মিথেন।
(অণু-গল্প)
(অণু-গল্প)
- 'কী হল, এখনো পারলে না? হাফ অ্যান আওয়ার মোর।'
- 'এই যে স্যার, হয়ে এল। কোনমতে বললাম।' আসলে তো কিছুই হয় নি। দু-ঘন্টা ধরে ঠায় বসে আছি। পরীক্ষকের চেয়ারে বসে প্রফেসার সাহু, রসায়নজ্ঞ, তবে মোটেই রসিক নন। কী একটা যাচ্ছেতাই এক্সপেরিমেন্ট দিয়ে বসিয়ে দিয়েছেন, মাথামুণ্ডু কিছুই ঢুকছে না মাথায়।
- 'এই যে স্যার, হয়ে এল। কোনমতে বললাম।' আসলে তো কিছুই হয় নি। দু-ঘন্টা ধরে ঠায় বসে আছি। পরীক্ষকের চেয়ারে বসে প্রফেসার সাহু, রসায়নজ্ঞ, তবে মোটেই রসিক নন। কী একটা যাচ্ছেতাই এক্সপেরিমেন্ট দিয়ে বসিয়ে দিয়েছেন, মাথামুণ্ডু কিছুই ঢুকছে না মাথায়।
আজ্ঞে হ্যাঁ, এম-এস-সি নয়, বি-এস-সিও নয়, জাস্ট বারো ক্লাসের মানে হায়ার সেকেন্ডারির কেমিস্ট্রি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা। আর এই সেই প্রফেসার সাহু, যাঁর প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসে অনিমেষ একবার পটাসিয়াম ক্লোরেটকে গরম করে পটাসিয়াম ক্লোরাইট, অক্সিজেন আর সালফার পেয়েছিল। ও ইম্প্যোরিটি ভেবে ভয়ে সালফারটা না লেখাতে সাহু ক্ষেপে গেছিলেন, অনেক যত্নে উনি গুঁড়ো করে মিশিয়েছিলেন কিনা! আজ আমার ফাইনাল পরীক্ষায় ল্যাবে বসেছেন তিনি! অন্যরা তবু সল্ট টেস্ট বা টাইট্রেশন পেয়েছে, আমার ভাগ্যেই পড়েছে অদ্ভূত একটা এক্সপেরিমেন্ট, মিথেনে কার্বন-হাইড্রোজেনের বন্ড অ্যাঙ্গেল বের কর।
কী কাণ্ড! বইয়ে পড়েছিলাম বটে ১০৯ না কত ডিগ্রি হয়, সেটা আবার বের করব কী করে? এরকম তো কিছু পড়িনি কখনও। এদিকে ভাবতে ভাবতে দু-ঘন্টা পেরিয়ে গেছে, গা-হাত-পা ঘামতে শুরু করেছে। এইবার সাহু দেখছি আমার দিকে এগিয়ে আসছে, ধীরগতিতে কিন্তু ক্রুরদৃষ্টিতে চেয়ে।
- 'কী হে, মিথেন দেখনি কখনও? হ্যাভ ইয়ু নেভার সীন মিথেন?'
- 'না স্যর।' আমি অকপটে স্বীকার করলাম। 'তবে আলেয়া দেখেছি, শুনেছি জলাভূমিতে মিথেন জ্বলে আলেয়া হয়।'
- 'শাট আপ!' এবার স্যর ধমক দিলেন। 'মাথার উপরে তাকিয়ে দেখ, কী ঝুলছে?'
- 'না স্যর।' আমি অকপটে স্বীকার করলাম। 'তবে আলেয়া দেখেছি, শুনেছি জলাভূমিতে মিথেন জ্বলে আলেয়া হয়।'
- 'শাট আপ!' এবার স্যর ধমক দিলেন। 'মাথার উপরে তাকিয়ে দেখ, কী ঝুলছে?'
দেখছি। বহুদিন ধরেই ঝুলছে ওটা। একটা কাঠের তৈরি লাল গোলক, মধ্যে C লেখা, আর চারপাশে চারটে কাঠি দিয়ে চারটে সবুজ রঙের ছোট ছোট বল আটকানো, সাদা রঙে পষ্টো লেখা H.
- ' গট এ প্রট্র্যাক্টার? চাঁদা?' আবার গর্জন করলেন সাহু।
- 'চাঁদা? না তো স্যর।' আমি ভেবে পেলাম না কেমিস্ট্রিতে চাঁদা দিয়ে কী হবে।
- 'ইডিয়ট! গেট এ চাঁদা অ্যান্ড মেজার দ্য অ্যাঙ্গল। গো, ফাস্ট!'
কী মুস্কিল, চাঁদা কোথায় পাই এখন? চাঁদা...চাঁদা...ভাবতে ভাবতেই পরীক্ষা শেষ হওয়ার ঘন্টা বেজে উঠল। চমকে উঠে বসলাম।
- ' গট এ প্রট্র্যাক্টার? চাঁদা?' আবার গর্জন করলেন সাহু।
- 'চাঁদা? না তো স্যর।' আমি ভেবে পেলাম না কেমিস্ট্রিতে চাঁদা দিয়ে কী হবে।
- 'ইডিয়ট! গেট এ চাঁদা অ্যান্ড মেজার দ্য অ্যাঙ্গল। গো, ফাস্ট!'
কী মুস্কিল, চাঁদা কোথায় পাই এখন? চাঁদা...চাঁদা...ভাবতে ভাবতেই পরীক্ষা শেষ হওয়ার ঘন্টা বেজে উঠল। চমকে উঠে বসলাম।
কোথায় সাহু, কোথায় ল্যাব? তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দেখি পাড়ার ছেলেরা, সরস্বতী পুজোর চাঁদার রসিদ-বই হাতে। 'কাকু চাঁদা। সকালে দেবেন বলেছিলেন।' মনে পড়ল কাল এরাই এসেছিল, ভাগিয়ে দিয়েছিলাম কাল সকালে আসিস বলে। আরো বলেছিলাম মা সরস্বতীর পাঁচটা নাম মুখস্থ করে আসতে।
হে মা সরস্বতী! দোহাই তোমার, পাঁচটা প্রতিশব্দ তো দূর, সরস্বতী বানানও কাউকে কখনও শুধোব না, একবাক্যে চাঁদা দিয়ে দেব। শুধু যেন এরকম দুঃস্বপ্ন কখনও কাউকে দিও না। 

No comments:
Post a Comment