্তু ওই যে বলে না, বিদ্বান সর্বত্র পূজ্যতে, সেদিন বিতাড়িত বিজ্ঞানীদেরকে আমেরিকা-ব্রিটেন ইত্যাদি দেশগুলো লুফে নিয়েছিল। তাদেরই সাধনার ফল ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে এল জার্মানি ও মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে। দেশের ভাগ্য ভাল ছিল যে ফ্যুরারকে আর বেশিদিন বাঁচতে হয় নি, তিনি আত্মহত্যা করে জার্মানীকে বাঁচিয়ে দিয়ে গেছেন।
ভয় হয়, আমরাও সেই পথ লক্ষ্য করে শহীদ হতে চলেছি না তো?
১২)
বৈপরীত্য
আমার বক্তব্য যে আদিযুগে যদি সবই ভাল ছিল, এই ঔদার্যটুকুও নিইনা কেন আমরা? রামচন্দ্র সীতাকে চরিত্রহীনা ভেবে ত্যাগ করেছিলেন, সেই জবরদস্তি এখনও চালাব মেয়েদের উপরে, অথচ উনি যে একপত্নীব্রতা ছিলেন সে শিক্ষাটা নেব না। উনি শম্বুককে মেরেছিলেন শূদ্র হয়ে তপস্যা করছিল বলে, অতএব মারো শূদ্রদের। অথচ গুহক চণ্ডালের সাথে মৈত্রী করেছিলেন, কে ভাবে সেটা!
এযুগেও ভগবান আসছেন, কিন্তু তাঁকে কেউ চিনছে না, চিনলেও মানছে না......'আজি দুর্দিনে ফিরানু তাঁদের ব্যর্থ নমস্কারে' ......অগত্যা তিনি আবার ফিরে যাচ্ছেন।
১৩)
প্রসঙ্গ- উলঙ্গ রাজা
ঠাকুর দেবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে নেই। যুক্তিবাদী বলে দাগিয়ে দেবে। তাই ভক্তিভরে প্রণাম করে ভালোয় ভালোয় বেঁচে বাড়ি ফেরো। রাজাকে নিয়েও প্রশ্ন করতে নেই। 'তথ্যের অধিকার' বলতে হাতির দাঁতকে বোঝায়, যা দেখা যায় তা খাবার জন্যে নয়। নীরেন্দ্র চক্রবর্তীর সেই সরল শিশুটার পরে কী হয়েছিল কেউ জানে কি? যদি এখনও বেঁচে থাকে-
জিজ্ঞাসা করুক:
রাজা, তোর কাপড় কোথায়?'
কারা যেন হাততালি দেয়নি। ফলে তাদের এখন দুটো দল। একদল হাতের অভাবে তালি দিতে পারে না, আর অন্যদল অন্য কিছুর অভাবে শুধু তালিই দিয়ে যায়।
১৪)
স্বপন যদি মধুর
বেশ জমে উঠেছিল খেলাটা। আমি ব্যাটিং করছি, পিসির ভাইপো বল হাতে ছুটে আসছে। চার পা ছুটে বোধহয় গুগলি ছেড়েছে একটা। আমি সুইপ করলাম, ছয়। তাকিয়ে দেখি সাদা শাড়ী, নীল হাওয়াই চটি পরা আম্পায়ার, ও মা, এ ত সেই পিসি, আঙুল তুলে বলে 'আউট'! পেছনে দাঁড়িয়ে একটা সাদা ফ্রেঞ্চকাট মোটু বেল ফেলে দিয়ে বলে 'হিট উইকেট'। আমি পোতিবাদ করতে যাব, কোত্থেকে যেন একটা অতি-পরিচিত গলা পেলাম- সন্ধে থেকে পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছ, এদিকে রুটিগুলো শক্ত হয়ে যাচ্ছে।
১৫)
নামৈব-কেবলম্।।
যার নামটি সিদ্ধার্থ, তারই নাম যে বুদ্ধ;
তাই শুনে রাজপুত্র রাহুল ভীষণ হল ক্রুদ্ধ।
সবাই তারে বুঝিয়ে বলে, রাগিস কেন ভায়া,
উদো-বুধোর পিণ্ডি আপন, নিজেই অধিকারি
উদোর ঘাড়ে একটি যে নাথ, অমিত শক্তিধারী।
নীতিবাগীশ এসব দেখে ঘোরেন কতই ঘাট না-
যদুবংশের শরণ নিতে ছোটেন তিনি পাটনা।
যাঁরে সবাই স্বামীজী কয় তিনিই হলেন নরেন,
বসন্তে যে ফোটেন মুকুল গ্রীষ্মে তিনি ঝরেন।
একটা দুটো অর্থ আমি চিনতে পারি সদ্য
যাঁর নামটি অরবিন্দ, আসলে তাই পদ্ম।
লাল নীল আর গেরুয়া-সবুজ, সবই রঙের খেলা
রক্তের রঙ লালই সবার, যতই বকো মেলা।
বিমান যখন গর্জে ওঠে কর্ণটি হয় বধির
শুভ চন্দ্রের উদয় নাকি? জানতে হনু অধীর!
কেষ্ট বলেন পার্থ স্যাঙাৎ, শোনরে নতুন গীতা-
কেবা কান্তা কে যে পুত্র, কেউ নয় 'ওর পিতা'!
১৬)
একুশের লালন
তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র (Second Law of Thermodynamics) এর উপর একুশের লালনের একটি গান। সংগৃহীতই মনে হয়, কারণ দেহতত্বের গান লেখার সাধ্য আমার কোনকালেই নেই।
ও মন বুঝি রে জানো না।
লাগলো আগুন কোন সে কোনায়
তোর ওই আট কুঠরির কারখানায়।।
লাগলে পরে প্রেমের আগুন
দেখিস তারে নিভাস নে কো,
তার শিখাখানা কেটে দিয়ে
তাপটুকু হৃদয়ে রেখো।
পন্ডিতেরা বলে বলুক
দুনিয়ার তাপ বাড়ছে হেথায়,
এই একুশের লালন বলে,
প্রেমের তাপ যেন রে হারায় না।।
১৭)
দিদিস্তোত্রম্।।
সাবধান হয়ে সবে অবধান কর রে,
ওহে মুর্খ-গুণীজন কোলাহল ছাড়ো রে ।
কে না জানে দিদি মোদের মা-মনসার অবতার
অনুগত ভক্ত মোরা চরণে প্রণমি তাঁর ।
বজ্রাদপি কঠোর তিনি মৃদু যে কুসুমবৎ
শক্তের ভক্ত, নরমের যম কর সবে দন্ডবত ।
দক্ষিণরায়ের উত্তম-অংশ, সরস্বতী-অবতংস
কভু তিনি পরমহংস, কখনো বা রাজা-কংস ।
মোদের তিনি রক্ষাকর্ত্রী, ওদের কাছে মহাত্রাস
বাঁচতে গেলে এই প্রদেশে স্তব কর তাঁর বারোমাস ।।
No comments:
Post a Comment