Tuesday, August 27, 2019

মজার গল্প- গুল-বাঘা

গুল-বাঘা।
(মজার গল্প)

আমার একটি পাতানো ভাগ্নে আছে। ভাগ্নে হলেও যখন থেকে সে ডায়মন্ড হারবারে একটা প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ঢুকেছে, আমার সাথে সমবযস্কতার দাবি করে। এখন নাকি সে প্রেম-টেমও করে। সে করুক গে, আমার বয়েই গেছে। পরের ছেলে বয়েই যাক আর উচ্ছন্নে, আমার কি তাতে?
একবার গঙ্গাসাগর দেখতে ডায়মন্ড হারবারে ড্রপ করেছি, ভাগ্নে-রত্ন খবর পেয়ে হোটেলে এসে হাজির। একথা-সেকথার পর ওর আবদার হলো, দু-একটা উর্দু শের লিখে দিতে হবে, আজকাল ফিউশনের যুগ, ভ্যালেনটাইন কার্ডে নাকি শের-শায়রী গার্ল-ফ্রেন্ডরা খুব খাচ্ছে। বোঝো কথা! সুন্দরবনের এত কাছে থেকে কিনা শের যোগাড় করতে বোম্বাইয়া মামা! যাক, কথা দিয়েছি, একটা মনে ছিল, লিখে দিলাম কাগজে-
'পাত্তা পাত্তা, বুটা বুটা, হাল হামারা জানে,
জানে না জানে, গুল হি না জানে, বাগ ইয়ে সারা জানে।'
লাইন দুটো পড়ে ভাগ্নের মুখ গম্ভীর, 'মামা, তুমি কি আমার সাথে ঠাট্টা করছ? এই শের ভ্যালেনটাইন-এ চলবে!'
আমি অবাক হয়ে বললাম, 'কেন, খারাপ কি? তুই জানিস, এটা কার?'
-'হাঁ, মেহেদী হাসানের গজল তো, দিল্লির তখনকার সর্দারজী হোম মিনিস্টার বুটা সিং-কে নিয়ে।'
আমি ঘাবড়ে একটা খাবি খেলাম। 'এর মানে জানিস?'
- 'মোটামুটি বুঝতে পারি। আমাদের বুটা সিং খুব ভাল তাস খেলে, প্রত্যেকটা পাত্তার হালচাল ঠিকঠাক বলে দিতে পারে। তাই বলে ভেবোনা সে গুল দেয়। গুল মারতে বাঘের মত কেউ জানে না, বাঘ সবকিছুই জানে।'
সুন্দরবনের বাঘ নিশ্চয় ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত আসে না, তাহলে নির্ঘাত আমাকে খেয়ে ফেলত। আর খেয়ে যে ফেলেনি, তারই বা নিশ্চয়তা কি? বাঘ যে আবার গুল মারতে ওস্তাদ!
(সব চরিত্র কাল্পনিক, বাঘ ছাড়া)

No comments:

Post a Comment